বাংলাদেশে দুর্নীতির অভিযোগে মামলা ও তদন্তের মুখে থাকা ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ভাগ্নি ও ব্রিটিশ এমপি টিউলিপ সিদ্দিক শেষ পর্যন্ত লন্ডনে অন্তর্বর্তী সরকারপ্রধান অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসের সাক্ষাৎ পাননি।
লন্ডন সফররত ড. মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে দেখা না হওয়ায় ‘হতাশা’ প্রকাশ করেছেন যুক্তরাজ্যের লেবার পার্টির সাবেক প্রতিমন্ত্রী টিউলিপ। বৃহস্পতিবার এক বিবৃতিতে তিনি বলেন, ‘লন্ডন সফরকালে অধ্যাপক ইউনূস সাক্ষাৎ করতে অস্বীকৃতি জানানোয় আমি হতাশ।’
গত ৪ জুন ইউনূসকে চিঠি দিয়ে লন্ডন সফরের সময় হাউস অব কমন্সে মধ্যাহ্নভোজ বা চা পানের আমন্ত্রণ জানিয়েছিলেন টিউলিপ। তার দাবি, বাংলাদেশে তার বিরুদ্ধে দুর্নীতির যে তদন্ত চলছে, সেই ‘ভুল বোঝাবুঝি’ দূর করতেই এই সাক্ষাৎ চেয়েছিলেন তিনি।
তবে ইউনূসের দপ্তর থেকে এ বিষয়ে কোনো আনুষ্ঠানিক বক্তব্য না এলেও বৃহস্পতিবার ইউনূস হাউস অব কমন্সে স্পিকার লিন্ডসে হোয়েলের সঙ্গে সাক্ষাৎ করলেও টিউলিপের আমন্ত্রণ গ্রহণ করেননি।
এর আগে ফিন্যান্সিয়াল টাইমস-কে ড. ইউনূস বলেছিলেন, টিউলিপের সঙ্গে দেখা করার কোনো প্রয়োজন নেই। তিনি বলেন, ‘এটা একেবারেই আইনি প্রক্রিয়া। এতে আমার ব্যক্তিগতভাবে যুক্ত হওয়ার কিছু নেই।’
ইউনূস অভিযোগ করেন, শেখ হাসিনা দীর্ঘ ১৬ বছরের শাসনে রাষ্ট্রক্ষমতাকে আত্মীয়-স্বজন ও ঘনিষ্ঠজনদের লুটপাটের সুযোগে রূপান্তরিত করেছিলেন। তার ভাষায়, ‘এটা ছিল বড় ধরনের এক লুটপাট প্রক্রিয়া।’
ইউনূসের সাক্ষাৎ না পেয়ে বৃহস্পতিবার আবারো সব অভিযোগ অস্বীকার করে টিউলিপ বলেন, ‘আমি রাজনৈতিক প্রতিহিংসার শিকার। প্রমাণ ছাড়া মনগড়া অভিযোগে সংবাদমাধ্যমে আমার বিরুদ্ধে অপপ্রচার চালানো হচ্ছে।’
তিনি দাবি করেন, ‘যদি এটি সত্যিই গুরুতর আইনি বিষয় হতো, তাহলে তারা আমার আইনজীবীদের সঙ্গে যোগাযোগ করত। অথচ তারা এমন এক ঠিকানায় নোটিশ পাঠিয়েছে যেখানে আমি কোনো দিন থাকিনি।’
এ নিয়ে ইউনূসের প্রতি নতুন করে অনুরোধ জানিয়ে টিউলিপ বলেন, ‘আমি আশা করি তিনি আন্তরিক হবেন এবং মিডিয়ায় আমার বিরুদ্ধে অপপ্রচার না চালিয়ে আদালতের উপর বিশ্বাস রাখবেন।’
উল্লেখ্য, শেখ হাসিনার সরকারের পতনের পর নোবেলজয়ী মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বে অন্তর্বর্তী সরকার দায়িত্ব নেয়। এর পরপরই হাসিনা পরিবারের সদস্য ও ঘনিষ্ঠজনদের বিরুদ্ধে দুর্নীতির তদন্ত শুরু হয়।
দুর্নীতির অভিযোগে সমালোচনার মুখে এ বছরের জানুয়ারিতে প্রতিমন্ত্রীর পদ ছাড়তে বাধ্য হন লেবার পার্টির প্রভাবশালী এমপি টিউলিপ সিদ্দিক। আওয়ামী লীগের ঘনিষ্ঠ ব্যবসায়ীদের কাছ থেকে ফ্ল্যাট উপহার নেওয়ার অভিযোগও আছে তার বিরুদ্ধে। তবে তিনি সব অভিযোগ অস্বীকার করে আসছেন।
সাননিউজ/ইউকে