নিজস্ব প্রতিনিধি, গোপালগঞ্জ : সারা দেশ যখন বিজয়ের আনন্দে উদ্বেলিত ও আত্মহারা, সে সময়েও গোপালগঞ্জের কাশিয়ানী উপজেলার ভাটিয়াপাড়ায় পাক হানাদার বাহিনী যুদ্ধ করে যাচ্ছিল।
শনিবার (১৯ ডিসেম্বর ) গোপালগঞ্জের কাশিয়ানীর ভাটিয়াপাড়া শত্রু মুক্ত হয়। এই দিন পাকবাহিনীর দখলে থাকা কাশিয়ানী উপজেলার ভাটিয়াপাড়া ওয়্যারলেস ষ্টেশনের (মিনি ক্যান্টনমেন্টের)পতন ঘটে। এই পতনের মধ্য দিয়ে হানাদার মুক্ত হয় কাশিয়ানীসহ পুরো গোপালগঞ্জ অঞ্চল।
দিনটি পালন উপলক্ষে শনিবার সকাল ৯টায় ভাটিয়াপাড়া শহীদ স্মৃতিস্তম্ভে উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা জানানো হয়েছে।পরে বেলা ১১টায় ভাটিয়াপাড়া ক্লাব মাঠে অনুষ্ঠিত হয় আলোচনা সভা।
সভায় প্রধান অতিথি ছিলেন গোপালগঞ্জের দায়িত্বপ্রাপ্ত মহিলা এমপি নার্গিস রহমান। উপজেলা নির্বাহী অফিসার রথিন্দ্রনাথ রায়ের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সভায় অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য রাখেন, কাশিয়ানী থানার ওসি মোঃ আজিজুর রহমান, উপজেলা আওয়ামী লীগ সভাপতি ও মুক্তিযোদ্ধা মোক্তার হোসেন, জেলা মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডের সাবেক সভাপতি বদরুদ্দোজা বদর, মুক্তিযোদ্ধা ইদ্রিস আলী মিয়া প্রমুখ।
অনুষ্ঠানে কাশিয়ানী অঞ্চলের মুক্তিযোদ্ধা ও উপজেলা প্রশাসনের কর্মকর্তাগণ উপস্থিত ছিলেন। প্রতিবছর এই দিনটি যথাযোগ্য মর্যাদায় পালিত হলেও এ বছর করোনার কারণে কর্মসূচী সীমিত করা হয়েছে।
উল্লেখ্য, ১৯৭১ সালের ১৯ ডিসেম্বর খুব ভোরে নড়াইল জেলার দিক থেকে ৮ নম্বর সেক্টরের কমান্ডার মেজর মঞ্জুর, নড়াইল জোনের মুক্তিবাহিনীর কমান্ডার ক্যাপ্টেন হুদা, লেঃ কর্ণেল জোয়ান, কামাল সিদ্দিকী, গোপালগঞ্জ ও ফরিদপুরের দিক থেকে ক্যাপ্টেন ইসমত কাদির গামা ও বাবুলের নেতৃত্বে মুক্তিবাহিনীর কমান্ডারগণ সম্মিলিতভাবে ভাটিয়াপাড়ার মিনি ক্যান্টনমেন্টে আক্রমন চালায়।
মুক্তিযোদ্ধাদের সর্বাত্মক এ হামলা ও বীরোচিত সাহসী যুদ্ধে অবশেষে দুপুরের দিকে মুক্তিবাহিনী ও মিত্রবাহিনীর যৌথ কমান্ডারের কাছে ৬৫ জন পাক সেনা ও শতাধিক রাজাকার আত্মসর্মপণ করে। দেশ স্বাধীনের তিন দিন পর হানাদার মুক্ত হয় কাশিয়ানীর ভাটিয়াপাড়াসহ সমগ্র গোপালগঞ্জ অঞ্চল।
সান নিউজ/বিকে/এনকে