নিজস্ব প্রতিবেদক: সনাতন হিন্দু ধর্মাবলম্বীদের বিদ্যার দেবী হচ্ছেন সরস্বতী। সনাতন ধর্মাবলম্বীদের সরস্বতী পূজা আজ ।
শ্বেতশুভ্র বসনা সরস্বতী দেবীর এক হাতে বেদ, অন্য হাতে (পাণি) বীণা থাকে। এজন্য তাকে বীণাপাণিও বলা হয়। তাকে ঐশ্বর্যদায়িনী, বুদ্ধিদায়িনী, জ্ঞানদায়িনী, সিদ্ধিদায়িনী, মোক্ষদায়িনী এবং শক্তির আধার হিসেবে সনাতন ধর্মাবলম্বীরা আরাধনা করেন।
করোনার ভাইরাস সংক্রমণ পরিস্থিতির বিবেচনায় সকল স্কুল-কলেজ বন্ধ থাকায় এবার পূজামণ্ডপে সীমিত আকারে স্বাস্থ্যবিধি মেনে পূজার আনুষ্ঠানিকতা পালন করা হবে বলে জানা যায়।
পূজা উপলক্ষে মহামান্য রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা পৃথক পৃথক বাণী দিয়েছেন। বাণীতে তারা হিন্দু সম্প্রদায়ের সবাইকে আন্তরিক শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন জানিয়ে বলেছেন, ‘বাংলাদেশ সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির দেশ। হাজার বছর ধরে এ ভূখণ্ডে জাতি-ধর্ম-বর্ণ নির্বিশেষে সকল ধর্মের মানুষ মিলেমিশে একত্রে বসবাস করে আসছেন।’
হিন্দু ধর্মের বিধান অনুসারে, মাঘ মাসের শুক্লা পঞ্চমী তিথিতে সরস্বতী পূজার আয়োজন করা হয়। এ তিথি বসন্ত পঞ্চমী নামেও পরিচিত।
বাংলাদেশে বর্ণাঢ্য আয়োজনের মধ্য দিয়ে সরস্বতী পূজা অনুষ্ঠীত হয়ে থাকে। তবে করোনা পরিস্থিতির কারণে এবার স্বাস্থবিধি মেনে সীমিত আকারে ও এই পূজার আয়োজন করা হয়েছে।
আজ শনিবার (৫ ফেব্রুয়ারি) সরস্বতী পূজা উপলক্ষে সকাল ৭টা ৭ মিনিটে শুরু হবে পঞ্চমী তিথি। পরদিন রোববার ( ৬ ফেব্রুয়ারি) সকাল ৭টা ৯ মিনিটে পূজার তিথি সমাপ্ত হবে।
শনিবার সকালে বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান, শিক্ষার্থীদের বাসা ও পূজামণ্ডপে সরস্বতী পূজা আয়োজিত হবে। পূজা শেষে ভক্তরা অঞ্জলি গ্রহণ করবেন। এদিন শিশুদের হাতেখড়িরও বিশেষ ব্যবস্থা করা হয়।
রাজধানীর ঢাকেশ্বরী জাতীয় মন্দির প্রঙ্গনে মহানগর সার্বজনীন পূজা কমিটি সনাতন ধর্মাবলম্বীদের অন্যতম ধর্মীয় উৎসব সরস্বতী পূজার আয়োজন করেছে।
মহানগর সার্বজনীন পূজা কমিটির সভাপতি শ্রী শৈলেন্দ্রনাথ মজুমদার ও সাধারণ সম্পাদক অ্যাড. কিশোর রঞ্জন মণ্ডল জানিয়েছেন, আজ সকাল ৯টায় পূজা অনুষ্ঠিত হবে বলে । এছাড়াও রাজধানীসহ দেশের বিভিন্ন পূজামণ্ডপে বিদ্যাদেবীর পূজার আনুষ্ঠানিকতা আয়োজিত হবে।
প্রতি বছরের ন্যায় এবারও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ঐতিহ্যবাহী জগন্নাথ হলে সরস্বতী পূজা উদযাপিত হবে। জগন্নাথ হলের প্রাধ্যক্ষ ও পূজা কমিটির সভাপতি অধ্যাপক ড. মিহির লাল সাহা জানিয়েছেন, এবার স্বাস্থ্যবিধি মেনে স্বল্প পরিসরে পূজা উদযাপন করা হবে।
জগন্নাথ হলে সকাল ৯টায় শুরু হবে পূজার্চনা এবং ১০টা থেকে শুরু হবে অঞ্জলি প্রদান। সন্ধ্যায় আরতি অনুষ্ঠান। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. আখতারুজ্জামান সন্ধ্যা ৭টার সময় পূজামণ্ডপ পরিদর্শন করবেন। প্রবেশে কারোর নিষেধাজ্ঞা না থাকলেও মাস্ক এবং স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলতে হবে বলে জানিয়েছেন পূজা কর্তৃপক্ষ।
অধ্যাপক মিহির লাল সাহা বলেন, শুধুমাত্র উপাসনালয়ে স্বাস্থ্যবিধি মেনে একটি মাত্র কেন্দ্রীয় পূজা অনুষ্ঠিত হবে। করোনার সংক্রমণ কম থাকায় প্রাথমিকভাবে বিভাগভিত্তিক পূজার সিদ্ধান্ত নিলেও ওমিক্রনের জন্য সেটি বাধা হয়ে দাঁড়ায়। মনঃকষ্ট থাকলেও হল প্রশাসনের একটিমাত্র কেন্দ্রীয় পূজার সিদ্ধান্তে একমত পোষণ করেছে শিক্ষার্থীরা।
অধ্যাপক মিহির লাল সাহা আশা প্রকাশ করেন, আসছে বছর পুরোনো আমেজে ফের পূজা উদযাপন করতে পারবেন।
আরও পড়ুন: বাংলাদেশ সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির দেশ
করোনা মহামারির আগে বিশ্ববিদ্যালয়ের জগন্নাথ হলের খেলার মাঠে বিভাগভিত্তিক পূজামণ্ডপ তৈরি করা হতো। বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রায় প্রতিটি বিভাগই একটি করে মণ্ডপ তৈরি করা হতো। গত বছর থেকে খুব সীমিতভাবে পালন হচ্ছে। যেখানে অন্যান্য বছর ৮০টির মতো মণ্ডপ থাকত সেখানে একটিমাত্র মণ্ডপ দিয়েই পূজা উদযাপন করতে হচ্ছে।
সান নিউজ/ এইচএন