সারাদেশ

মুন্সীগঞ্জে জমে উঠেছে ঈদের কেনাকাটা

মো. নাজির হোসেন (মুন্সীগঞ্জ) : পবিত্র ঈদুল ফিতরকে সামনে রেখে মুন্সীগঞ্জ শহরতলীর প্রতিটি বিপণি বিতানে কেনাকাটার ধুম পড়েছে। সকাল থেকে গভীর রাত পর্যন্ত ক্রেতা-বিক্রেতাদের হাঁকডাকে সরগম প্রতিটি জামা-কাপড়, জুতো ও কসমেটিকের দোকান। ঈদের জন্য নতুন জামা হাসি-খুশি ভাবে কেনাকাটা করলেও ক্রেতাদের অভিযোগ, সাধারণ সময়ের চেয়ে দেড়-দ্বিগুণ দাম বেশি রাখছেন দোকানীরা।

আরও পড়ুন : টাঙ্গাইলে ধর্ষণ মামলার প্রতিবাদে বিক্ষোভ

মঙ্গলবার দুপুর থেকে বিকেল পর্যন্ত মুন্সীগঞ্জ শহর জামে মসজিদ মার্কেট, জিএইচ সিটি সেন্টার, জেলা পরিষদ মার্কেট, আইয়ুব আলী সুপার মার্কেট, দেওয়ান প্লাজা, আফতাব কমপ্লেক্সের অন্তত ১০টি বিপণিবিতান জুতোর শো-রুমে ঘুরে ক্রেতাদের ভিড় দেখা যায়। এসব প্রতিষ্ঠান থেকে ক্রেতারা দর কষা-কষীর মাধ্যমে তাদের পছন্দের ঈদ কেনাকাটা করছেন।

জেলার শহরের বিপণি বিতান,শপিং সেন্টারের মালিক ও ব্যবসায় সমিতির সঙ্গে কথা বলে জানাযায়, ৫ রোজার পর থেকে ঈদের কেনাকাটা করতে মুন্সীগঞ্জ শহর, টঙ্গীবাড়ি উপজেলার বিভিন্ন এলাকার মানুষজন বিপণি বিতান গুলোতে জড়ো হচ্ছেন। কেনাকাটায় এগিয়ে রয়েছে সদর উপজেলার চরাঞ্চলের আপামর জনসাধারণ। তারা এবছর আলু চাষে লাভের মুখ দেখেছেন।

সকাল থেকে মধ্যরাত পর্যন্ত কেনাকাটার চলছে। এতে করে পুরোপুরি জমে উঠেছে মুন্সীগঞ্জের ঈদের বাজার। প্রতিটি দোকানে গড়ে দেড়-তিন লাখ টাকার উপরে বিক্রি হচ্ছে। থানকাপড়ের দোকানগুলোতে গড়ে ৮ থেকে ১০ লাখ টাকা বিক্রি হচ্ছে। ঈদের সময় ঘনিয়ে আসলে বেচা-কেনার চাপ আরো কয়েকগুণ বেড়ে যাচ্ছে বলে জানান তারা।

রোজার প্রথম দিকে সবচেয়ে বেশি ভিড় পরে মেয়েদের ও ছোট শিশুদের জামাকাপড়ের দোকানে। দিন যত যাচ্ছে, বিক্রির পরিমাণ ততই বাড়ছে বলে জানান শহরের বেবি ফেয়ার এন্ড বিগ বাজার দোকানের স্বত্বাধিকারী মো.সেজান জানান।

আরও পড়ুন : সড়ক দুর্ঘটনায় স্কুলছাত্রের মৃত্যু

তিনি বলেন, প্রতিবারই ঈদের কেনাকাটার শবে বরাতের পর থেকে শুরু হয়ে যায়। এবার একটু দেরি করে হয়েছে। পণ্যের দাম বেশি হওয়ায় ক্রেতারা দেখে, শোনে সময় নিয়ে কেনাকাটা করছেন। সাধারণ সময় আমাদের দোকানে প্রতিদিন ২০ থেকে ৩০ হাজার টাকা বিক্রি হয়। তবে ঈদের এই মৌসুমে প্রতিদিন এক থেকে দেড় লাখ টাকা বিক্রি হচ্ছে। ঈদ যত কাছাকাছি আসবে বিকিকিনি পরিমাণ আরো বাড়বে।

মঙ্গলবার দুপুরের দিকে শহর জামে মসজিদ মার্কেটের ভেতরে ঢুকতেই এই প্রতিবেদকের সঙ্গে কথা হয় কয়েকজন নারী ক্রেতার। তারা চার জন মুন্সীগঞ্জ শহরের থেকে ১৫ কিলোমিটার অদূরে টঙ্গীবাড়ি উপজেলার বালিগাঁও এলাকা থেকে এসেছেন। ছেলে, মেয়ে সহ পরিবারের সবার জন্য করছিলেন ঈদের কেনাকাটা।

এদের একজন রোমানা বেগম। তিনি দুই মেয়ে নিয়ে এসেছেন ঈদের কেনাকাটা করতে। রোমানা বলেন, মার্কেটে মার্কেটে মানুষের অনেক ভিড়। সব জিনিসের দাম দ্বিগুণ। সকালে এসেছি দুই মেয়ে, শশুর, শাশুড়ী ও নিজের জন্য জামা-কাপড় কিনতে। শিশু, বুড়ো সবার পোশাকের দাম অনেক বেশি। দুপুর পর্যন্ত ঘুরে শুধু মেয়েদের কেনাকাটা সেরেছি। বিকেলের মধ্যে সবার কেনাকাটা শেষ করেই বাড়ি ফিরবো।

আরও পড়ুন : আধিপত্য বিস্তারে সংঘর্ষ, নিহত ১

তবে একই মার্কেটে কথা হয় হাতিমারা এলাকার নাজমা বেগমের সঙ্গে। নাজমা বেগম বলেন, আমার নিজের ও দুই ছেলে-মেয়ে কেনাকাটা করতে ৬ হাজার টাকা নিয়ে এসেছিলাম। জামা-কাপড়, জোতার এতটাই দাম, বাচ্চাদের কেনাকাটা করতে গিয়ে সব টাকা শেষ। নিজের জন্য কোন কিছু না কিনেই এখন বাড়ি ফিরতে হচ্ছে।

শহরের নাম করা কয়েকটি বিপণিবিতানের একটি নিশাত ক্লথস্টোর। এখান থেকে নিয়মিত জামা ,গজ কাপড় কেনেন মিরকাদিমের নগর কসবা এলাকার বাসিন্দা জিনিয়া ইসলাম।

জিনিয়া বলেন, দুই মাস আগে যেই গজ কাপড় ১২০ টাকায় কিনেছি, সেগুলোর দাম ২২০ টাকা ফিকসড দাম চাচ্ছে।৷ গত মাসে পাকিস্তানের যে সব থ্রী-পিছ ৫ হাজার টাকায় কিনেছিলাম সেগুলো এখন ৭ হাজার টাকার কম বিক্রি করতে চাচ্ছেনা। এমন দাম হলে মানুষ কিভাবে ঈদের কেনাকাটা করবে। পোশাকের দাম সত্যি এতটা বেশি না সিন্ডিকেট করে দাম বেশি নেওয়া হচ্ছে কে জানে।

আরও পড়ুন : ১০ হাজার পিছ ইয়াবা উদ্ধার করেছে বিজিবি

পোশাক কেনা শেষে সবাই ঢুঁ মারছেন জুতা ও
কসমেটিকসের দোকান এবং শোরুমে। জুতা পছন্দের ক্ষেত্রে বাটা, এপেক্স, লোটো ও ক্যাজুয়াল রয়েছে শীর্ষে।

এপেক্স শো-রুমের একজন বিক্রয় কর্মী বলেন, নারী ক্রেতারা তাঁদের পোশাকের সঙ্গে মিল
রেখে স্যান্ডেল, শু, নাগরা, পেনসিল হিল ও স্লিপার কিনছেন। ছেলেরা পাঞ্জাবি, প্যান্ট ও টি-শার্টের সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে ক্যাজুয়াল ও ফ্ল্যাট জুতা নিচ্ছেন। এখানেও দাম নিয়ে ক্রেতা-বিক্রেতাদের রয়েছে আক্ষেপ অভিযোগ।

শহরে লাক্সারী সুজ দোকানের বিক্রয় কর্মী আবির হোসেন বলেন, জোতার দোকানে গতবারের তুলনায় এবার বিকিনির পরিমাণ কম। কারণ হিসেবে তিনি বলেন, জিনিসপত্রের দাম অনেক বেশি। তিন মাস আগে যে জুতা ৫০০-৭০০ টাকায় পাইকারি কিনেছি, সেগুলো ঈদ উপলক্ষে ৮০০-১০০০ হাজার টাকায় কিনেছি। এতে বাধ্য হয়ে আমাদেরও বেশি দামে জুতা বিক্রি করতে হচ্ছে। ক্রেতারা দোকানে ডোকেন। দাম বেশি হওয়ায় দরদাম করে চলে যান। তবে আশা করছি, ঈদের আগে বিকিকিনি পরিমাণ অনেক ভালো হবে।

আরও পড়ুন : চলছে জমি দখলের মহোৎসব, নেপথ্যে সাংসদ

পোশাকের রং ও ধরনের সঙ্গে মিল রেখে তরুণী ও নারীরা কিনছেন বিভিন্ন গহনা,গলার সেট, হাতঘড়ি, পায়েল, ব্রেসলেট, মাথার টিকলি, সানগ্লাস ও বাহারি রঙের চুড়ি।

মুন্সীগঞ্জ শহর ব্যবসায়ী সমিতির সভাপতি
মো. আরিফুর রহমান বলেন, গত দু'বছর করোনার কারণে ঈদে বিপণিবিতান গুলোতে বিক্রয়ের পরিমাণ একটু কম ছিল। এবছর রমজানের শুরু থেকেই বেচা-কেনা শুরু হয়েগেছে। আশা করছি এবার ঈদে শুধু শহরের দোকান গুলোতে বিক্রির পরিমান শত কোটি টাকার বেশি ছাড়িয়ে যাবে।

দামের বিষয়ে তিনি বলেন, বৈশ্বিক মন্দার কারণে সব পণ্যের দাম অনেক চওড়া। কোন দোকানদার যেন ক্রেতাদের কাছ থেকে অতিরিক্ত মূল্য না নেয় সেজন্য সকল ব্যবসায়ীদেরকে মৌখিক ভাবে অনুরোধ করা হয়েছে। জেলা প্রশাসন থেকেও বাজার মনিটরিং করছে।

সান নিউজ/এসআই

Copyright © Sunnews24x7
সবচেয়ে
পঠিত
সাম্প্রতিক

লক্ষ্মীপুরে প্রবাসীর বাড়িতে হামলা-ভাংচুর 

লক্ষ্মীপুর প্রতিনিধি: লক্ষ্মীপুরে...

আগুনে শতাধিক ঘর-দোকান ভস্মীভূত

জেলা প্রতিনধি : গাজীপুরের ভোগড়া এলাকায় আগুনে তিনটি কলোনির...

কানে ‘গোলাপী রানি’ উর্বশী

বিনোদন ডেস্ক: চলচ্চিত্র জগতের সবচ...

আজ ঐতিহাসিক ফারাক্কা দিবস 

নিজস্ব প্রতিবেদক: আজ ১৬ মে, ঐতিহা...

দেশ ছাড়ল বাংলাদেশ দল

স্পোর্টস ডেস্ক : টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের স্ব...

বজ্রপাতে ১১ জনের মৃত্যু

আন্তর্জাতিক ডেস্ক: ভারতের পশ্চিমব...

নদীতে ডুবে শিশুর মৃত্যু

জেলা প্রতিনিধি: চাঁপাইনবাবগঞ্জে মহানন্দা নদীতে ডুবে মো. আব্দ...

মসজিদে আগুনে পুড়ে নিহত ১১

আন্তর্জাতিক ডেস্ক: নাইজেরিয়ায় একটি মসজিদে বাইরে থেকে তালা আট...

দ্বিজেন্দ্রলাল রায়’র প্রয়াণ

সান নিউজ ডেস্ক: আজকের ঘটনা কাল অতীত। প্রত্যেকটি অতীত সময়ের স...

লাইফস্টাইল
বিনোদন
sunnews24x7 advertisement
খেলা