রাজীব গান্ধী হত্যা মামলা : ছয় ঘাতককে মুক্তি দিল ভারত
আন্তর্জাতিক
রাজীব গান্ধী হত্যা মামলা

ছয় ঘাতককে মুক্তি দিল ভারত

আন্তর্জাতিক ডেস্ক : ভারতীয় সুপ্রিম কোর্ট দেশটির সাবেক প্রধানমন্ত্রী রাজীব গান্ধী হত্যা মামলায় যাবজ্জীবন সাজাপ্রাপ্ত নলিনী শ্রীহরনসহ অপর পাঁচ আসামিকে মুক্তি দিয়েছে।

শুক্রবার (১১ নভেম্বর) দেশটির সুপ্রিম কোর্ট এই আসামিদের মুক্তির আদেশ দিয়েছে বলে এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে এনডিটিভি।

আদেশে ভারতের সুপ্রিম কোর্ট তামিলনাড়ুর সরকার এর আগে রাজ্যপালের কাছে তাদের মুক্তির সুপারিশ করেছিল বলে জানিয়েছে।

জানা যায়, গত মে মাসে এই হত্যা মামলায় দোষী সাব্যস্ত অপর আসামি এ জি পেরারিভালানকে মুক্তি দেয় দেশটির সুপ্রিম কোর্ট।

ভারতের সাবেক প্রধানমন্ত্রী রাজীব গান্ধী হত্যাকাণ্ডের সাথে জড়িত নলিনী ছাড়াও অন্য যে আসামিরা মুক্তি পেয়েছেন তারা হলেন, নলিনী শ্রীহরন, সান্থান, মুরুগান, রবার্ট পায়াস এবং রবিচন্দ্রন।

দেশটির শীর্ষ আদালতের বিচারপতি বি আর গাভাই এবং বি ভি নাগারথনারের বেঞ্চ বলেছেন, মামলার অন্যতম দোষী এ জি পেরারিভালানের মতো শীর্ষ আদালতের রায় অন্য আসামিদের ক্ষেত্রেও প্রযোজ্য।

চলতি বছরের গত ১৮ মে ভারতের সুপ্রিম কোর্ট সংবিধানের ১৪২ অনুচ্ছেদের আওতায় বিশেষ ক্ষমতা প্রয়োগ করে পেরারিভালানের মুক্তির আদেশ দেয়; যিনি ৩০ বছরেরও বেশি সময় কারাগারে ছিলেন।

রাজীব গান্ধী হত্যা মামলায় মুক্তিপ্রাপ্ত ছয় আসামি : নলিনী শ্রীহরন, রবিচন্দ্রন, সান্থান, মুরুগান, এ জি পেরারিভালান ও রবার্ট পায়াসকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছিল এবং তারা ২৩ বছরেরও বেশি সময় জেলে কাটিয়েছেন।

গত বছর শ্রীহরন এবং রবিচন্দ্রন তামিলনাড়ু রাজ্য সরকারের কাছে প্যারোলে মুক্তির আবেদন জানিয়েছিলেন। আবেদনের পর তামিলনাড়ু সাসপেনশন অব সেন্টেন্স রুলস-১৯৮২’র আওতায় রাজ্য সরকারের অনুমোদনে গত বছরের ২৭ ডিসেম্বর থেকে প্যারোলে মুক্ত রয়েছেন তারা।

প্রসঙ্গত, ১৯৯১ সালের ২১ মে শ্রীলঙ্কার বিচ্ছিন্নতাবাদী বিদ্রোহী গোষ্ঠী লিবারেশন টাইগার্স অব তামিল ইলমের (এলটিটিই) এক সদস্য তামিলনাড়ুর শ্রীপেরুমবুদুরে আত্মঘাতী বোমা হামলা চালিয়ে ভারতের তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী রাজীব গান্ধীকে হত্যা করেন।

নির্বাচনী সমাবেশ চলাকালীন ধানু নামের ওই আত্মঘাতী হামলাকারী বোমা বিস্ফোরণ ঘটিয়ে রাজিব গান্ধীকে হত্যা করেন।

১৯৯৯ সালের মে মাসে দেশটির সর্বোচ্চ আদালত হত্যাকাণ্ডে অভিযুক্ত পেরারিভালান, মুরুগান, সান্থান এবং শ্রীহরনের মৃত্যুদণ্ড বহাল রাখে।

২০১৪ সালে প্রাণভিক্ষার আবেদনের সিদ্ধান্ত নিতে বিলম্ব করায় সান্থান এবং মুরুগানের পাশাপাশি পেরারিভালানের মৃত্যুদণ্ডকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ডে রূপান্তরিত করে ভারতের সুপ্রিম কোর্ট।

অপরদিকে ২০০১ সালে কিশোরী মেয়ের লালন-পালনের কথা বিবেচনা করে অপর অভিযুক্ত শ্রীহরনের মৃত্যুদণ্ডের সাজা কমিয়ে যাবজ্জীবন করে দেশটির শীর্ষ এই আদালত।

২০০৬ সালে শ্রীলঙ্কার তামিল টাইগাররা ভারতের সাবেক প্রধানমন্ত্রী রাজীব গান্ধীকে হত্যার ঘটনায় দুঃখপ্রকাশ করে। সূত্র: এনডিটিভি, টাইমস অব ইন্ডিয়া।

প্রসঙ্গত, ১৯৪৪ সালের ২০ আগস্ট ভারতের বোম্বে (বর্তমান মুম্বাই) জন্মগ্রহণ করেন রাজীব রত্ন গান্ধী। তিনি ছিলেন ভারতের ষষ্ঠ প্রধানমন্ত্রী। তিনি ইন্দিরা নেহেরু ও ফিরোজ গান্ধীর জ্যৈষ্ঠ পুত্র।

১৯৮৪ সালের ৩১শে অক্টোবর মায়ের মৃত্যুর দিন মাত্র ৪০ বছর বয়সে ভারতের কনিষ্ঠতম প্রধানমন্ত্রীরূপে দায়িত্বভার গ্রহণ করেন।

১৯৮৯ সালের ২রা ডিসেম্বর সাধারণ নির্বাচনে পরাজয়ের পর পদত্যাগ করার আগে পর্যন্ত ভারতের প্রধানমন্ত্রীর দায়িত্ব পালন করেন তিনি।

রাজনীতিতে পদার্পণের পূর্বে ইন্ডিয়ান এয়ারলাইনসের এক পেশাদার বিমানচালক ছিলেন রাজীব গান্ধী। কেমব্রিজে থাকাকালীন ইতালিয় বংশোদ্ভুত সোনিয়া মাইনোর সঙ্গে পরিচয় হয় এবং পরে ১৯৬৮ সালে তারা বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হয়।

১৯৮০ সালে মা দেশের প্রধানমন্ত্রী হওয়া সত্ত্বেও কনিষ্ঠ ভ্রাতা সঞ্জয় গান্ধীর মৃত্যুর আগ পর্যন্ত রাজীব রাজনীতি থেকে দূরেই ছিলেন।

১৯৮৪ সালে অপারেশন ব্লু স্টারের প্রতিক্রিয়ায় আততায়ীর হাতে ইন্দিরা গান্ধী নিহত হলে জাতীয় কংগ্রেস নেতৃবৃন্দ রাজীবকেই ভারতের প্রধানমন্ত্রী নির্বাচিত করে। একই বছর তার নেতৃত্বে কংগ্রেস সংসদের ৫৪২টি আসনের ৪১১টিতে জয়লাভ করে। এই জয় ছিল ভারতীয় সংসদে কংগ্রেসের সর্বকালের রেকর্ড।

রাজীব গান্ধী লাইসেন্স প্রথা, শুল্ক ব্যবস্থা ও অর্থনৈতিক কার্যকলাপের জন্য অনুমতি প্রদানের নিয়মনীতি ঢেলে সাজান; টেলিযোগাযোগ ও শিক্ষা ব্যবস্থার আধুনিকীকরণ তথা বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির প্রসারের ক্ষেত্রে উপযুক্ত পদক্ষেপ গ্রহণ করেন এবং যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে সম্পর্কের উন্নতিসাধন প্রভৃতি কাজ শুরু করেন।

১৯৯১ সাল পর্যন্ত ভারতের জাতীয় কংগ্রেসের সভাপতি ছিলেন রাজীব গান্ধী। এই বছরই একটি নির্বাচনী জনসভায় জনৈক এলটিটিই সদস্যের আক্রমণে তিনি নিহত হন।

১৯৯৮ সালে তার স্ত্রী সোনিয়া গান্ধী কংগ্রেস সভানেত্রী নির্বাচিত হন এবং ২০০৪ সালে তার নেতৃত্বে কংগ্রেস লোকসভায় জয়লাভ করে। তার পুত্র রাহুল গান্ধী সংসদ তথা সর্বভারতীয় কংগ্রেস কমিটির সাধারণ সম্পাদক।

প্রসঙ্গত, মৃত্যুর পর রাজীব গান্ধীকে ভারতের সর্বোচ্চ বেসামরিক সম্মাননায় “ভারতরত্ন” ভূষিত করা হয়। তার মা ইন্দিরা গান্ধীও ভারতরত্ন সম্মানে ভূষিত হয়েছিলেন। রাজীব গান্ধী ভিইউ২আরজি নাম ব্যবহারকারী একজন অপেশাদার রেডিও সঞ্চালক ছিলেন।

সান নিউজ/এইচএন

Copyright © Sunnews24x7
সবচেয়ে
পঠিত
সাম্প্রতিক

কেশবপুরে নির্বাচনী কার্যালয়ের শুভ উদ্বোধন

আব্দুর রাজ্জাক সরদার, কেশবপুরঃ আগামী ০৮ ই মে ২০২৪, রোজ বুধবা...

আফ্রিকায় ভারী বৃষ্টি, নিহত ১৫৫

আন্তর্জাতিক ডেস্ক: আফ্রিকায় গত কয়েক সপ্তাহ ধরে ভারী বৃষ্টি হ...

মাকে গলা কেটে হত্যা করল ছেলে

জেলা প্রতিনিধি: বিয়ে না দেওয়ায় চা...

রাজধানীতে ময়লার গাড়ির ধাক্কায় নিহত ১

নিজস্ব প্রতিবেদক: রাজধানীর মুগদার মদিনাবাগ এলাকায় ঢাকা দক্ষ...

তীব্র গরমে জনজীবন বিপর্যস্ত

নিজস্ব প্রতিবেদক: দেশের ১৮টি জেলার ওপর দিয়ে তীব্র তাপপ্রবাহ...

প্রবোধচন্দ্র সেন’জন্ম

সান নিউজ ডেস্ক: আজকের ঘটনা কাল অত...

টিভিতে আজকের খেলা 

স্পোর্টস ডেস্ক: প্রতিদিনের মতো আজ শনিবার (২৭ এপ্রিল) বেশ কিছ...

শনিবার রাজধানীর যেসব মার্কেট বন্ধ

সান নিউজ ডেস্ক: প্রতি সপ্তাহের এক...

মাকে গলা কেটে হত্যা করল ছেলে

জেলা প্রতিনিধি: বিয়ে না দেওয়ায় চা...

পঞ্চগড়ে দুই শিশুর মৃত্যু

জেলা প্রতিনিধি: পঞ্চগড়ে চাওয়াই নদীতে গোসল করতে নেমে আলমি আক্...

লাইফস্টাইল
বিনোদন
sunnews24x7 advertisement
খেলা