আন্তর্জাতিক ডেস্ক : আগামী জাতীয় নির্বাচনকে সামনে রেখে বাংলাদেশে পৌঁছে ইতিমধ্যে বিভিন্ন পক্ষের সাথে বৈঠক করেছেন মার্কিন প্রতিনিধিরা।
আরও পড়ুন : সেপ্টেম্বরে ডিজিটাল সিকিউরিটি অ্যাক্ট সং...
বাংলাদেশ সফরে আসার আগে গত মঙ্গলবার (১১ জুলাই) দিল্লিতে ভারতের ইংরেজি দৈনিক হিন্দুস্তান টাইমসকে প্রতিনিধি দলের প্রধান যুক্তরাষ্ট্রের গণতন্ত্র ও মানবাধিকার বিষয়ক আন্ডার সেক্রেটারি উজরা জেয়া বিশেষ এক সাক্ষাৎকার দিয়েছেন।
বুধবার (১২ জুলাই) হিন্দুস্তান টাইমসের অনলাইন সংস্করণে এ সাক্ষাৎকার প্রকাশ করা হয়।
আরও পড়ুন : কেন্দ্রীয় ব্যাংকে নতুন দুই পরিচালক
সাক্ষাৎকারে বাংলাদেশের আগামী নির্বাচন, নতুন মার্কিন ভিসা নীতি ও এ অঞ্চলের দেশগুলোতে যুক্তরাষ্ট্রের স্বার্থের বিষয়ে বিস্তারিত আলোচনা করেছেন তিনি।
হিন্দুস্তান টাইমসের পররাষ্ট্র বিষয়ক সম্পাদক রেজাউল এইচ লস্কর উজরা জেয়ার কাছে বাংলাদেশ সফরের বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, দিল্লি সফরের পরপরই ঢাকায় যেতে পেরে আমি অত্যন্ত আনন্দিত। আজ বিকালের পরে চলে যাবো এবং আমরা বাংলাদেশের সরকারের সাথে বিভিন্ন বিষয় যেমন- মানবিক সহযোগিতা, নির্বাচন প্রক্রিয়া নিয়ে জোরদার আলোচনার অপেক্ষায় আছি।
আরও পড়ুন : বিএনপি ব্যর্থতার পরিচয় দিয়েছে
উজরা বলেন, আমরা বাংলাদেশের অর্থনৈতিক অগ্রগতি ও সমৃদ্ধির পাশাপাশি একটি শান্তিপূর্ণ, অবাধ ও নিরপেক্ষ নির্বাচনী প্রক্রিয়ার ব্যাপারে আশাবাদী, যা আমাদের কয়েক দশকের দ্বিপাক্ষিক উন্নয়ন অংশীদারত্বেরও বিষয়।
এছাড়া বাংলাদেশের অর্থনৈতিক উচ্চাকাঙ্ক্ষা অর্জন ও যুক্তরাষ্ট্রের সাথে উন্নয়ন অংশীদারত্ব বজায় রাখতে শ্রম অধিকার এবং শ্রমিকদের সংগঠন প্রতিষ্ঠার অধিকারের বিষয়টিও গুরুত্বপূর্ণ।
আরও পড়ুন : মুন্সীগঞ্জে থামছে না পদ্মার ভাঙন!
তিনি বলেন, বাংলাদেশের নির্বাচন নিয়ে উদ্বেগ অব্যাহত রয়েছে। কারণ সম্প্রতি মার্কিন পররাষ্ট্র দফতর বাংলাদেশে নির্বাচন প্রক্রিয়াকে দুর্বল করার জন্য দায়ী ব্যক্তিদের ভিসা প্রদান সীমিত করার ব্যাপারে একটি ঘোষণা দিয়েছে।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে উজরা জেয়া বলেন, আমি আপনাকে সরকারি সেই ঘোষণার কথা বলবো, যেখানে আমাদের পররাষ্ট্র দফতরের মুখপাত্র নতুন ভিসানীতির বিষয়ে কর্তৃপক্ষের সিদ্ধান্তের কথা জানিয়েছেন। একেবারে অবাধ ও নিরপেক্ষ নির্বাচনকে সমর্থন করার উদ্দেশ্যে এ ভিসানীতি গ্রহণ করা হয়েছে।
আরও পড়ুন : সন্ত্রাসীদের গুলিতে বাংলাদেশির মৃত্যু
আমরা মনে করি, অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন প্রত্যেকটি গণতান্ত্রিক রাষ্ট্রের জন্য গুরুত্বপূর্ণ এবং গণতান্ত্রিক উন্নয়নের জন্য জরুরি।
প্রসঙ্গত, গত ২৪ মে বাংলাদেশে অবাধ, সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণ জাতীয় নির্বাচনের স্বার্থে নতুন ভিসানীতির কথা ঘোষণা করে যুক্তরাষ্ট্র।
এ নীতির আওতায় যেকোনো বাংলাদেশি ব্যক্তি যদি দেশে গণতান্ত্রিক নির্বাচনের প্রক্রিয়া ব্যাহত করার জন্য দায়ী হন বা এ ধরনের চেষ্টা করেছেন বলে প্রতীয়মান হয়, তাহলে যুক্তরাষ্ট্র তাকে ভিসা দেওয়ার ওপর বিধি-নিষেধ আরোপ করতে পারবে।
আরও পড়ুন : বাংলাদেশকে মরক্কোর স্বীকৃতি
ঐ দিন মার্কিন পররাষ্ট্র দফতরের এক বিবৃতিতে বলা হয়, বর্তমান এবং সাবেক বাংলাদেশি কর্মকর্তা, সরকার-সমর্থক ও বিরোধী রাজনৈতিক দলের সদস্যরা, আইন প্রয়োগকারী সংস্থা, বিচার বিভাগ ও নিরাপত্তা সংস্থাগুলোর সদস্যরাও এ ভিসা নীতির আওতায় পড়বেন।
যেসব কর্মকাণ্ড গণতান্ত্রিক নির্বাচন প্রক্রিয়াকে বানচালের আওতায় পড়বে সেগুলোও এ বিবৃতিতে উল্লেখ করা হয়।
আরও পড়ুন : রাশিয়ার সিনিয়র জেনারেল নিহত
এসব কর্মকাণ্ডের মধ্যে রয়েছে- ভোট কারচুপি, ভোটারদের ভয়ভীতি প্রদর্শন, শান্তিপূর্ণ সভা-সমাবেশ করার অধিকার প্রয়োগ করা থেকে মানুষকে বঞ্চিত করার জন্য সহিংসতাকে কাজে লাগানো বা এমন কোনও পদক্ষেপ- যার উদ্দেশ্য রাজনৈতিক দল, ভোটার, সুশীল সমাজ বা সংবাদ মাধ্যমকে তাদের মত প্রচার থেকে বিরত রাখা।
বাংলাদেশে অবাধ-সুষ্ঠু এবং শান্তিপূর্ণ জাতীয় নির্বাচনকে সমর্থন দিতে যুক্তরাষ্ট্রের ইমিগ্রেশন অ্যান্ড ন্যাশনালিটি অ্যাক্ট-এর ২১২(এ)(৩)(সি)(৩সি) ধারা বলে নতুন এ নীতি ঘোষণা করে যুক্তরাষ্ট্র।
আরও পড়ুন : ২ হাজার কোটি টাকা রাজস্ব আদায়
নতুন এ নীতি ঘোষণা করে পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্টনি ব্লিংকেন বলেন, অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন সবার দায়িত্ব। বাংলাদেশে গণতন্ত্রকে এগিয়ে নেওয়ার জন্য যারা কাজ করছেন, তাদের সবার প্রতি সমর্থন জানাতেই তিনি এ নীতি ঘোষণা করেছেন।
সান নিউজ/এনজে