নিজস্ব প্রতিবেদক : পদ্মাসেতুর ৪১তম সর্বশেষ স্প্যান বৃহস্পতিবার সকালে বসেছে। এর মধ্য দিয়ে মুন্সিগঞ্জের মাওয়ার সঙ্গে শরীয়তপুরের জাজিরা প্রান্তের মধ্যে সংযোগ স্থাপিত হয়েছে।
এদিন সকালে সেতুর ১২ ও ১৩ নম্বর পিলারের উপর ‘টু-এফ’ নামের এ স্প্যানটি বসানোর মধ্যে দিয়ে দৃশ্যমান হলো সেতুর ৬ দশমিক ১৫ কিলোমিটার।
এর আগে গতকাল বুধবার দুপুরে ৪১তম স্প্যানটি মুন্সিগঞ্জের মাওয়া কুমারভোগ কনস্ট্রাকশন ইয়ার্ড থেকে সন্ধ্যায় নির্ধারিত পিলারের কাছে এনে রাখা হয় বলে নিশ্চিত করেন পদ্মা সেতুর নির্বাহী প্রকৌশলী দেওয়ান আব্দুল কাদের।
সব কিছু ঠিক থাকলে ২০২২ সালের স্বাধীনতা দিবসে পদ্মাসেতু উদ্বোধন করার কথা রয়েছে। পদ্মা সেতুতে দ্বিতল ব্যবস্থায় বাস-ট্রাকের পাশাপাশি চলবে ট্রেনও।
অর্থনীতিবিদরা বলছেন, পদ্মাসেতু চালু হলে দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের ২১ জেলার সঙ্গে রাজধানীর যোগাযোগ ব্যবস্থায় ব্যাপক পরিবর্তন আসবে। এর ফলে দেশের সামগ্রিক অর্থনীতিতেও ইতিবাচক প্রভাব পড়বে। এতে দেশের মোট দেশজ উৎপাদন বাড়বে এক থেকে দেড় শতাংশ। নতুন গড়ে উঠা ভারী শিল্প কারখানাসহ নানা প্রতিষ্ঠানের ফলে কমে যাবে দারিদ্যের হারও।
জানতে চাইলে বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক গভর্নর আতিউর রহমান বলেন, পদ্মাসেতু নির্মিত হলে শুধু যোগাযোগের উন্নয়ন নয়, বদলে যাবে দেশের অর্থনীতিও। ব্যবসা-বাণিজ্যের প্রতি মানুষের আস্থা এরই মধ্যে বাড়তে শুরু করেছে। পদ্মাসেতু নির্মিত হওয়ার পর টুরিজম ব্যবস্থায়ও আসবে ব্যাপক পরিবর্তন।
ঢাকা থেকে ফরিদপুরের ভাঙ্গা পর্যন্ত এক্সপ্রেস হওয়ায় ফেরীর বিড়ম্বনা এড়াতে দক্ষিণাঞ্চলের বেশিরভাগ গাড়িই চলবে পদ্মাসেতু দিয়ে। দক্ষিণ ও দক্ষিণপূর্ব এশিয়ার আঞ্চলিক যোগাযোগের ক্ষেত্রেও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে পদ্মাসেতু। ট্রান্সএশীয় রেলপথের অংশ হলে এতে বাড়বে মালবাহী ট্রেনের চলাচল।
এ প্রসঙ্গে যোগাযোগ বিশেষজ্ঞ ড. এম শামসুল হক বলেন, পদ্মাসেতু চালু হলে আঞ্চলিক কানেক্টিভিটির পাশাপাশি আন্তর্জাতিক কানেক্টিভিটিরও সুযোগ বাড়বে। বাংলাদেশের ভৌগোলিক অবস্থানের কারণে সুবিধা পাওয়ার পাশাপাশি বৈদেশিক মুদ্রা আহরণেরও সুযোগ সৃষ্টি করবে পদ্মাসেতু।
বিশ্লেষকদের মতে, পদ্মাসেতু সেতু শুধু রড-সিমেন্টের তৈরি কোনো কাঠামোই নয়, এর সঙ্গে জড়িয়ে আছে ১৭ কোটি মানুষের আবেগ ও ভালোবাসা। বাংলাদেশের সক্ষমতার বৈশ্বিক উদারহণ এবং আগামী দিনে দেশীয় অর্থনীতিতে অপার সম্ভাবনার হাতছানি।
সান নিউজ/এসএম