নিজস্ব প্রতিনিধি, মুন্সীগঞ্জ: ঘূর্ণিঝড় জাওয়াদের কারণে টানা ৩ দিনের বৃষ্টিপাতে মুন্সীগঞ্জে ১৭ হাজার হেক্টর আলুর বীজ পচে যাওয়ার আশঙ্কা দেখা দিয়েছে। গত শনিবার রাত থেকে টানা বর্ষণে রোপিত আলু ক্ষেতে পানি জমে যাওয়ায় জেলার কৃষক ও কৃষি কর্মকর্তারা এ ক্ষয়ক্ষতির আশঙ্কা করছেন।
অগ্রহায়ণের মাঝামাঝি সময় থেকে এ জেলার বিভিন্ন উপজেলায় আলু রোপণ শুরু হয়েছে। এ বছর জেলায় আলু রোপণের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ হয় ৩৭ হাজার ৯০০ হেক্টর জমিতে।
জেলায় গেল শনিবার দুপুর পর্যন্ত জেলায় ১৭ হাজারের বেশি জমিতে আলু বীজ রোপণ করা হয়। যেসকল ক্ষেতে আলুর চারা গজিয়েছে সেটির খুব ক্ষতি হবে না বলে কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের অভিমত। অর্থাৎ ১০ থেকে ১৫ দিন আগে লাগানো আলু পচবেনা। কিন্তু ৫ থেকে ৮ দিন ধরে যেসব ক্ষেতে আলু লাগানো বা রোপিত হয়েছে, সে গুলোর পচে যাওয়ার আশঙ্কা রয়েছে।
এদিকে, কৃষক দাবী করছেন এবার আলু বীজের দাম একটু কম হলেও, সারের দাম অনেক বেশি ছিলো। তাদের বেশি দাম দিয়ে সার কিনতে হয়েছে। বৃষ্টি কমলে নতুন করে আলু চাষ করতে তাদের আবার অর্থের দরকার। তারা সরকারি সহায়তা দাবী করছেন।
সদরের চরকেওয়ার ইউনিয়নের কৃষক মনসুর মাদবর (৩৫) বলেন, আমি গত ১ সপ্তাহে ১২৬ শতাংশ জমিতে ডায়মন্ড আলু আবাদ করেছি। বৃষ্টিতে আমার আলু খেতে পানি জমে গেছে। আমার এ জমিতে আলু আবাদে প্রায় দেড় লাখ টাকা খরচ হয়েছে। গেল বছর আলুতে লাভও হয়নি। লাভের আশায় এবারও আলু আবাদ করি। আমরা সরকারি সহায়তা চাই।
গজারিয়া উপজেলার কৃষক জসিম প্রধান (৪০) বলেন, গত ১ সপ্তাহে দুইটি জমিতে আলু বীজ রোপণ করেছি। এখন কড়ি গজানোর সময় কিন্তু বৃষ্টিতে জমিতে পানি জমে গেছে। জমি চকের মাঝখানে থাকায় পানি সরাতে পারছি না। আল্লাহ উপর ভরসা ছাড়া কিছুই করার নেই। এমনিতেই গত মৌসুমে আলু দাম পাওয়া যায়নি।
গজারিয়া উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা তৌফিক আহমেদ নুর জানান, উপজেলায় এ মৌসুমে ২ হাজার ৪৬৫ হেক্টর আলু আবাদের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়। এখন পর্যন্ত ১৪ শত ১০ হেক্টর জমিতে আলু বীজ রোপণ করা হয়েছে। পানি জমলে আলু বীজ নষ্ট হয়ে যাবে। এ উপজেলাটি নদী বেষ্টিত হওয়ায় কিছু আলু জমিতে জোয়ারের পানি উঠার খবর পাওয়া গেছে। উর্ধতন কর্তৃপক্ষের নির্দেশনা অনুযায়ী ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক মো. খোরশেদ আলম বলেন, এ আলু মৌসুমে জেলায় ৩৭ হাজার ৯০০ হেক্টর জমিতে আলু বীজ রোপণের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়। বৃষ্টির আগ পর্যন্ত জেলায় ১৭ হাজার হেক্টর জমিতে আলু রোপণ সম্পন্ন হয়েছে। রোপিত আলু বীজের ১৭ হাজার হেক্টর জমির আলুই বিনষ্ট হওয়ার আশঙ্কা। এর মধ্যে বৃষ্টির জন্য ৫ হাজার হেক্টর আলু একেবারেই পচে যাওয়ার আশঙ্কা। বৃষ্টি থামলে ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ সঠিক ভাবে নিরূপণ করা যাবে।
সান নিউজ/এন/এফএইচপি