জাতীয়

পরিবহন শ্রমিকদের পাশে কেউ নেই

জাহিদ রাকিব

দেশে চলমান করোনা পরিস্থিতির কারণে দেড় বছর ধরেই নানান সমস্যার মধ্যে রয়েছেন পরিবহন শ্রমিকরা। গত ১ জুলাই থেকে শুরু হওয়া কঠোর বিধিনিষেধের কারণে একপ্রকার মানবেতর জীবনযাপন করছেন তারা। কারো কারো প্রশ্ন শ্রমিক ও মালিক কল্যাণ তহবিলে তাদের জমা দেয়া টাকাগুলোই বা কোথায়? সেখান থেকেও তাদের কোন সহযোগিতা করা হচ্ছে না। মঙ্গলবার (১৩ জুলাই) গাবতলী বাস টার্মিনালে খোঁজ নিয়ে পরিবহন শ্রমিকদের এমন করুণ অবস্থার কথা জানা যায়।

রাজধানীর গাবতলী বাস টার্মিনালে সরেজমিনে দেখা যায়, টার্মিনালে সারিতে সারিতে রাখা রয়েছে বিভিন্ন রুটের বাস। বাসের হেলপার, ড্রাইভাররা অলস সময় পার করছেন। কেউ কেউ বাস ঝাড়া-মোছায় ব্যস্ত ছিলেন। আবার কিছু কিছু বাস মেরামত করতেও দেখা গেছে।

পরিবহন শ্রমিকদের সাথে কথা বলে জানা যায়, কেউ কেউ বাস পাহারা দিয়ে কিছু টাকা পায়, সেটা দিয়ে খাবার খরচ ওঠে। এছাড়া অধিকাংশ শ্রমিকই কোনো কাজ ছাড়াই অলস সময় কাটান বাসে কিংবা টার্মিনালে। অনেকে আবার চলে গেছেন গ্রামের বাড়িতে। কিছু কিছু বাসের ড্রাইভার ও সুপারভাইজারের ঢাকাতে থাকার জায়গা থাকলেও হেলপারদের বাসে কিংবা টার্মিনালেই কাটাতে হয় পুরোটা সময়।

হানিফ পরিবহনের কাউন্টার মাস্টার হিসেবে দীর্ঘ ৬ বছর কাজ করেন মনিরুল ইসলাম। তিনি বলেন, গতবছর লকডাউনে যা কিছু সাহায্য-সহযোগিতা পাইছি, এইভারের লকডাউনে মালিক একবার ফোন দিয়েও খোঁজ-খবর নেয়নি। প্রতিদিন খরচ হয় ৩০০ টাকা, ১ ছেলে ১ মেয়ে আছে। গ্রামে টাকা পাঠাইতে হয়। বলুন কি করে চালামু সংসার?

ভাই ইনকাম বন্ধ, খাওয়া বন্ধ, মালিকের অভাব আপনেরা পারলে মালিকরে কিছু সাহায্য করেন, আমাদের কোন সাহায্য লাগবে না। সাংবাদিক দেখে এইভাবে নিজের কষ্টের কথা বললেন শ্যামলী পরিবহনের এক কন্ট্রাক্টর। তিনি বলেন, আমাদের দিয়ে মালিক কোটি কোটি টাকা বানিয়েছে, অথচ এই দুর্দিনে আমাদের এক টাকা দিয়েও সাহায্য করে নাই।

টার্মিনাল এলাকা ঘুরে দেখা যায়, এখানকার শ্রমিকরা কেউ বাসের ভিতর শুয়ে আছে, কেউ টার্মিনালে যাত্রীছাউনির ভিতর অলস সময় কাটাচ্ছেন। কেউ কেউ অর্ধাহারে কিংবা অনাহারে দিন কাটাচ্ছে, আবার অনেকেই ইতোমধ্যে পরিবর্তন করেছে পেশা। তবে এ কঠোর বিধিনিষেধের মধ্যে অন্যকিছু করে দিনযাপনেরও খুব বেশি সুযোগ নেই।
পরিবহন শ্রমিকদের অভিযোগ, আমরা দীর্ঘদিন রোডে শ্রমিক কল্যাণ তহবিল আর মালিক কল্যাণ তহলিবে যে টাকা দিয়েছি এই টাকাগুলো কার কাছে, আজকে আমাদের দুর্দিনে তারা নাই।

পরিবহন শ্রমিকদের দুর্দশা নিয়ে বেশ কয়েকটি পরিবহন মালিকের সাথে যোগাযোগ করার চেষ্টা করেও তাদেরকে পাওয়া যায়নি। তারা সাংবাদিক পরিচয় পাওয়ার পর ফোন কেটে দেয়।

বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক খন্দকার এনায়েতুল্যাহ বলেন, আমার এনা পরিবহনের শ্রমিকদের জন্য আজকে আমি ২৫ লাখ টাকার চেক দিয়েছি। প্রত্যেক গাড়ি বাবদ ১০ হাজার করে দেয়া হবে। এছাড়া আমরা সমিতি থেকেও শ্রমিকদের জন্য ত্রাণ ও আর্থিক সহযোগিতার উদ্যোগ নিয়েছি। খুব দ্রুতই তাদের সহযোগিতা করা হবে।

তিনি আরও বলেন, আসলে আমরা মালিকরাও তো ক্ষতির সম্মুখীন হয়েছি। করোনা সবাইকেই ক্ষতিগ্রস্ত করেছে। এরপরেও আমরা গত লকডাউনে শ্রমিকদের পাশে ছিলাম, এবারেও থাকবো।

সান নিউজ/জেআই/এফএআর

Copyright © Sunnews24x7
সবচেয়ে
পঠিত
সাম্প্রতিক

বোয়ালমারীতে হত্যাচেষ্টা মামলায় সুদেব সিং গ্রেফতার

কামরুল সিকদার, বোয়ালমারী (ফরিদপুর) : ফরিদপুরের বোয়ালমারীতে...

বোয়ালমারীতে ভর্তুকি মূল্যে কৃষি যন্ত্রপাতি বিতরণ

কামরুল সিকদার, বোয়ালমারী (ফরিদপুর):

বাংলাদেশের বিশ্বকাপ ফটোসেশন

স্পোর্টস ডেস্ক : আগামী ২ জুন ওয়েস্ট ইন্ডিজ ও যুক্তরাষ্ট্রের...

ভোলায় এলজিইডি’র জলবায়ু বিষয়ক প্রশিক্ষণ 

ভোলা প্রতিনিধি: ভোলায় জেলা ও উপজে...

কান উৎসবে নজর কাড়লেন ভাবনা

বিনোদন ডেস্ক: কান চলচ্চিত্র উৎসবে...

হামলাকারী ইউপি চেয়ারম্যান বরখাস্ত

মো. নাজির হোসেন, মুন্সীগঞ্জ: মুন্...

শুরু হচ্ছে বার্সা একাডেমির ট্রেনিং ক্যাম্প

নিজস্ব প্রতিবেদক: ইন্টারন্যাশনাল...

বিএনপির দেশবিরোধী ষড়যন্ত্র কাজে দেয়নি

নিজস্ব প্রতিবেদক: বিএনপির দেশবিরো...

ডাল কিনছে সরকার

নিজস্ব প্রতিবেদক: ট্রেডিং কর্পোরেশন অব বাংলাদেশের (টিসিবি) জ...

লাইফস্টাইল
বিনোদন
sunnews24x7 advertisement
খেলা