ভোলা প্রতিনিধি: ‘প্রাণিসম্পদে ভরবো দেশ, গড়বো স্মার্ট বাংলাদেশ’-এ প্রতিপাদ্যকে সামনে রেখে ভোলায় ৪র্থ বারের মতো অনুষ্ঠিত হলো প্রাণী প্রদর্শনী মেলা।
আরও পড়ুন: স্বাস্থ্যসম্মত উপায়ে পশুপালনের তাগিদ
বিভিন্ন এলাকা থেকে কৃষক ও খামারীরা গৃহপালিত হাসঁ-মুরগী ও পশু-পাখি নিয়ে এ মেলায় অংশ নেন। মেলায় অংশ নিয়ে খুশি খামারী ও দর্শনার্থীরা।
বৃহস্পতিবার (১৮ এপ্রিল) সকালে সদর উপজেলা প্রাণি সম্পদ বিভাগের উদ্যোগে ভোলার বাংলাবাজারে আয়োজন করা হয় দিনব্যাপী প্রাণী প্রদর্শনী মেলা। উদ্বোধনের পরপরই বাংলাবাজার শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের মাঠে জমে ওঠে মেলা প্রাঙ্গণ।
মেলায় স্থানীয় বিভিন্ন খামারিদের পশু-পাখি প্রদর্শন করা হয়। যেখানে স্থান পায় দেশী-বিদেশী গরু, ছাগল, মহিষ, হাসঁ-মুরগী, কবুতর, পাখিসহ ৩০ প্রজাতির প্রাণী।
মেলায় ৫০ টি স্টলে পশু-পাখি প্রদর্শন করা হয়। স্থানীয় খামারীরা নিজের পালনকৃত পশু-পাখি মেলায় প্রদর্শন করেন। মেলায় শুধু পশু-পাখি নয়, খামারীদের তৈরি বিভিন্ন খাবার, ঔষুধ ও পশুর খাদ্য তৈরির কৌশল শেখানো হয়। মেলায় খামারীরা তাদের পশু প্রদর্শন করতে পেরে খুশি।
আরও পড়ুন: সংসদে স্বাস্থ্য সুরক্ষা আইন পাস করব
ভোলা জেলা ডেইরি ফার্ম অ্যাসোসিয়েশন’র সাংগঠনিক সম্পাদক কামরুল হাসান খোকন বলেন, এ মেলার মাধ্যমে আমাদের প্রত্যন্ত এলাকার খামারীরা বিভিন্ন পশুর জাত উন্নয়ন সম্পর্কে ধারণা পেয়েছেন। দুধ দিয়া কীভাবে পণ্য তৈরি করা যায়, সেগুলো শিখতে পেরেছি।
মোস্তফা কামাল বলেন, ভোলাতে প্রচুর চরাঞ্চল রয়েছে। সেসব চরাঞ্চলে বিভিন্ন গবাদি পশু পালন করা হয়। তাই এ মেলার মাধ্যমে আমরা খামারীদের বিভিন্ন পশুর খাদ্য তৈরির কৌশল শেখাচ্ছি, যাতে বর্ষাকালে খামারীরা পশুর জন্য খাদ্য তৈরি করতে পারেন।
এ এলাকায় ভুট্টা চাষ হচ্ছে ব্যাপক আকারে। আমরা খামারিদের সাইলেজ করার কৌশল শেখাচ্ছি, যাতে করে পশুপালন করতে গিয়ে খাদ্য সংকটে না পরতে হয়।
আরও পড়ুন: দাম বাড়ল সয়াবিন তেলের
দেশের প্রাণিসম্পদ রক্ষায় এবং আমিষের চাহিদা পূরণ করতে ও পশুপালনের মাধ্যমে বেকারত্ব দূর করতে এমন আয়োজন করা হয়েছে বলে জানান সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা।
ভোলা সদর উপজেলা প্রানী সম্পদ কর্মকর্তা ডা. শাহীন মাহমুদ বলেন, এ আয়োজনের উদ্দেশ্য হলো- আমাদের প্রাণিজ সম্পদের নতুন নতুন উদ্ভাবনী প্রযুক্তির সাথে খামারিদের পরিচয় করে দেয়া। নতুন নতুন খামারি সৃষ্টিতে এ মেলা গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে।
ভোলা সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সজল চন্দ্রশীল বলেন, সারা বাংলাদেশের মানুষ যেন প্রাণী স্বাস্থ্যসেবা, প্রাণীজ উৎপাদন ও উৎপাদনশীলতা বৃদ্ধি এবং মূল্য সংযোজনের মাধ্যমে প্রাণিজ আমিষের চাহিদা পূরণের লক্ষ্য নিয়ে এ মেলার আয়োজন।
আরও পড়ুন: থাইল্যান্ড যাচ্ছেন প্রধানমন্ত্রী
এ মেলার মাধ্যমে খামারীদের দেখে নতুন নতুন খামারী তৈরি হবে। এতে অনেকে স্বাবলম্বী হবে এবং দেশে আমিষের চাহিদা পূরণ করা সম্ভব হবে।
ভোলা জেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা মোহাম্মদ রফিকুল ইসলাম খান বলেন, ভোলায় প্রাণী প্রদর্শনী মেলার মধ্যে দিয়ে নতুন খামারী সৃষ্টি হবে। নতুন খামারীরা নতুন নতুন প্রযুক্তির সাথে পরিচিত হবে। এর মাধ্যমে খামার পরিচালনা করতে গিয়ে তাদের খরচ কমে যাবে। পাশাপাশি তরুণরাও খামারী হতে উৎসাহী হবে।
মেলায় অংশ নেয়া বিভিন্ন খামারিদের মাঝে সাইলেজ জাতীয় ঘাস বিতরণ ও সেরা খামারীকে সনদপত্র দেয়া হয়।
জেলা প্রাণিসম্পদ অফিসের তথ্যমতে, ভোলা জেলায় প্রায় ৫ হাজারেরও বেশি খামারী প্রায় ১১ লাখের মতো গরু-মহিষ, ছাগলসহ বিভিন্ন পশুপাখি পালন করছে।
সান নিউজ/এনজে