জেলা প্রতিনিধি : এবার কক্সবাজার সমুদ্র সৈকতে প্লাস্টিক, ছেঁড়া জাল, স্যান্ডেল ও রশিসহ নানা ধরনের বর্জ্য ভেসে এসেছে। নিম্নচাপের কারণে ভেসে আসা বর্জ্য এসব সৈকতের বালিয়াড়ির কয়েক কিলোমিটার জুড়ে ছড়িয়ে রয়েছে।
আরও পড়ুন : বঙ্গবন্ধু স্বাধীন বাংলাদেশের স্বপ্ন দেখেছিলেন
শুক্রবার (৩১ মার্চ) ভোরে জোয়ারের সাথে সৈকতের কলাতলী থেকে কবিতা চত্বর পর্যন্ত বিস্তীর্ণ এলাকায় নানা ধরনের সামুদ্রিক বর্জ্য ভেসে আসে।
এসব বর্জ্যের মধ্যে রয়েছে প্লাস্টিকের বিভিন্ন সামগ্রী, কাঁচের বোতল, ছেড়া জাল, প্লাস্টিকের বোতল, রশি, গাছের গুঁড়ি, স্যান্ডেলসহ মানুষের ব্যবহার্য নানা সামগ্রী। ইতোমধ্যে প্রশাসন বর্জ্য অপসারণের কাজ শুরু করেছে।
আরও পড়ুন : ১০ টাকায় ইফতার বাজার
এর আগে বিভিন্ন সময়ে ভেসে আসা বর্জ্য কক্সবাজার সৈকতের দরিয়ানগর থেকে মহেশখালির বিভিন্নস্থান ও সোনাদিয়া দ্বীপে এসে জমা হয়েছে।
সমুদ্র গবেষণা ইনস্টিটিউটের মহা পরিচালক ও সমুদ্রবিজ্ঞানী সাঈদ মাহমুদ বেলাল হায়দার জানান, সমুদ্রে নিম্নচাপ, বায়ুপ্রবাহ, পানির ঘূর্ণায়ন, সমুদ্রের পানির গতি প্রবাহসহ সমুদ্র পৃষ্ঠের ধরনের উপর ভিত্তি করে সমুদ্র উপকূলের নির্দিষ্ট কিছু জায়গায় ভাসমান প্লাস্টিকসহ ও অন্যান্য বর্জ্য জমা হয়েছে।
আরও পড়ুন : স্মৃতি বৃত্তি পরীক্ষার সনদ পেল ২০০ শিক্ষার্থী
গত কয়েকদিন ধরে আমরা বঙ্গপোসাগরে একটি ছোট আকারের নিম্নচাপ লক্ষ্য করেছি। এসব নিম্নচাপে জোয়ারের সময় সমুদ্রের উপরি পৃষ্ঠের পানি অতি মাত্রায় বেড়ে গিয়ে ফুলে ওঠে এবং ঘুর্ণনের ফলে সমুদ্রের ভাসমান প্লাস্টিক বর্জ্য এক সাথে জমা হয়ে ভেসে আসে সৈকতে।
মানুষের ব্যবহার্য প্লাস্টিক বর্জ্য, মাছ ধরার জাল, প্লাস্টিক ও কাঁচের বোতল, ফোম, রশিসহ হাজার হাজার টন বর্জ্য সৈকতে এসে জমা হয়। কক্সবাজার উপকূলে অবস্থিত বিভিন্ন লতা, গুল্ম, ও ম্যানগ্রোভের সাথে আটকা পড়ে। বর্তমানে এটি কক্সবাজার সমুদ্র সৈকত টেরেসস্ট্রিয়াল মাইক্রোপ্লাস্টিকের উৎসে পরিণত হয়েছে।
আরও পড়ুন : ভবনের দেওয়াল ধসে শিশু নিহত
তিনি আরও জানান, সমুদ্রের যে সব জায়গার ভেজিটেশন লাইন ও ওয়াটার লাইনের দূরত্ব বেশি সে জায়গার লম্বা দূরত্ব অতিক্রম করে জোয়ারের পানি আসতে না পারায় প্লাস্টিক বর্জ্যগুলো প্রায়শই দরিয়ানগর থেকে শুরু করে সোনাদিয়া ও মহেশখালী সমুদ্রকূলে আটকা পড়ছে। সূর্যের অতি বেগুনি রশ্নি এসব প্লাস্টিককে ভেঙে মাইক্রোপ্লাস্টিকে পরিণত করে।
অনিতিবিলম্বে এসব বর্জ্য অপসারণ না হলে সৃষ্ট মাইক্রোপ্লাস্টিকের কারণে সমুদ্রের জীব বৈচিত্র্য হুমকির মুখে পড়বে। সেই সাথে এটি ভবিষ্যতে মানুষের জন্য স্বাস্থ্য ঝুঁকির কারণ হয়ে উঠবে।
আরও পড়ুন : কোম্পানীগঞ্জে আগুনে পুড়ল ১০ দোকান
সমুদ্রবিজ্ঞানী বলেন, বর্জ্য ভেসে আসার কারণ আরও বিশদভাবে জানার জন্য বে অব বেঙ্গলের সিজনাল এডি ফরমেশন (পানির ঘূর্ণন), বায়ুপ্রবাহের গতি ও দিক এবং কক্সবাজার কোস্টাল এলাকার বটম ট্রপগ্রাফির ওপর গবেষণা দরকার।
শুক্রবার সিনিয়র বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা তরিকুল ইসলামের নেতৃত্বে সমুদ্র গবেষণা ইনস্টিটিউটের বিজ্ঞানীরা এসব বর্জ্যের উৎস জানতে নমুনা সংগ্রহ করেন।
আরও পড়ুন : নরসিংদীতে সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত ২
এর আগে বৃহস্পতিবার (৩০ মার্চ) বিকেলে সৈকতে ২ টি ইরাবতী ডলফিন ও বুধবার (২৯ মার্চ) বিকেলে সমুদ্র সৈকতে হাজার হাজার মৃত জেলিফিশ ভেসে আসে।
সান নিউজ/এনজে