কক্সবাজার প্রতিনিধি: কক্সবাজারের টেকনাফে হ্নীলা বাজারের পশ্চিম পাশে অভিযান চালিয়ে হুন্ডির মাধ্যমে পার্শ্ববর্তী দেশে পাচার চক্রের শীর্ষ ব্যবসায়ী মোহাম্মদ নূরকে ৯ লাখ ১১ হাজার ৫৬০ টাকা, ৪ হাজার ৮০০ পিস ইয়াবা, ল্যাপটপ, বিভিন্ন ব্যাংক হিসাবের জমা ও চেকবইসহ গ্রেফতার করেছে র্যাব ১৫-এর সদস্যরা।
আরও পড়ুন: ভালুকায় স্বর্ণের দোকান লুট, আটক ৫
গ্রেফতারকৃত মাদক কারবারি হলেন, টেকনাফ হ্নীলা ইউনিয়নের ৩ নং ওয়ার্ড ওয়াব্রাং মৃত কালা মিয়ার ছেলে মোহাম্মদ নূর (৩১)।
কক্সবাজার র্যাব ১৫-এর অতিরিক্ত পুলিশ সুপার ও সিনিয়র সহকারী পরিচালক (ল’ এন্ড মিডিয়া) মো. আবু সালাম চৌধুরী গণমাধ্যমকে এ তথ্য নিশ্চিত করেন।
তিনি জানান, বৃহস্পতিবার (২ নভেম্বর) রাতে র্যাব ১৫-এর আভিযানিক দল গোপন সংবাদের ভিত্তিতে জানতে পারে টেকনাফ থানাধীন হ্নীলা ইউনিয়নের বড় বাজারের পশ্চিম পার্শ্বে দারুস সুন্নাহ মাদ্রাসার পাশে থাকা ৩ তলা বিশিষ্ট মাস্টার মার্কেটের নীচতলায় অবৈধ মাদকদ্রব্য মজুদসহ ক্রয়-বিক্রয় করছে।
আরও পড়ুন: আশুলিয়ায় বিক্ষোভ, ৩ জন গুলিবিদ্ধ
এমন সংবাদের ভিত্তিতে র্যাব ১৫-এর একটি চৌকস আভিযানিক দল বর্ণিত স্থানে একটি বিশেষ অভিযান পরিচালনা করে। এ সময় র্যাবের উপস্থিতি বুঝতে পেরে পালানোর চেষ্টাকালে মোহাম্মদ নূর নামে এক মাদক কারবারিকে গ্রেফতার করা হয়।
পরবর্তীতে উপস্থিত স্বাক্ষীদের সম্মুখে গ্রেফতারকৃত ব্যক্তির দেহ ও তার দোকান তল্লাশি করে দোকানের টেবিলের ড্রয়ারের ভিতর বিশেষ কায়দায় রক্ষিত সর্বমোট ৪৮০০ পিস ইয়াবা ট্যাবলেট উদ্ধার করা হয়।
একই সাথে ইয়াবা কেনাবেচার টাকা হুন্ডির মাধ্যমে পাচার লক্ষ্যে মজুদকৃত নগদ ৯ লাখ ১১ হাজার ৫৩০ টাকা, হুন্ডির কাজে ব্যবহৃত ১ টি এইচপি ব্রান্ডের ল্যাপটপ, ২ টি এন্ড্রয়েড ও ১ টি বাটন মোবাইল, বিভিন্ন ব্যাংকের ৯ টি হিসাবের বই, বিভিন্ন ব্যাংকের সর্বমোট ৩৬ টি চেকবই ও ১ টি লাল কাভার বিশিষ্ট ডায়েরি জব্দ করা হয়।
বিভিন্ন সূত্রে জানা যায়, বাংলাদেশের ইয়াবা ব্যবসায়ীরা হুন্ডির মাধ্যমে টাকা পাঠিয়ে পাশ্ববর্তী দেশের ইয়াবা ব্যবসায়ীদের টাকা পরিশোধ করে। স্থানীয় কিছু বিকাশ এজেন্ট এবং এজেন্ট ব্যাংকিং প্রতিষ্ঠান এ হুন্ডি ব্যবসা নিয়ন্ত্রণ করে।
আরও পড়ুন: চট্টগ্রামে সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত ৩
এর মধ্যে গ্রেফতারকৃত মো. নূর শীর্ষ পর্যায়ের হুন্ডি ব্যবসায়ী। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে গ্রেফতারকৃত নূর একজন হুন্ডি ব্যবসায়ী ও মাদক কারবারীর সাথে জড়িত বলে স্বীকার করে।
জিজ্ঞাসাবাদে জানা যায়, স্থানীয় মাদক ব্যবসায়ীদের নিকট থেকে টাকা সংগ্রহ করে সে পাশ্ববর্তী দেশের এজেন্টের সাথে যোগাযোগ করে। পরবর্তী পাশ্ববর্তী দেশের এজেন্টরা পুনরায় বাংলাদেশের কোনো একটা ব্যাংক নাম্বার বা বিকাশ নাম্বার প্রদান করে ওই নাম্বারে মাদকের টাকা পাঠিয়ে দিতে বলে।
এ টাকাগুলো মধ্যপ্রাচ্য বিভিন্ন দেশ হয়ে পাশ্ববর্তী দেশে প্রবেশ করে। গ্রেফতারকৃত মো. নূর এ কাজে লাখে ২০০-৪০০ টাকা কমিশন নিতেন। এছাড়া হুন্ডি ব্যবসার আড়ালে তিনি দীর্ঘ দিন যাবত ইয়াবা ট্যাবলেট পার্শ্ববর্তী সীমান্তবর্তী এলাকা থেকে সংগ্রহ করে বিভিন্ন স্থানে বিক্রয়ের সাথে জড়িত ছিলেন।
উদ্ধারকৃত আলামতসহ আসামির বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য টেকনাফ মডেল থানায় হস্তান্তর করা হয়েছে বলে জানিয়েছে র্যাব।
সান নিউজ/এনজে