জেলা প্রতিনিধি : বঙ্গোপসাগরে সৃষ্টি হওয়া শক্তিশালী ঘূর্ণিঝড় ‘মোখা’ থেকে রক্ষা পেতে সেন্টমার্টিন দ্বীপ ছাড়তে শুরু করেছেন বাসিন্দারা।
আরও পড়ুন : অগ্রসর হচ্ছে ‘মোখা’
শুক্রবার (১২ মে) সকাল থেকে সেন্টমার্টিনের বাসিন্দারা দ্বীপ ছাড়ছেন।
বৃহস্পতিবার (১১ মে) সন্ধ্যা থেকে প্রায় ৫ শতাধিক মানুষ সেন্টমার্টিন থেকে টেকনাফের বিভিন্ন আবাসিক হোটেল ও বাসা-বাড়িতে আশ্রয় নিয়েছেন বলে জানা গেছে।
আরও পড়ুন : ট্রেনের ধাক্কায় যুবক নিহত
সেন্টমার্টিন ইউনিয়নের প্যানেল চেয়ারম্যান আবদুর রহমান জানান, ঘূর্ণিঝড়ের সর্তকতা সংকেত জারির পর থেকে ইউনিয়ন পরিষদের পক্ষ থেকে ব্যাপক মাইকিং করা হচ্ছে। এখন পর্যন্ত নিরাপদ আশ্রয়ে টেকনাফে চলে এসেছে ৫ শতাধিক মানুষ। আমি নিজেও টেকনাফে অবস্থান করছি। সার্ভিস বোট, ফিশিং বোটসহ বিভিন্ন নৌযানের মাধ্যমে দ্বীপের বাসিন্দারা নিরাপদে চলে এসেছে।
সেন্টমার্টিন ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মুজিবুর রহমান জানান, ঘূর্ণিঝড়ের আতঙ্কে সকাল থেকে কিছু মানুষ দ্বীপ ছেড়ে নিরাপদ আশ্রয়ে চলে যাচ্ছেন। দ্বীপের মানুষ যেন সুস্থভাবে টেকনাফ পৌঁছাতে পারে আমরা সেদিকে লক্ষ্য রাখছি।
আরও পড়ুন : ফিলিস্তিনে নিহতের সংখ্যা বেড়ে ৩০
সেন্টমার্টিনের বাসিন্দা আব্দুল মালেক জানান, ‘মোখা’ আসছে। সেন্টমার্টিন দ্বীপের মানুষ সবচেয়ে বেশি আতঙ্কিত হয়ে পড়েছে। কারণ সেখানে পর্যাপ্ত আশ্রয়কেন্দ্র নেই। দ্বীপের চারপাশে টেকসই বেড়িবাঁধ নেই, খাদ্য গুদাম নেই, চিকিৎসাসেবা নেই, সী অ্যাম্বুলেন্স নেই, আবহাওয়া অফিসের কার্যক্রম নেই।
এছাড়া ঘূর্ণিঝড় মোকাবিলায় প্রশাসনিক তৎপরতা নেই। তাই দ্বীপের মানুষ নিজে ও নিজের পরিবারের নিরাপত্তার স্বার্থে দ্বীপ ছেড়ে নিরাপদ স্থলে ছুটে যাচ্ছে।
আরও পড়ুন : টোঙ্গায় ৭.৬ মাত্রার ভূমিকম্প
উপজেলা প্রশাসন জানিয়েছে, দুর্যোগে স্থানীয়দের জন্য উপজেলায় সরকারি-বেসরকারি ৮৭ টি আশ্রয়কেন্দ্র এবং শতাধিক হোটেল-মোটেল ও ডাকবাংলো প্রস্তুত রাখা হয়েছে। এছাড়া বিশেষ জোন হিসেবে সেন্টমার্টিন, শাহপরীর দ্বীপের জন্য নৌবাহিনীসহ বিজিবি, পুলিশ, কোস্টগার্ড, ফায়ার সার্ভিস, মেডিক্যাল টিম ও স্বেচ্ছাসেবীদের প্রস্তুত থাকতে বলা হয়েছে।
এ বিষয়ে টেকনাফ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) কামরুজ্জামান জানান, সেন্টমার্টিন দ্বীপকে বাড়তি গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে। দুর্যোগ মোকাবিলায় দ্বীপের জন্য আমাদের নৌবাহিনী প্রস্তুত রয়েছে। সেই সাথে দ্বীপে বিজিবি, পুলিশ, কোস্টগার্ড সদস্যরা সতর্ক অবস্থানে রয়েছেন।
আরও পড়ুন : সাতক্ষীরায় সড়ক দুর্ঘটনা, নিহত...
তিনি আরও জানান, ইতোমধ্যে সেন্টমার্টিন ও শাহপরীর দ্বীপে হোটেল-মোটেলসহ অর্ধশতাধিক আশ্রয়কেন্দ্র প্রস্তুত রাখা হয়েছে। হটলাইন খোলা হয়েছে। বিশেষ করে ২ দ্বীপের (সেন্টমার্টিন ও শাহপরী) বাসিন্দাদের সচেতন করার পাশাপাশি আশ্রয়কেন্দ্রে আসার জন্য আগে থেকে উদ্বুদ্ধ করা হচ্ছে।
এদিকে সরকারের পাশাপাশি বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থাগুলোও ঘূর্ণিঝড় মোকাবিলায় প্রস্তুতি গ্রহণ করেছে।
আরও পড়ুন : মাদকবিরোধী অভিযানে গ্রেফতার ৪৫
দক্ষিণ-পূর্ব বঙ্গোপসাগর ও তৎসংলগ্ন এলাকায় অবস্থানরত ঘূর্ণিঝড় ‘মোখা’ আরও উত্তর দিকে অগ্রসর এবং ঘনীভূত হয়ে একই এলাকায় প্রবল ঘূর্ণিঝড়ে পরিণত হয়েছে। ফলে চট্টগ্রাম, কক্সবাজার, মোংলা ও পায়রা সমুদ্র বন্দরকে ২ নম্বর দূরবর্তী হুঁশিয়ারি সংকেত দেখাতে বলা হয়।
সেই সাথে উত্তর বঙ্গোপসাগর ও গভীর সাগরে অবস্থানরত সকল মাছ ধরার নৌকা ও ট্রলারকে উপকূলের কাছাকাছি থেকে সাবধানে চলাচল করতে বলা হয়েছে এবং তাদের গভীর সাগরে বিচরণ না করতে বলা হয়েছে।
সান নিউজ/এনজে