ইমরান আল মাহমুদ, উখিয়া (কক্সবাজর): ক্যাম্প ছেড়ে দেশের বিভিন্ন প্রান্তে ছড়িয়ে পড়ছে শরণার্থী হিসেবে আশ্রিত রোহিঙ্গারা। বাস্তুচ্যুত হয়ে নিপীড়নের মুখে বাংলাদেশে পালিয়ে আশ্রিত রোহিঙ্গাদের বিশাল একটি অংশ আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর চোখ ফাঁকি দিয়ে প্রতিনিয়ত ক্যাম্প ছেড়ে বিভিন্ন জায়গায় চলে যাচ্ছে। যা ভবিষ্যতের অশনি সংকেত হিসেবে রূপ নিবে বলে আশঙ্কা স্থানীয়দের।
আরও পড়ুন: অভিনেত্রী সবার নামের শেষে যোগ হয় না
সম্প্রতি রোহিঙ্গাদের ক্যাম্প থেকে পালিয়ে বিভিন্ন স্থানে চলে যাওয়ার প্রাক্কালে দুইশত রোহিঙ্গা শরণার্থী আটক করে ট্রানজিট ক্যাম্পে প্রেরণ করেছে এবং মানবপাচারের সাথে জড়িত ৬ জনকে গ্রেফতার করে উখিয়া থানা পুলিশ।
তবে এসব রোহিঙ্গাদের নানা প্রলোভন দেখিয়ে ফাঁদে ফেলে পাচার করছে বলে জানা যায়। এসব চক্রের সদস্যদেরও গ্রেফতার করছে পুলিশ। গত ৪ এপ্রিল উখিয়ার বিভিন্ন জায়গায় অভিযান চালিয়ে ১৩৬জন রোহিঙ্গা আটক করে ট্রানজিট ক্যাম্পে প্রেরণ করেছে উখিয়া থানা পুলিশ।
একইদিন রাতে মানবপাচারের কাজে জড়িত ছয় সদস্যকে আটক করে ৪৮ রোহিঙ্গা নারী পুরুষ উদ্ধার করে পুলিশ। গতকাল মঙ্গলবার (৫ এপ্রিল) অভিযান চালিয়ে ৪০জন রোহিঙ্গাকে আটক করে সকল প্রক্রিয়া সম্পন্ন করে ট্রানজিট ক্যাম্পে প্রেরণ করে পুলিশ। বিষয়টি নিশ্চিত করে উখিয়া থানার অফিসার ইনচার্জ আহাম্মদ সনজুর মোর্শেদ।
আরও পড়ুন: দুই নারীসহ আশিষ রায় চৌধুরী গ্রেফতার
এদিকে, কক্সবাজারের উখিয়া ও টেকনাফের ৩৪টি রোহিঙ্গা শিবিরে ১২ লাখেরও বেশি রোহিঙ্গা শরণার্থী হিসেবে আশ্রয় নিয়েছে। ২০১৭ সালে রোহিঙ্গা ঢলের পর থেকে তাদের সেবায় দেশি-বিদেশি দেড় শতাধিক সংস্থা কাজ করে আসছে।
সকল সুযোগ সুবিধার পরও কেনো রোহিঙ্গারা ক্যাম্প ছেড়ে পালিয়ে বিভিন্ন জায়গায় চলে যাচ্ছে সে প্রশ্নে রোহিঙ্গারা বলেন, আমরা ক্যাম্পে কোনো উপার্জন করতে পারি না। বিভিন্ন এনজিওর দেওয়া মালামাল বাইরে বিক্রি করেও অতিরিক্ত কিছু খেতে চাইলে পারি না অর্থের অভাবে। তাই কাজের উদ্দেশ্যে বিভিন্ন জায়গায় যায়। সেখানে আত্মীয়-স্বজনদের বাসায় থাকি। পরে দুই তিনমাস পর আবারও ক্যাম্পে ফিরে আসি।
আরও পড়ুন: সৌদি আরবে ৩ বাংলাদেশি নিহত
ক্যাম্পে নিরাপত্তা জোরদারের পরও রোহিঙ্গাদের অবাধ বিচরণের বিষয়ে জানতে চাইলে ৮ আর্মড পুলিশ ব্যাটালিয়নের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মো. কামরান হোসেন জানান, রোহিঙ্গাদের অবাধ চলাফেরা রোধে ৮ এপিবিএন বিভিন্ন পদক্ষেপ গ্রহণ করে শৃঙ্খলা রক্ষায় কঠোর নজরদারি অব্যাহত রেখেছে। যার মধ্যে চেকপোস্ট জোরদারকরণ, কাঁটাতার মেরামত করণের জন্য সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ বরাবর চিঠি প্রেরণ, এনজিও এবং খাদ্য-সামগ্রী বিতরণের সকল কার্যক্রম কাটাতারের ভেতর সম্পন্ন করণের জন্য প্রস্তাব প্রেরণ, কাঁটাতারের বাইরে এপিবিএন’র হাতে আটক রোহিঙ্গাদের নিয়মিত মোবাইল কোর্টের মধ্যমে শাস্তি প্রদাণের ব্যবস্থা করাসহ বিভিন্ন প্রস্তাব পাঠানো হয়েছে বলে জানান তিনি।
সান নিউজ/এমকেএইচ