সান নিউজ ডেস্ক: রাজধানীর গুলশানের বাসা থেকে এক তরুণীর ঝুলন্ত লাশ উদ্ধার করা হয়েছে। নিহতের নাম জান্নাতুল নওরিন এশা (৩২)।
আরও পড়ুন: সিপিবি’র সভাপতি আলম, প্রিন্স সম্পাদক
পুলিশ বলছে, এশা ২০০৪ সালে খুলনায় হত্যা মামলায় মৃত্যুদণ্ড কার্যকর হওয়া সন্ত্রাসী এরশাদ শিকদারের মেয়ে। এশার মায়ের অভিযোগ, প্রেমিককে ভিডিও কলে রেখে ফ্যানের সঙ্গে ঝুলে তার মেয়ে আত্মহত্যা করেছে।
শুক্রবার (৪ মার্চ) ভোরে পুলিশ এশাকে ঝুলন্ত অবস্থায় উদ্ধার করে ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালের জরুরি বিভাগে নিলে চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
এশার ফুফাত ভাই রুশো বলেন, আমার ফুফা মৃত এরশাদ শিকদার। তার দ্বিতীয় স্ত্রী শোভা আক্তারের মেয়ে এশা। বর্তমানে গুলশানের সুবাস্তু টাওয়ারের নবম তলায় থাকতেন ফুফু ও এশা। এশা সিটি কলেজ থেকে এইচএসসি পাশ করেছে। এক ছেলের সঙ্গে তার প্রেমের সম্পর্ক ছিল। তাদের মধ্যে মোবাইল ফোনে প্রায়ই ঝগড়া হতো। বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায়ও তাদের ঝগড়া হয়।
আরও পড়ুন: কোম্পানীগঞ্জে কলেজছাত্রী হত্যার রহস্য উদঘাটন
রুশো আরও বলেন, রাতে মায়ের সঙ্গে খাবার খেয়ে এশা নিজের ঘরে ঘুমাতে যায়। ভোরে এশাকে ডাকাডাকি করলে সাড়াশব্দ না পেয়ে প্রতিবেশীদের ডাকেন ফুফু। পরে দরজা ভেঙে দেখেন এশা গলায় ওড়না প্যাঁচানো অবস্থায় ফ্যানের সঙ্গে ঝুলছে। পরে তাকে ঢাকা মেডিকেলে নিয়ে যাওয়া হয়।
ঢামেক হাসপাতালের পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ (পরিদর্শক) মো. বাচ্চু মিয়া জানান, সকালে এক তরুণীকে অচেতন অবস্থায় হাসপাতালে নিয়ে আসা হয়েছিল। পরে চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন। ময়নাতদন্তের জন্য লাশটি মর্গে রাখা হয়েছে।
প্রসঙ্গত, এরশাদ শিকদারের জন্ম ঝালকাঠি জেলার নলছিটি উপজেলার মাদারঘোনা গ্রামে। তার পিতার নাম বন্দে আলী। ২৫শে আগষ্ট ১৯৬৬-৬৭ সালে তিনি তার জন্মস্থান নলছিটি থেকে খুলনায় চলে আসেন। খুলনায় আসার পর এরশাদ সেখানে কিছুদিন রেলস্টেশনের কুলির সহযোগী হিসেবে কাজ করেন। সেখান থেকেই ধীরে ধীরে রেললাইনের পাত চুরি করে বিক্রি করত এমন দলের সাথে যোগদান করেন। পরবর্তীতে তিনি তাদের নিয়ে নিজেই একটি দল গঠন করেন ও এলাকায় রাঙ্গা চোরা নামে পরিচিতি পান।
১৯৭৬-৭৭ সালে তিনি রামদা বাহিনী নামে একটি দল গঠন করেন যারা খুলনা রেল স্টেশন ও ঘাট এলাকায় চুরি-ডাকাতি ও বিভিন্ন সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডে লিপ্ত থাকত। এই রামদা বাহিনী নিয়েই এরশাদ ১৯৮২ সালে ৪ ও ৫ নম্বর ঘাট এলাকা দখল করেন ও এর একচ্ছত্র নিয়ন্ত্রক হিসেবে আত্মপ্রকাশ করেন।
আরও পড়ুন: গণহত্যার অভিযোগে গ্রেফতার ২
১৯৯৯ সালে এরশাদ শিকদার গ্রেফতার হন ও তার নামে তখন ৪৩টি মামলা হয়েছিল। নিম্ন আদালতের বিচারে সাতটি হত্যা মামলায় তার ফাঁসির দণ্ডাদেশ হয় ও চারটি মামলায় যাবজ্জীবন সাজা হয়। তিনি রাষ্ট্রপতির কাছে প্রাণভিক্ষার আবেদন করেন কিন্তু রাষ্ট্রপতি তার আবেদন নাকচ করে দেন এবং ২০০৪ সালের ১০ মে মধ্যরাতে খুলনা কেন্দ্রীয় কারাগারে ফাঁসিতে ঝুলিয়ে তার মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করা হয়।
এরশাদের প্রথম স্ত্রী খোদেজার গর্ভে এরশাদের চারটি সন্তান জন্ম নেয়, যার মধ্যে তিনটি ছেলে ও একটি মেয়ে। এছাড়া গ্রেফতারের পর শোভার গর্ভে জান্নাতুল নওরীন এমিলি এষা নামে এক মেয়ের জন্ম হয়।
সান নিউজ/এনকে