অর্থনৈতিক রিপোর্টার:
করোনা ভাইরাস জনিত রোগের (কোভিড-১৯) চিকিৎসায় ব্যবহৃত জাপানি একটি ওষুধ তৈরি করেছে বাংলাদেশের শীর্ষ ওষুধ উৎপাদনকারী কোম্পানি বেক্সিমকো ফার্মাসিউটিক্যালস। তারা বলছে করোনা প্রতিরোধে এ ওষুধ বেশ কার্যকর হবে।
সরকারের সংশ্লিষ্ট বিভাগের অনুমোদনও চূড়ান্ত। এখন শুধু ওষুধ বিশেষজ্ঞদের সুপারিশ পেলেই ওষুধটি রোগীর ওপর পরীক্ষামূলক প্রয়োগ করা সম্ভব বলে বেক্সিমকো সূত্রে জানা গেছে।
তবে এটি এখনই বাজারে পাওয়া যাবে না। এদিকে আরেকটি ওষুধ উৎপাদনকারী কোম্পানি বিকন ফার্মাও ওষুধটি তৈরি করছে বলে জানা গেছে।
অস্ট্রেলিয়ার এবিসি নিউজ ও সাউথ চায়না মর্নিং পোস্ট সংবাদপত্রের বরাতে জানা গেছে, করোনা জনিত রোগের চিকিৎসায় ব্যবহৃত জাপানি ওষুধটির জেনেরিক নাম ফ্যাভিপিরাভির। জাপানি কোম্পানি ফুজি ফিল্মের অঙ্গ প্রতিষ্ঠান তোয়ামা কেমিক্যাল ইনফ্লুয়েঞ্জার চিকিৎসার জন্য এটি তৈরি করেছিল। ওষুধটির ব্র্যান্ড নাম অ্যাভিগান।
চীনের সংশ্লিষ্ট বিভাগের মতে, ওষুধটি করোনা আক্রান্তদের চিকিৎসায় বেশ কার্যকর। অবশ্য জাপান এখনো করোনা ভাইরাস আক্রান্তদের চিকিৎসায় ওষুধটির চূড়ান্ত অনুমোদন দেয়নি। তারা এ নিয়ে আরো পরীক্ষা-নিরীক্ষা করছে।
এ বিষয়ে বেক্সিমকো ফার্মার চিফ অপারেটিং অফিসার রাব্বুর রেজা বলেন, বিভিন্ন দেশ বিভিন্ন ওষুধ পরীক্ষা করছে। আমরা রেমডেসিভির বাদে সবগুলোই তৈরি করে মজুত করছি। যে কোনো একটি কার্যকর প্রমাণিত হলে এবং অনুমোদন দেয়া হলে আমরা সরকারকে সরবরাহ করতে পারবো।
তিনি বলেন, আইভারমেকটিনের কাঁচামালও আনা হচ্ছে। এটি তৈরি করা হবে। করোনা ভাইরাসের চিকিৎসায় সবচেয়ে কার্যকর হতে পারে আইভারমেকটিন। এটি সস্তা ও সহজলভ্য। বেক্সিমকো শুধু ফ্যাভিপিরাভির নয়, প্রচলিত যেসব ওষুধ করোনা চিকিৎসায় ব্যবহারের পরীক্ষা-নিরীক্ষা হচ্ছে, তার একটি বাদে সবগুলো তৈরি করছে। চাহিদা অনুযায়ী এসব ওষুধ আমরা সরকারকে দেবো।
রাব্বুর রেজা বলেন, ওষুধটি তৈরিতে সরকারের সংশ্লিষ্ট বিভাগের অনুমোদনও চূড়ান্ত। এখন শুধু ওষুধ বিশেষজ্ঞদের সুপারিশ পেলেই ওষুধটি রোগীর ওপর পরীক্ষামূলক প্রয়োগ করা।
তবে আন্তর্জাতিকভাবে এ ওষুধের গুনাগুণ নিয়ে রয়েছে ভিন্ন মত।
সাউথচায়না মর্নিং পোস্টের খবর অনুযায়ী, চীনের ন্যাশনাল সেন্টার ফর বায়োটেকনলজি ডেভেলপমেন্টের পরিচালক ঝ্যাং জিনমিন ১৮্ই মার্চ বলেন, চীনের দুটি মেডিকেল ইনস্টিটিউশন ফ্যাভিপিরাভির প্রয়োগ করে দেখেছে, এটি করোনা ভাইরাসজনিত কিছু লক্ষণ কমাতে কার্যকর। এর মধ্যে রয়েছে নিউমোনিয়া। এর বিশেষ কোনো পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া নেই।
অন্যদিকে দক্ষিণ কোরিয়ার বিজ্ঞানীদের মতামত ভিন্ন। তারা বলছে, এটি বড় ধরনের পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া তৈরি করতে পারে। সাউথচায়না মর্নিং পোস্ট জানায়, দক্ষিণ কোরিয়ার খাদ্য ও নিরাপদ ওষুধ বিষয়ক মন্ত্রণালয় ফ্যাভিপিরাভিরের বদলে যুক্তরাষ্ট্রের একটি কোম্পানির তৈরি রেমডেসিভির নামের একটি ওষুধ করোনা চিকিৎসায় ব্যবহারের অনুমোদন দিয়েছে।
এটি ইবোলা ভাইরাস চিকিৎসার জন্য তৈরি করা হয়েছিল। তৈরি করেছিল যুক্তরাষ্ট্রের শীর্ষস্থানীয় ওষুধ কোম্পানি জাইলিড সায়েন্স।
অস্ট্রেলিয়ার এবিসি নিউজে শনিবারের এক খবরে বলা হয়, মোনাশ বায়োমেডিসিন ডিসকভারি ইনস্টিটিউট ও ডোহার্টি ইনস্টিটিউটের এক গবেষণায় জানানো হয়েছে, আইভারমেকটিন শরীরে করোনাভাইরাসের বিস্তার ঠেকাতে পারে। যদিও বিষয়টি একেবারেই পরীক্ষার পর্যায়ে রয়েছে।
সান নিউজ/সালি
Newsletter
Subscribe to our newsletter and stay updated.