বদরুল ইসলাম বিপ্লব, ঠাকুরগাঁও: দেশের উত্তরের জেলা ঠাকুরগাঁও। জেলার ৫ টি উপজেলার মধ্যে সদর উপজেলা ব্যতীত ৪ টি উপজেলায় সীমান্ত ঘেঁষা। পাশ্ববর্তী দেশের সর্বোত্তরের জেলা পঞ্চগড়। হিমালয়ের পাশাপাশি ও সীমান্ত ঘেঁষা হওয়ায় এ জেলায় শীতের প্রকোপ প্রতি বছরই বেশি থাকে।
আরও পড়ুন: আবদুস সামাদ’র প্রয়াণ
ঠাকুরগাঁও জেলা হিমালয়ের পাদদেশের জেলা হওয়ায় সবার আগে এখানে শীত আসে এবং বিদায় নেয় সবার শেষে। তবে শীতের জেলা হলেও এ জেলার মানুষ জানতে পারেন না এখানে কোন দিন কত ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা।
এতে করে ক্ষতির মুখে পড়ছেন কৃষক ও পেশাজীবি মানুষেরা। শীতের দাপটে এ জেলার মানুষ অভ্যস্ত হলেও এবারে তীব্র শীতে বিপর্যস্ত জনজীবন।
চলতি বছরের শুরুতে শীতের প্রকোপে পরেছেন এ জেলার মানুষ। সারাদিন ঘন কুয়াশায় আচ্ছাদিত চারপাশ আর হিমালয়ের হিম শীতল বাতাসে স্থবির হয়ে পরেছে এখানকার জনজীবন।
আরও পড়ুন: আগামী কয়েকদিনে বৃষ্টির সম্ভাবনা নেই
রংপুর আবহাওয়া অফিসের তথ্যমতে, গত ২৮ জানুয়ারি সকাল ৬ টায় জেলার সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ছিল ৫.৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস। গত ৫ মৌসুমের সর্বনিম্ন তাপমাত্রা এটি। অথচ আবহাওয়া অফিস না থাকায় সঠিক তাপমাত্রার তথ্য বিভ্রান্তিতে পড়ছেন জেলার মানুষ।
এছাড়া গণমাধ্যম কর্মীরা সঠিক তাপমাত্রার খবর প্রচার করতে ব্যর্থ হচ্ছেন। সেই সাথে ক্ষতিগ্রস্থ হচ্ছেন কৃষকেরা। অনেকের আলু ক্ষেতে পচন ও বোরো ধানের বীজতলা নষ্ট হয়ে যায়।
আরও পড়ুন: মাদকবিরোধী অভিযানে গ্রেফতার ২৩
সারা দেশে ১০ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রার নিচে হলে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকার কথা থাকলেও সঠিক তথ্যের অভাবে বন্ধ হয় না প্রতিষ্ঠানগুলো। অথচ পার্শবর্তী পঞ্চগড় ও দিনাজপুর জেলার স্কুল বন্ধ থাকছে। এতে করে তীব্র শীতেও শিক্ষার্থীদের স্কুলে যাতায়াত করতে হচ্ছে।
এ অবস্থায় অনেক শিক্ষক শিক্ষার্থীকে স্কুল চত্বরে বা স্কুল কক্ষে আগুন জ্বালিয়ে শীত নিবারণ করতে দেখা গেছে।
ঠাকুরগাঁও প্রেসক্লাবের সাবেক সভাপতি আবু তোরাব মানিক বলেন, শীতের সময় তাপমাত্রা নিয়ে প্রতিনিয়ত সংবাদকর্মীদের আপডেট দিতে হয়। বেশিরভাগ সময় পার্শ্ববর্তী জেলা আবহাওয়া অফিস থেকে তথ্য নিতে হয়।
আরও পড়ুন: সাড়ে ৩ কেজি স্বর্ণসহ আটক ১
কখনো মুঠোফোনে বা জেলা কৃষি বিভাগের নিকট তথ্য জেনে তথ্য দিতে হয়। এতে আমরা সঠিক তথ্য দিতে ব্যর্থ হচ্ছি।
ঠাকুরগাঁও জেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা আকতার হোসেন বলেন, নির্দেশনা অনুযায়ী তাপমাত্রা ১০ ডিগ্রি সেলসিয়াসের নিচে হলে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে পাঠদান বন্ধ রাখার কথা রয়েছে।
আবহাওয়া অফিস না থাকার কারণে এরকম সিদ্ধান্ত নেয়া কঠিন হয়ে পড়েছে। মুঠোফোনে একেক সময় একেক রকম তাপমাত্রা দেখা যায়।
আরও পড়ুন: হিলি বন্দরে আলুর দাম কমলো
জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অফিসের উপ-পরিচালক মো. সিরাজুল ইসলাম বলেন, এ জেলার অধিকাংশ মানুষ কৃষির সাথে সম্পৃক্ত। আবহাওয়া অফিস হলে আগ থেকে পূর্বাভাস জানা সম্ভব হবে। এতে কৃষকরা ফসলের ক্ষতির হাত থেকে রক্ষা পাবে।
ঠাকুরগাঁওয়ের জেলা প্রশাসক মাহবুবুর রহমান বলেন, জেলায় আবহাওয়া অফিস হলে ভালো হয়। আমরা বিষয়টি অধিদপ্তরকে অবহিত করব।
সান নিউজ/এনজে