জাতীয়
করোনাভাইরাস

ব্যবসায়ীর অনৈতিক ব্যবসা, মানুষ বাঁচাতে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা

নিজস্ব প্রতিবেদক:

করোনাভাইরাসের আতঙ্ক চারদিক। প্রানঘাতী এই ভাইরাসটি থেকে দূরে থাকতে মানুষ নিজ উদ্যোগে যে যেভাবে পারছেন সতর্কতামূলক ব্যবস্থা গ্রহন করছেন। ফেইস মাস্ক, স্যানিটাইজার, গ্লাভসসহ নানা ধরণের উপকরণ রাখতে চাইছেন হাতের কাছে। সেই সুযোগে এরইমধ্যে দেশে শুরু হয়েছে মজুতদারি। শুধু বাংলাদেশেই নয়, সারাবিশ্বেই দেখা দিয়েছে মাস্কসহ প্রয়োজনীয় অন্যান্য উপকরণের সংকট।

আর তাই বিষয়টি ভাবিয়ে তুলেছে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ডাব্লিউএইচও)’কেও। করোনাভাইরাসে আক্রান্তের সংখ্যা যে গতিতে বাড়ছে, তাতে বিশ্ব ফেইস মাস্ক, গ্লাভস আর প্রোটেকটিভ গাউনের মতো সুরক্ষা উপকরণের বড় ধরনের সঙ্কটের দিকে যাচ্ছে বলে সতর্ক করেছেন বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার (ডব্লিউএইচও) মহাপরিচালক তেদ্রোস আধানম গেব্রিয়েসাস।

শুক্রবার জেনেভায় সংস্থার নির্বাহী পর্ষদের সভায় তিনি জানান, ডব্লিউএইচও বিশ্বের প্রতিটি প্রান্তে টেস্টিং কিটস, মাস্ক, গ্লাভস, রেসপিরেটর আর গাউন পাঠাচ্ছে।

কিন্তু বিশ্ব এসব ব্যক্তিগত সুরক্ষা উপকরণের দীর্ঘমেয়াদী সঙ্কটে পড়তে যাচ্ছে বলেও শঙ্কা প্রকাশ করেন তিনি।

ডব্লিউএইচও মহা মহাপরিচালক জানান, সরবরাহ ব্যবস্থায় কোথায় কোথায় সমস্যা তৈরি হতে পারে, সে জায়গাগুলো চিহ্নিত করে সমাধান বের করার পাশাপাশি অঞ্চলভেদে এসব উপকরণের সুসম সরবরাহ নিশ্চিত করার চেষ্টা করবেন তিনি।

গেব্রিয়েসাস বলেন, “গত দুই দিনে চীনে নতুন রোগীর সংখ্যা কিছু কমেছে। এটা ভালো লক্ষণ। তবে আমি সতর্ক করে বলতে চাই, এ সংখ্যা আবার বাড়তে পারে।”

প্রাণঘাতী এ ভাইরাস দ্রুত ছড়িয়ে পড়তে থাকায় গত ৩১ জানুয়ারি বৈশ্বিক সতর্কতা জারি করে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা। বিভিন্ন দেশ তাদের নাগরিকদের চীন থেকে সরিয়ে নিয়ে কোয়ারেন্টিন করে রাখে। তবে পরিস্থিতি এখনও ‘মহামারী’ ঘোষণার পর্যায়ে যায়নি বলে ডব্লিউএইচও।

এদিকে বাংলাদেশে ফেইস মাস্কের দাম কয়েক গুণ বেড়ে যাওয়ার প্রেক্ষাপটে বিশেষজ্ঞরা বলছেন সবার মাস্ক ব্যবহারের প্রয়োজন নেই, শুধু চীনফেরতদের কেউ অসুস্থ হলে তিনি ও তার সেবাদাতারা তা ব্যবহার করবেন।

বাংলাদেশে অবস্থানরত চীনা নাগরিক এবং উহান থেকে ফেরত আসা বাংলাদেশিদের পরীক্ষা করে ভাইরাস সংক্রমণ ধরা না পড়লেও গত বছর ডেঙ্গুর ঝড় পেরিয়ে আসা বাংলাদেশিদের মধ্যে এই ভাইরাসও আতঙ্ক ছড়িয়েছে।

এখন অনেকেই মাস্ক পরে রাস্তায় বের হচ্ছেন। বাংলাদেশে অবস্থানরত চীনা নাগরিকরাও প্রচুর মাস্ক কেনায় বাজারে চাহিদা বেড়ে গেছে অনেক। তাই দামও বেড়েছে কয়েক গুন।
ব্যবসায়ীরা বলছেন, ৫০টি মাস্কের যে বক্স আগে তারা ৬০ টাকা বিক্রি করতেন এখন সেটা বিক্রি হচ্ছে ৩০০ থেকে ৫০০ টাকায়।
চাহিদা বেড়ে যাওয়া, অতি লাভের আশায় মজুদ এবং চীনা নাগরিকসহ অনেকের বেশি পরিমাণে মাস্ক কেনায় এবং অনেকের মজুদের কারণে অস্বাভাবিকভাবে বাড়ছে দাম।
মোহাম্মদপুরে এক ওষুধ ব্যবসায়ী বলেন, করোনাভাইরাস ছড়িয়ে পড়তে পারে এমন আশঙ্কায় অনেকে মাস্ক সংগ্রহ করে রাখছেন। এ কারণে চাহিদা চার-পাঁচ গুণ বেড়েছে।

বাংলাদেশে বেশিরভাগ মাস্কের উৎস চীন। কিন্তু এখন উল্টো চীনে পাঠাতে চীনা নাগরিকসহ অনেকে বাজার থেকে প্রচুর মাস্ক কিনেছেন। অনেক বাংলাদেশি, যারা চীনে কাজ করেন তারাও যে যতোটা পারছেন মাস্ক সংগ্রহ করছেন। এতে করে বাজারে তৈরি হয়েছে এক ধরণের অস্থিরতা। একই সঙ্গে সত্যিই যদি কখনও দেশে প্রয়োজনটা গুরুতর হয়ে ওঠে তখন দেখা দেবে ভয়াবহ ধরণের সংকট। তাই বিষয়টির প্রতি সতর্ক দৃষ্টি রাখার চেষ্টা করছেন সংশ্লিষ্টরা।

সরকারের রোগতত্ত্ব, রোগ নিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা প্রতিষ্ঠান-আইইডিসিআরের পরিচালক অধ্যাপক ডা. মীরজাদী সেব্রিনা ফ্লোরা রীতিমতো সংবাদ সন্মেলন করে বলেছেন, অনেকের মধ্যে কনফিউশন আছে মাস্ক ব্যবহার করবে কি করবে না। চীন থেকে আসা সন্দেহজনক ব্যক্তি যার জ্বর, কাশি, গলাব্যথার মতো উপসর্গ রয়েছে সে মাস্ক ব্যবহার করবে। এছাড়া আক্রান্ত ব্যক্তির সেবাদাতা মাস্ক ব্যবহার করতে পারেন। তবে সবার ক্ষেত্রে এ মুহুর্তে প্রয়োজন নেই।

স্বাস্থ্যমন্ত্রী ডা. জাহিদ মালিকও সাংবাদিকদের কাছে এই কথা জানিয়েছেন গত বৃহস্পতিবার।

এদিকে বিদেশে ’রপ্তানির জন্য’ মাস্ক বিক্রি বন্ধ করতে জরুরি নোটিস দিয়েছে বাংলাদেশ মেডিকেল অ্যাসোসিয়েশন (বিএমএ) ভবন দোকান মালিক সমিতি। ফেইস মাস্ক কোনো অবস্থায় মজুদ এবং বেশি মূল্যে বিক্রয় করা যাবে না বলে নির্দেশ দিয়েছে সমিতি।

বিদেশে রপ্তানির জন্য কোন অবস্থাতেই ফেইস মাস্ক বিক্রি না করে দেশি ক্রেতাদের কাছে অগ্রাধিকার ভিত্তিতে বিক্রয়ের জন্য অনুরোধ জানানো হয়েছে ওই নোটিশে।

Copyright © Sunnews24x7
সবচেয়ে
পঠিত
সাম্প্রতিক

তরুণ প্রজন্ম কোন নির্বাচনী ভাগ বাটোয়ারায় বিশ্বাস করে না

জাতীয় নাগরিক পার্টির আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম বলেছেন, "আমরা কোন দলের...

২১ বছর ধরে শিশুশিক্ষায় তালপাতার পাঠশালা

শিশুশিক্ষার হাতে খড়ির প্রচলন হিসেবে একটা সময় ছিলো তালপাতার প্রচলন। আর লেখনী হ...

সুন্দরবনের উপকূলে বিলুপ্তির পথে মাটির মটকি

গভীর বঙ্গোপসাগরে সৃষ্ট নিম্নচাপের কারণে দেশের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের বিশ্ব ঐতিহ...

সুন্দরবনের উপকূলে ইলিশের সুবাস

দেশের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের বিশ্বের সর্ববৃহৎ ম্যানগ্রোভ বনাঞ্চল মৎস্য ভান্ডার...

নিখোঁজের দুইদিন পর খালে মিলল প্রতিবন্ধী শিশুর মরদেহ

সোমবার (১৪ জুলাই) সকাল ১০টার দিকে উপজেলার বদলকোট ইউনিয়নের মেঘা খাল থেকে ওই শি...

হেলমেট-মাক্স ঢেকে নিষিদ্ধ আওয়ামিলীগের ঝটিকা মিছিল

মানিকগঞ্জে হেলমেট-মাস্কে মুখ ঢেকে আবারো প্রকাশ্যে ঝটিকা মিছিল করেছে কার্যক্রম...

গুপ্ত সংগঠন কর্তৃক পরিবেশ বিনষ্ঠের প্রতিবাদে বিক্ষোভ

গোপন তৎপরতায় দীর্ঘদিন ধরে অভ্যস্ত গুপ্ত সংগঠন কর্তৃক মব সৃষ্টির অপচেষ্টা, শিক...

বাঁশ ও বেত শিল্পে ধ্বস

দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের বিশ্বের সর্ববৃহৎ ম্যানগ্রোভ বনাঞ্চল মৎস্যভান্ডার নামে খ্...

তপু ও ধলা পাহাড়ের হৃদয়স্পর্শী সম্পর্ক

বাগেরহাটের ঐতিহাসিক খানজাহান আলী (র:) মাজারের দিঘিতে থাকা কুমিরের সম্পর্কে। ম...

লক্ষ্মীপুরে আরএসডি'র কর্মকর্তাদের জাগ্রত করতে প্রতীকী জানাযা

লক্ষ্মীপুরে খানাখন্দভরা সড়কগুলো মেরামতের উদ্যােগ না নেওয়া এবং সড়ক ও জনপদের ঘু...

লাইফস্টাইল
বিনোদন
sunnews24x7 advertisement
খেলা