লাইফস্টাইল ডেস্ক: দেহে বা মনে সংবেদন সৃষ্টি হওয়াকে অনুভূতি বলা হয়। মানব জীবন চক্রের বিভিন্ন মুহূর্তে নানা ঘটনাকে কেন্দ্র করে বিশেষ কিছু অনুভূতি ও অভিজ্ঞতার সম্মুখিন হয় মানুষ। এসব ঘটনার সাথে জড়িয়ে মানসিকতা প্রতিক্রিয়াশীল হয়।
আরও পড়ুন: রেগে গেলে রোগের ঝুঁকি বাড়ে
অনুভূতি দুই ধরনের- শারীরিক ও মানসিক।
স্পর্শের দ্বারা ঠাণ্ডা, গরম কিংবা ব্যাথা, আরামের অনুভব করাকে বলা হয় শারীরিক অনুভূতি। অপরদিকে মানসিক অনুভূতির উদাহরণ হচ্ছে- মনের আনন্দ, ব্যথা-বেদনা, হতাশা, ভালোবাসা ইত্যাদি।
মনোবিজ্ঞানে “অনুভূতি” অন্যতম বিতর্কিত প্রসঙ্গ হিসেবে দার্শনিক ও চিন্তাবিদদের মাঝে বহুবার আলোচিত হয়ে এসেছে।
তীব্রতাভেদে মানসিক অনুভূতি অনেক সময় শারীরিক অণুভুতির উৎস হয়ে থাকে।
মূলত অভিজ্ঞতা বা উপলব্ধির মাধ্যমে স্পর্শের শারীরিক সংবেদন বর্ণনা করতে ব্যবহৃত হয় অনুভূতি। চেতনার একটি অবস্থা হিসেবেও পরিচিত।
বিশেষজ্ঞরা এমনই কিছু দারুণ অনুভূতির কথা জানাচ্ছেন:
আরও পড়ুন: নারীর মন জয় করার সহজ উপায়
১) নতুন কোনো জায়গা উদ্ভাবন বা দেখতে যাওয়ার রোমাঞ্চকর অনুভূতি রয়েছে। গবেষণায় দেখা গেছে, নতুন স্থানে গেলে মানুষ অনেক বেশি সুখী হয়ে ওঠে।
২) দম ফাটানো হাসি ওষুধের মতো কাজ করে। গবেষণায় বলা হয়, প্রচণ্ড হাসির পর দেহের বিপাকক্রিয়া সুষ্ঠু হয়, রক্তচাপ কমে আসে এবং সুখের মাত্রা বেড়ে যায়।
৩) যখন কেউ 'ভালোবাসি' কথাটা বলেন তখন এক অদ্ভুত অনুভূতি জাগে মনে। যিনি বলছেন তিনি কতটা গুরুত্বপূর্ণ তাতে কিছু যায় আসে না। কিন্তু তুলনামূলক এই অনুভূতি সার্বজনীন।
৪) যখন দয়া প্রদর্শন করলেন, তখন তৃপ্তিতে ছেয়ে যাবে মন। এই কাজটি সুখের মাত্রা বিস্ময়করভাবে বাড়িয়ে দেয়।
৫) যখন অন্য কেউ আপনার প্রতি দয়া দেখান তখন কৃতজ্ঞতার অনুভূতি পাবেন।
আরও পড়ুন: শিশুর মোবাইল আসক্তি কমাতে করণীয়
৬) নিজের মনের সাথে কথা বলার একটা অনুভূতি আছে। যখন খুব বেশি মানসিক যন্ত্রণায় পড়বেন, তখন এ কাজটি অনেক সমস্যার সমাধান দেবে। এর মাধ্যমে আপনার চিন্তা ও মতামত বেরিয়ে আসবে।
৭) যখন কেউ আপনার মন জয় করবে অথবা আপনি তার সাথে যাবেন, তখন ভিন্নমাত্রার অনুভূতিতে ছেয়ে যাবে মন। আর সেই মানুষটির সঙ্গে সময় কাটালে আপনার স্ট্রেস কমে আসবে বলে ২০১১ সালের এক গবেষণায় বলা হয়।
৮) নিজেকে নিয়ে আত্মতুষ্টিতে থাকার দারুণ অনুভূতি রয়েছে। এর চেয়ে সুন্দর অনুভূতি মানুষ খুব কমই খুঁজে পায়।
৯) হৃদয় ভাঙার যন্ত্রণা কারোর জন্যেই কাম্য নয়। কিন্তু এর অনুভূতি না পাওয়াতেও একটা অভাব থেকে যায়।
১০) যাবতীয় সকল পেরেশানি থেকে মুক্তির পর পুরোপুরি খোশমেজাজে আপনি। এই পরিস্থিতির অনুভূতি দৈহিক ও মানসিক শান্তিতে ভরিয়ে দেবে মন।
আরও পড়ুন: বর্ষায় সারাক্ষণ ঘুমের সমাধান!
১১) পোষা প্রাণীটির সঙ্গে যখন খুনসুটি করছেন তখন দারুণ সুখী হয়ে উঠবেন।
১২) জন্মদিনে বন্ধুরা একটা সারপ্রাইজ পার্টির আয়োজন করেছেন। আর এ পার্টিতে আপনি এক দারুণ মুগ্ধতার অনুভূতি পাবেন।
১৩) রাতে গভীর একটা ঘুমের পর সকালে ওঠার মজাই আলাদা। এমন সজীব ও শান্তিময় সকাল কেবল গভীর ঘুমের পরই আসে।
১৪) বিভিন্ন আয়োজনে জড়িয়ে থাকার উদ্দীপনা অন্য কিছুতে পাবেন না। শিশুদের সঙ্গে খেলছেন বা কনসার্টে গেছেন ইত্যাদি কাজের অনুভূতি আপনাকে প্রেরণা জোগাবে।
১৫) প্রিয় কাউকে বিদায় জানানোর পর এক অদ্ভুত বিষাদে ছেয়ে যাবে মন। এই অনুভূতি বেদনাকাতর এবং চ্যালেঞ্জিং হতে পারে।
আরও পড়ুন: বাসে ঘুম পাওয়ার কারণ
১৬) প্রত্যেকের বাসস্থান তাকে নিরাপত্তা ও মাথা গোঁজার ঠাঁই দেয়। আবার ঘরে থাকার প্রবণতা অনেকটা উদ্বেগের অনুভূতির বলেও মত দিয়েছেন গবেষকরা।
তাই নতুন কোনো স্থান থেকে নিজের বাড়িতে প্রবেশের অনুভূতি সত্যিই অন্যরকম।
১৭) ব্যর্থতা কারোরই ভালো লাগে না। কিন্তু ব্যর্থ হওয়ার অনুভূতি সবারই পাওয়া দরকার। কোনো কাজ ব্যর্থ হলেন তো জীবনের বিশেষ এক অনুভূতি পেলেন।
১৮) যারা ব্যায়াম করেন তারা এই দারুণ অনুভূতি পেতে পারেন। সফলভাবে ব্যায়ামের পর এক ধরনের আত্মতৃপ্তি কাজ করে।
১৯) রাগ বা ক্ষোভের অনুভূতি সবাই কম-বেশি পেয়েছেন। এটা এমন এক অনুভূতি যার দ্বারা যেমন ধ্বংস করা যায়, তেমনি গড়ে তোলা যায়।
২০) নতুন কোনো বন্ধু পাওয়ার অনুভূতি সত্যিই দারুণ। জীবনে সবাই পেয়েছেন বলে আশা করা যায়।
২১) তেমনি তৃপ্তিকর অনুভূতি পাবেন যখন কোনো কাজে সফল হবেন। এটা আত্মবিশ্বাস বাড়ানোর ওষুধের মতো কাজ করে।
আরও পড়ুন: বয়স বাড়িয়ে দেয় যেসব খাবার
২২) কারো কাছে গ্রহণযোগ্য হওয়ারও তৃপ্তিকর অনুভূতি রয়েছে। জীবনে অনেক সময় এর দেখা পাবেন। নিজেকে গুরুত্বপূর্ণ বলে মনে করতে শুরু করবেন।
২৩) স্বপ্নের চাকরি পাওয়ার অনুভূতি বর্ণনাতীত। পেশাজীবনে তৃপ্ত থাকার অনুভূতি সবার ভাগ্যে জোটে না।
২৪) মূল্যায়ন পাওয়ার অনুভূতি অনেক আনন্দের। যখন আপনার মতামত মূল্যবান, আপনার কাজ মূল্যবান এবং অন্যের কাছে আপনার অবস্থান মূল্যায়ন পায়, তখন আপনি সুখী।
২৫) একা থাকার অনুভূতি অনেক গভীর হতে পারে। একাকী সুখী মানুষরা দারুণ স্বাস্থ্যকর মানসিক অবস্থা পেতে পারেন।
২৬) পরিপূর্ণ সুখ বলতে কি বোঝায়, তা নির্ভর করে মানুষের চাহিদার ওপর। তবে কোনো সময় মনে হতে পারে, আপনি এই পৃথিবীর সবচেয়ে সুখী মানুষ।
তখনই হয়তো সুখের মাত্রা পরিপূর্ণতা পায়। এই অনুভূতির চেয়ে সুন্দর মুহূর্ত আর হতে পারে না। সূত্র : হাফিংটন পোস্ট
সান নিউজ/এইচএন