রাকিব হাসনাত, পাবনা: পাবনার ঈশ্বরদীতে নির্মাণাধীন রুপপুর পারমানবিক বিদ্যুৎ প্রকল্পের (আরএনপিপি) এর দ্বিতীয় ইউনিটের মূল যন্ত্র রিয়্যাক্টর পেসার ভেসেল (পারমাণবিক চুল্লিপাত্র) স্থাপন কার্যক্রমের উদ্বোধন করা হয়েছে। এটাকে পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্রের হৃৎপিণ্ড বলা হয়।
আরও পড়ুন: ফের বেড়েছে মৃত্যু ও শনাক্ত
বুধবার ( ১৯ অক্টোবর) সকাল সাড়ে ১০ টার দিকে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা গণভবন থেকে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে আনুষ্ঠানিকভাবে এই পারমাণবিক চুল্লি স্থাপন উদ্বোধন করেন।
চুল্লিপাত্রই বিদ্যুৎকেন্দ্রের মূলযন্ত্র, এর মধ্যেই শক্তি উৎপাদন হবে, যা কাজে লাগিয়ে তৈরি করা হবে বিদ্যুৎ। ফলে ঐতিহাসিক এই প্রকল্পের সব ধরনের পারমাণবিক যন্ত্রপাতি স্থাপন কাজ শেষ হলো। এখন শুধু অপেক্ষা বিদ্যুৎ উৎপাদনের।
আরও পড়ুন: যুক্তরাষ্ট্রকে ধ্বংস করতে পারে রাশিয়া
উদ্বোধন অনুষ্ঠানে বিজ্ঞান ও প্রযুক্তিমন্ত্রী ড. ইয়াফেস ওসমানের সভাপতিত্বে উপস্থিত ছিলেন, রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণ প্রকল্পের পরিচালক ড. সৌকত আকবর, প্রকল্পের ঠিকাদার রাশিয়ার রাষ্ট্রায়ত্ত্ব কোম্পানি রোসাটমের অন্যতম প্রধান নির্বাহী এলেক্সে লিখাচেভ, বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব জিয়াউল হাসান, বাংলাদেশ পরমাণু শক্তি কমিশনের চেয়ারম্যান ড. মো. আজিজুল, স্থানীয় এমপি নুরুজ্জামান বিশ্বাস, সংরক্ষিত এমপি নাদিরা ইয়াসমিন জলি, সাইট ইনচার্জ রুহুল কুদ্দুসসহ রাশিয়ান বিশেষজ্ঞ, সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা।। অনুষ্ঠানে দেশ ও জাতির মঙ্গল কামনা করে মোনাজাত পরিচালনা করেন ঈশ্বরদী উপজেলা মসজিদের পেশ ইমাম মোসাদ্দেক আহমেদ।
রুপপুর পারমানকিব বিদ্যুৎ প্রকল্প সূত্রে জানা যায়, ২০২১ সালের ১০ অক্টোবর প্রকল্পের প্রথম ইউনিটের চুল্লি স্থাপন কাজের উদ্বোধন হয়। প্রথম ইউনিটের কাজের ৭০ শতাংশ অগ্রগতি হয়েছে। তার এক বছরের মধ্যেই দ্বিতীয় ইউনিটের চুল্লি স্থাপনের কাজ শুরু হলো আজ। প্রকল্পের ৫৩ শতাংশ ভৌত নির্মাণ কাজ শেষ হয়েছে এবং আর্থিক অগ্রগতি সম্পন্ন হয়েছে প্রায় ৫০ শতাংশ। প্রকল্পের কাজ যেভাবে এগিয়ে চলেছে তাতে নির্ধারিত সময়ের মধ্যে কাজ শেষ করে উৎপাদন শুরু করা যাবে।
আরও পড়ুন: ইউপি সদস্যকে জবাই করে হত্যা
প্রসঙ্গত, ২০১৪ সালের ২ অক্টোবর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎ প্রকল্পের প্রথম পর্যায়ের কাজের ভিত্তিপ্রস্থর স্থাপন করেন। এসময় রাশিয়ান ফেডারেশনের সাবেক প্রধানমন্ত্রী সের্গেই কিরিয়েঙ্কো উপস্থিত ছিলেন।
এরপর গত বছরের ১০ অক্টোবর রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্রের পারমাণবিক চুল্লি বা নিউক্লিয়ার রিঅ্যাক্টর প্রেসার ভেসেল স্থাপনের কাজ উদ্বোধন করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এটাকে পরমাণু বিদ্যুৎকেন্দ্রের হৃৎপিণ্ডও বলা হয়।
আরও পড়ুন: আজীবন সম্মাননা পেলেন রেজওয়ানা চৌধুরী
চুক্তি অনুযায়ী রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্রে দুটি ইউনিটে ২৪০০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদন হবে যা নির্মাণের জন্য প্রাথমিকভাবে ১ লাখ ১৩ হাজার কোটি টাকারও বেশি খরচ ধরা হয়েছে। বাংলাদেশের ইতিহাসে একক উন্নয়ন প্রকল্প হিসেবে রূপপুর দেশের সবচেয়ে বড় প্রকল্প। করোনাভাইরাস মহামারির মধ্যেও রূপপুরে প্রতিদিন তিন শিফটে দেশি-বিদেশি ২৩-২৪ হাজার শ্রমিক দিনরাত কাজ করছেন।
সান নিউজ/কেএমএল