ধীরে ধীরে সুস্থ হচ্ছেন ওয়াহিদা
জাতীয়

ধীরে ধীরে সুস্থ হচ্ছেন ওয়াহিদা

নিজস্ব প্রতিবেদক:

রাজধানীর ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব নিউরোসায়েন্স ইনস্টিটিউটে চিকিৎসাধীন দিনাজপুরের ঘোড়াঘাটের উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) ওয়াহিদা খানমের শারীরিক অবস্থার উন্নতি হয়েছে। সুস্থ, স্বাভাবিক মানুষের মতোই জ্ঞান আছে এবং তিনি মুখে তরল খাবার খাচ্ছেন। তবে শঙ্কামুক্ত বলার সময় হয়নি, প্যারালাইজড হওয়া ডান সাইডের রেসপন্স জিরো এবং ওয়াহিদার মানসিক ট্রমা আছে বলে জানিয়েছেন তার চিকিৎসকরা।

ইউএনও ওয়াহিদা খানমের ধীরে ধীরে অনেক উন্নতি হবে বলেও আশা করছেন তার চিকিৎসা বোর্ডের চিকিৎসকরা।

তারা দাবি করেন, ‘ওয়াহিদার বয়স কম বলেই আমরা আশাবাদী হতে পারছি। তিন থেকে ছয়মাস পরে মোটামুটি সুস্থ হবেন তিনি। তবে সবকিছু ঠিক হয়ে যাবে, এ সময়ের মধ্যে এতোটা সাহস করেও আমরা বলতে পারছি না। কারণ, তার ডান হাত, ডান পা জিরো।’

মঙ্গলবার (০৮ সেপ্টেম্বর) দুপুরে ইউএনও ওয়াহিদা খানমের শারীরিক অবস্থার বিষয়ে সাংবাদিকদের জানান ইনস্টিটিউটের নিউরোট্রমা বিভাগের প্রধান ও ওয়াহিদার মেডিকেল বোর্ডের প্রধান ডা. মোহাম্মদ জাহেদ হোসেন এবং মেডিকেল বোর্ডের সদস্য ও হাসপাতালের যুগ্ম পরিচালক অধ্যাপক ডা. বদরুল আলম।

ওয়াহিদা শঙ্কামুক্ত কি না- এ প্রশ্নের জবাবে ডা. মোহাম্মদ জাহেদ হোসেন বলেন, ‘শঙ্কামুক্ত বলাটা কঠিন ব্যাপার। তবে যে কন্ডিশনের জন্য তিনি খারাপ ছিলেন, সেই কন্ডিশনটা ইমপ্রুভ হয়েছে। মোটামুটি সব প্যারামিটারেই তার উন্নতি হয়েছে। তার পালস-ব্লাড প্রেসার, মানসিক কন্ডিশন, জ্ঞানের মাত্রা, খাওয়া-দাওয়ার ব্যাপার সবকিছু চিন্তা করলে যথেষ্ট উন্নতি হয়েছে।’

তিনি বলেন, ‘হাসপাতালের এইচডিউতে পর্যবেক্ষণে থাকা ইউএনও ওয়াহিদা মুখে তরল খাবার খাচ্ছেন। তার জ্ঞানের মাত্রা সম্পূর্ণ সুস্থ মানুষের মতোই আছে। অন্য কন্ডিশনগুলোরও মোটামুটি ভালো উন্নতি হয়েছে। শুধু ডান হাতটা আগের মতোই আছে, ফিজিওথেরাপি চলছে। ফিজিওথেরাপি চলার পরে কতোটুকু উন্নতি হয়, সেটা সময় হলে বোঝা যাবে।’

ডানহাত অবশের বিষয়ে ডা. বদরুল বলেন, ‘আমরা আশা করি, ফিজিওথেরাপিতে তার উন্নতি হবে। তবে কবে কতোটুকু হবে, সেটা বলা কঠিন হবে। হাতে তার শক্তি নেই, কিন্তু বোধ আছে। চিমটি কেটে ব্যথা দিলে বুঝতে পারেন, টাচ করলে বুঝতে পারেন। কিন্তু হাতের কোনো শক্তি নেই, হাত নাড়াতে পারেন না।’

ডা. জাহিদ বলেন, ‘আমরা তাকে এইচডিউ থেকে বেডে দেওয়ার কথা চিন্তা-ভাবনা করছি। যেহেতু এখানে কিছু নিরাপত্তার প্রশ্ন আছে, সেজন্য আমরা তাকে এখনো এইচডিইউতেই রেখেছি। তবে কেবিনে নেওয়ার বিষয়ে আগামীকাল বুধবার (০৯ সেপ্টেম্বর) সিদ্ধান্ত হবে। মেডিকেল বোর্ড বসে সিদ্ধান্ত নেবেন, তাকে কেবিনে দেওয়া হবে কি না।’

অধ্যাপক বদরুল আলম বলেন, ‘তার অবস্থা এখন অনেকটাই স্থিতিশীল। আমরা আইসিইউ থেকে এইচডিইউতে স্থানান্তর করেছি, মানে হচ্ছে ওয়ান স্টেপ ডাউন। এখানে আমরা কয়েকটা দিন দেখবো, মোটামুটি যদি এ সময়টায় ভালো থাকে, তাহলে কেবিনে নিয়ে যাবো।’

তিনি বলেন, ‘ডান সাইড ছাড়া মোটামুটি সবকিছুই কাজ করছে এবং তিনি এখন তরল খাবারও খেতে পারছেন। এগুলো ভালো লক্ষণ। তার জিসিএস স্কোর ১৫-তে আছে। একজন স্বাভাবিক মানুষের গ্লাসগো কোমা স্কেল (জিসিএস) ১৪-১৫ থাকে, জিসিএস ৮-এ নেমে এলে তাকে ক্রিটিক্যাল বলে ধরা হয়।’

ওয়াহিদা খানমের জ্ঞান ফেরার পর চিকিৎসকদের সঙ্গে কথা বলছেন বলেও জানান ডা. বদরুল। বলেন, ‘আমাদের সঙ্গেও কথা বলছেন। তবে সেদিনের ঘটনা আমরা ইচ্ছে করেই জিজ্ঞেস করি না। তাতে তিনি ইমোশনাল হয়ে যেতে পারেন। এটি আমরা চাই না। ছেলের কথা জিজ্ঞেস করেছেন। হাসপাতালে কখন এসেছেন, সেটা মনে করতে পারছেন না। ওয়াহিদা মনে করতে পেরেছেন, তিনি হাসপাতালে ছিলেন। তার স্বামীকে প্রতিদিন তাকে ১০ মিনিটের জন্য আমরা দেখা করতে দিচ্ছি।’

তিনি আরও বলেন, ‘আমরা চাই ওয়াহিদা যেন আগের মতো সার্ভিসে ফিরে যেতে পারেন, তার কাজ করতে পারেন। কিন্তু এটা করতে কতোদিন লাগবে বা কোন পর্যায়ে যেতে পারবেন, এই মুহূর্তে মন্তব্য করা যাবে না।’

‘সরকারি দায়িত্ব পালনরত অবস্থায় এতো বড় একটা আঘাত তিনি পেয়েছেন। তাই তার মানসিক আঘাত কিছুটা আছে।’- বলেন ডা. জাহেদ।

গত ০২ সেপ্টেম্বর দিবাগত রাত আড়াইটায় সরকারি বাসভবনের ভেন্টিলেটর ভেঙে বাসায় ঢুকে ইউএনও ওয়াহিদা ও তার বাবা বীর মুক্তিযোদ্ধা ওমর আলী শেখের ওপর হামলা চালায় দুর্বৃত্তরা। ইউএনওর মাথায় গুরুতর আঘাত এবং তার বাবাকে ধারালো অস্ত্র দিয়ে কুপিয়ে আহত করা হয়।

পরে ইউএনও ও তার বাবাকে রংপুর মেডিকেল কলেজ (রমেক) হাসপাতালে নিয়ে ভর্তি করা হয়। ওয়াহিদার অবস্থা আশঙ্কাজনক হওয়ায় উন্নত চিকিৎসার জন্য তাকে ৩ সেপ্টেম্বর সন্ধ্যায় এয়ার অ্যাম্বুলেন্সে ঢাকার ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব নিউরোসায়েন্স হাসপাতালে আনা হয়। রাতে তার মাথায় অস্ত্রোপচারের পর থেকে আইসিইউতে ৭২ ঘণ্টার পর্যবেক্ষণে থাকার পর সোমবার দুপুরে চিকিৎসকরা জানিয়েছেন, ওয়াহিদা খানমের শারীরিক অবস্থা আগের চেয়ে এখন ভালো এবং স্থিতিশীল। তার বাবা ওমর আলী শেখ এখনো রমেক হাসপাতালে চিকিৎসাধীন।

এ ঘটনায় ইউএনওর ভাই শেখ ফরিদ অজ্ঞাতনামাদের আসামি করে ঘোড়াঘাট থানায় হত্যাচেষ্টার মামলা করেন। তিনজন মূল আসামিকে গ্রেপ্তার ও কয়েকজনকে আটক করে জিজ্ঞাসাবাদ করছে পুলিশ।

সান নিউজ/ এআর

Copyright © Sunnews24x7
সবচেয়ে
পঠিত
সাম্প্রতিক

জায়েদের ফোন পানিতে ছুড়ে ফেললেন সাকিব

বিনোদন ডেস্ক: বাংলাদেশ ক্রিকেটের...

চীনে সড়ক ধসে নিহত ১৯ 

আন্তর্জাতিক ডেস্ক: চীনের দক্ষিণাঞ...

রাজধানীতে তাপমাত্রা বাড়ছে

নিজস্ব প্রতিবেদক: চলতি তাপপ্রবা...

টিভিতে আজকের খেলা

স্পোর্টস ডেস্ক: প্রতিদিনের মতো আজ বুধবার (১লা মে) বেশ কিছু খ...

শ্রমিকদের অধিকার বঞ্চিত করলে ছাড় নয়

নিজস্ব প্রতিবেদক: প্রধানমন্ত্রী শ...

মিল্টনের সব অপকর্ম বের করা হবে

নিজস্ব প্রতিবেদক : ‘চাইল্ড অ্যান্ড ওল্ড এজ কেয়ার&rsquo...

ডেঙ্গুতে প্রাণ গেল গ্রাম পুলিশের

জেলা প্রতিনিধি : শরীয়তপুরে ডেঙ্গুজ্বরে আক্রান্ত হয়ে আবুল হোস...

৫ বিভাগে বৃষ্টির আভাস

নিজস্ব প্রতিবেদক : রাজধানী ঢাকাসহ দেশের ৫ বিভাগে বৃষ্টি হয়ে...

যুদ্ধকে ‘না’ বলতে আহ্বান জানিয়েছি

নিজস্ব প্রতিবেদক : থাইল্যান্ড সফরে যুদ্ধকে ‘না’...

মাদকবিরোধী অভিযানে গ্রেফতার ৩১

নিজস্ব প্রতিবেদক : রাজধানীর বিভিন্ন এলাকায় মাদকবিরোধী অভিযান...

লাইফস্টাইল
বিনোদন
sunnews24x7 advertisement
খেলা