নিজস্ব প্রতিবেদক: অধিকংশ দেশই অর্থ পাচারকারীদের তথ্য দেয় না বলে জানিয়েছেন দুর্নীতি দমন কমিশনের সচিব ড. মু. আনোয়ার হোসেন হাওলাদার।
তিনি বলেন, বিদেশে অর্থপাচারের অভিযোগ আছে এমন ব্যক্তিদের বিষয়ে তথ্য চেয়ে বিভিন্ন দেশের কাছে চিঠি দেয়া হলেও দেশগুলোর সঙ্গে এ সংক্রান্ত কোনো চুক্তি না থাকায় তারা তথ্য দিতে বাধ্য নয় বলেও মনে করেন তিনি।
সোমবার বিকালে দুদকের প্রধান কার্যালয়ে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে এসব কথা বলেন তিনি।
কানাডাসহ বিভিন্ন দেশে অর্থপাচারকারীদের নাম ঠিকানা ও তাদের বিরুদ্ধে কোনো পদক্ষেপ দেখাতে না পারায় দুর্নীতি দমন কমিশনের উপর হাইকোর্ট অসন্তোষ প্রকাশ করেছে। সেই সঙ্গে বিদেশে পলাতক ও পাচার হওয়া ব্যক্তিদের তালিকা প্রকাশ করতে বেশ কয়েকবার তলব করা হয়।
এ ব্যাপারে দুদক সচিব বলেন, এই ধরনের তথ্য দিতে দেশগুলোর সঙ্গে কোনো চুক্তি নেই। যে কারণে তারা আমাদেরকে তথ্য প্রদান করতে বধ্যা নয়। আমরা তাদের যেসব চিঠি পাঠিয়েছি তার অধিকাংশেরই কোনো জবাব পাওয়া যায়নি। তবে, যেসব দেশের আগ্রহ আছে তাদের কাছ থেকে মানিলন্ডারিংয়ের কিছু তথ্য পাওয়া যায়।
তিনি বলেন, আমাদেও দপ্তরে মানিলন্ডারিং ইস্যুতে বিভিন্ন অভিযোগ আসে। কিন্ত মানিলন্ডারিংয়ের সব অভিযোগই দুদকের তফসিলভুক্ত নয়। অভিযোগ সুনির্দিষ্ট থাকলেই দুদক আগ্রহ দেখাতে পারে, অন্যথায় আমরা অভিযোগ গ্রহণ করতে পারি না। মানি লন্ডারিংয়ের ক্ষেত্রে দুদকের সাজার হার শতভাগ বলে জানান সচিব।
অর্থপাচার রোধে বাংলাদেশে মানিলন্ডারিং প্রতিরোধ আইনটি করা হয় ২০১২ সালে। সর্বশেষ ২০১৫ সালে এই আইনটি পুনরায় সংশোধন করা হয়। এই আইনে স্পষ্টভাবে লেখা আছে আইন অনুযায়ী বৈধ বা অবৈধ উপায়ে অর্জিত অর্থ বা সম্পত্তি নিয়মবহির্ভূতভাবে বিদেশে পাচার মানিলন্ডারিং অপরাধ হিসেবে চিহ্নিত হবে।
মানিলন্ডারিং অপরাধের ক্ষেত্রে সর্বনিম্ন চার বছর ও সর্বোচ্চ ১২ বছর পর্যন্ত কারাদণ্ডের বিধান রয়েছে সংশোধিত আইনে। এছাড়া অতিরিক্ত হিসেবে অপরাধের সঙ্গে অবৈধ উপায়ে অর্জিত এই সম্পত্তি রাষ্ট্রের অনুকূলে বাজেয়াপ্ত করা ও সংশ্লিষ্ট সম্পত্তির দ্বিগুণ মূল্যের সমপরিমাণ বা ১০ লাখ টাকা অর্থদণ্ডও করার কথা বলা আছে।
বিশ্বের বিভিন্ন দেশে অর্থপাচার নিয়ে দেশি ও আন্তর্জাতিক বিভিন্ন প্রতিবেদন থেকে জানা গেছে, প্রতিবছর বাংলাদেশ থেকে হাজার হাজার কোটি টাকা পাচার হচ্ছে। বিগত দশ বছরেও এই পাচারের প্রবণতা বেড়েছে কয়েকগুণ। ওয়াশিংটনভিত্তিক গবেষণা প্রতিষ্ঠান গ্লোবাল ফাইন্যান্সিয়াল ইন্টিগ্রিটি (জিএফআই)।
জিএফআইয়ের সর্বশেষ প্রতিবেদনের তথ্য থেকে জানা যায়, বাংলাদেশ থেকে প্রতিবছর বছরে ৬৪ হাজার কোটি টাকা পাচার হয়ে যাচ্ছে।
সান নিউজ/আরআই