আন্তর্জাতিক ডেস্ক : সাংবাদিক জামাল খাশোগি হত্যাকাণ্ডে জড়িত থাকার অভিযোগে ৭৬ সৌদি নাগরিক মার্কিন নিষেধাজ্ঞার কবলে পড়েছে। তবে হত্যার নির্দেশদাতা সৌদি যুবরাজ মোহাম্মদ বিন সালমানের নাম নেই সেই তালিকায়। মার্কিন প্রশাসনের কর্মকর্তারা জানিয়েছে, যুবরাজ সৌদির শীর্ষ নেতা হওয়ায় তার নামে কোনও ধরনের নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হবে না। খবর রয়টার্সের।
হোয়াইট হাউসের দায়িত্ব নেওয়ার কয়েক সপ্তাহের মধ্যেই বাইডেন প্রশাসন বুঝিয়ে দিয়েছে, তারা ডোনাল্ড ট্রাম্পের আমলে সৌদি আরবের সঙ্গে গড়ে ওঠা ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক পুনর্মূল্যায়ন করতে চলেছে, বিশেষ করে যুবরাজ সালমানের সঙ্গে। বাইডেন প্রশাসনের এক কর্মকর্তা নাম না প্রকাশের শর্তে বার্তা সংস্থা রয়টার্সকে জানান, তাদের লক্ষ্য সৌদির সঙ্গে মূল সম্পর্ক না ভেঙে একটি নতুন প্রান্ত থেকে বন্ধন দৃঢ় করে তোলা।
ইয়েমেন সৌদি নেতৃত্বাধীন চলমার যুদ্ধ এবং সাংবাদিক খাশোগি হত্যার কারনে কয়েক বছর ধরেই সৌদির সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক প্রশ্নবিদ্ধ হয়ে উঠেছে। তবে বাইডেন প্রশাসনের জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তা বলেছেন, তাদের লক্ষ্য সম্পর্ক পুনরুদ্ধার, ছিন্ন করা নয়। কারণ, এর সঙ্গে দুই পক্ষেরই অভিন্ন স্বার্থ জড়িত।
২০১৮ সালের অক্টোবরে তুরস্কের ইস্তাম্বুলে অবস্থিত সৌদি কনস্যুলেটে জামাল খাশোগিকে হত্যা করা হয়। সৌদি যুবরাজ সালমানের নির্দেশে একটি কিলিং স্কোয়াড হত্যাকাণ্ড ঘটায় বলে অভিযোগ রয়েছে। হত্যার পর খাশোগির লাশ গুম করার পর আজও সন্ধান মেলেনি।
শুক্রবার ( ২৬ ফেব্রুয়ারি) খাশোগি হত্যাকাণ্ডের একটি গোয়েন্দা প্রতিবেদন প্রকাশের পরপরই সৌদি আরবের সাবেক গোয়েন্দা প্রধান আহমেদ আল-আসিরির ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে যুক্তরাষ্ট্র। নিষেধাজ্ঞা দেওয়া হয়েছে দেশটির রাজকীয় বাহিনী র্যাপিড ইন্টারভেনশন ফোর্স বা আরআইএফের ওপরও।
নিষেধাজ্ঞার কারণে যুক্তরাষ্ট্রে তাদের কোনও সম্পত্তি থাকলে তা বাজেয়াপ্ত হবে এবং কোনও মার্কিন নাগরিক নিষেধাজ্ঞা প্রাপ্তদের সঙ্গে ব্যবসা বা যোগাযোগ রাখতে পারবেন না। এছাড়া, সৌদির আরও ৭৬ নাগরিকের ওপর ভিসা নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে যুক্তরাষ্ট্র। এই বিধিনিষেধ তাদের পরিবারের সদস্যদের ওপরও প্রয়োগ করা হবে বলেও জানিয়েছেন মার্কিন কর্মকর্তারা।
সৌদি সরকার খাশোগি হত্যায় জড়িত থাকার কথা প্রথম থেকেই অস্বীকার করে আসলেও পরে স্বীকার করে যে, দেশে ফিরিয়ে আনার একটি অভিযানে ভুলক্রমে তাকে হত্যা করা হয়েছে। এর সঙ্গে জড়িত থাকায় ৫ জনকে মৃত্যুদণ্ড দেয় দেশটি। পরে অবশ্য খাশোগির পরিবার ক্ষমা করে দেওয়ায় তাদের সাজা কমিয়ে ২০ বছরের কারাদণ্ড দেওয়া হয়।
এই হত্যাকাণ্ডে যুবরাজ সালমান জড়িত থাকার অভিযোগ বরাবরই অস্বীকার করেছে সৌদি সরকার। তবে শুক্রবার যুক্তরাষ্ট্রের প্রকাশিত গোয়েন্দা প্রতিবেদনে তাকে খাশোগি হত্যার নির্দেশদাতা হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে। এরপরও সৌদি যুবরাজের ওপর কেন কোনও নিষেধাজ্ঞা দেওয়া হচ্ছে না জানতে চাইলে নামপ্রকাশে অনিচ্ছুক সেই মার্কিন কর্মকর্তা জানান, যুক্তরাষ্ট্র সাধারণত কোনও দেশের শীর্ষ নেতৃত্বের ওপর নিষেধাজ্ঞা দেয় না।
তিনি বলেন, আমরা প্রকৃতপক্ষে সর্বসম্মত সিদ্ধান্তে পৌঁছেছি যে, এসব সমস্যা মোকাবিলার আরও কিছু কার্যকর উপায় রয়েছে।
Copyright © Sunnews24x7Newsletter
Subscribe to our newsletter and stay updated.