আন্তর্জাতিক

একই কাজকে দুইভাবে উপস্থাপন

সান নিউজ ডেস্ক: সাত দিন ধরে চলছে রাশিয়া-ইউক্রেনের যুদ্ধ। ইউক্রেনে রাশিয়ার সামরিক অভিযান নিয়ে তুলকালাম শুরু হয়েছে পশ্চিমা দেশগুলোতে। রুশ বাহিনীর আগ্রাসী আচরণের নিন্দায় সরব যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য, ইউরোপীয় ইউনিয়ন, কানাডার মতো দেশগুলো। সেসব দেশের মিডিয়াতে রীতিমতো ধুয়ে ফেলা হচ্ছে ভ্লাদিমির পুতিন ও তার বাহিনীকে। ভুক্তভোগী ইউক্রেনের প্রতি সমর্থন জানিয়ে রাশিয়ার ওপর নিষেধাজ্ঞার ঝড় বইয়ে দিচ্ছে পশ্চিমারা। অথচ এই দেশগুলোই ফিলিস্তিন, ইরাক, আফগানিস্তান, লিবিয়া যুদ্ধের ক্ষেত্রে চোখে যেন টিনের চশমা পরে থাকে।

আরও পড়ুন:পরমাণু বোমা দিয়ে হবে তৃতীয় বিশ্বযুদ্ধ

আজ ইউক্রেনের সাধারণ মানুষ রুশ আক্রমণ ঠেকাতে হাতে অস্ত্র তুলে নিলে তাদের বীর মুক্তিকামী যোদ্ধা বলছে পশ্চিমারা, অথচ ফিলিস্তিনের মানুষ হাতে গুলতি ওঠালেও তা তাদের কাছে সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড হয়ে যায়। ইউক্রেন যুদ্ধ যেন চোখে আঙুল দিয়ে দেখিয়ে দিচ্ছে, পশ্চিমারা কতটা হিপোক্রেট।

গত বছর আল-আকসা মসজিদে ইসরায়েলি সশস্ত্র পুলিশের তাণ্ডব, জেরুজালেমের শেখ জাররাহ এলাকায় ফিলিস্তিনিদের উচ্ছেদ করে অবৈধ ইহুদি বসতি স্থাপন ও গাজায় ইসরায়েলি বিমান হামলা ঘিরে পশ্চিমা মিডিয়ার খবর এবং এখন রাশিয়ার ইউক্রেন আক্রমণের খবরের শিরোনাম পড়লেই তাদের দ্বিমুখী নীতি পরিষ্কার হয়ে ওঠে।

বছরের পর বছর ধরে নিরীহ-নিরস্ত্র ফিলিস্তিনিদের ওপর ইসরায়েলিদের বর্বরোচিত আচরণের খবর পশ্চিমের প্রায় সব সংবাদমাধ্যমেই প্রচার হয়। তবে কিছুটা ভিন্নভাবে। তাদের প্রচার স্টাইলে আগ্রাসনবাদীর শক্তি প্রয়োগ অনেকটাই আড়াল করে রাখা হয়। ফিলিস্তিন-ইসরায়েল ইস্যুতে পশ্চিমা মিডিয়ার খবর ও নেতাদের কথাবার্তায় দখলদারি, গুলি করে হত্যা, গুলিবর্ষণ এবং বোমা হামলার মতো ঘটনাগুলোতে ক্ল্যাশ (সংঘর্ষ), কনফ্লিক্ট (সংঘাত) ও প্রোপার্টি ডিসপুট’র (সম্পত্তি বিরোধ) মতো শব্দ ব্যবহার করতে দেখা যায়। এ ধরনের প্যাসিভ ভয়েসর ব্যবহারের মধ্য দিয়ে সহিংসতার কারণ বা টার্গেট চেপে যাওয়া হয়।

আরও পড়ুন:রিজভীর বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা

কিন্তু এখন ইউক্রেন সংঘাতের ক্ষেত্রে তারা ঠিকই অ্যাগ্রেসন (আগ্রাসন), ইনভেশন (আক্রমণ), অ্যাটাক (হামলা), কিল (হত্যা), ইলিগ্যাল স্টেপ (অবৈধ পদক্ষেপ)-এর মতো শব্দ ব্যবহার করছে, যা ইসরায়েলের ক্ষেত্রেও হওয়ার কথা ছিল। মজার বিষয় হচ্ছে, এতদিন ধরে নিরীহ ফিলিস্তিনিদের হত্যা করা, তাদের জমি কেড়ে নেওয়া সেই ইসরায়েলই আজ রাশিয়ার কর্মকাণ্ডের নিন্দা জানাচ্ছে, তাদের শান্তি বজায় রাখতে বলছে।

অবশ্য ইউক্রেনীয় মিত্রদের জন্য ইসরায়েলের এই মন পোড়ার যথেষ্ট কারণও রয়েছে। গত বছর অবরুদ্ধ গাজা উপত্যকায় ইসরায়েলের বর্বরোচিত হামলার সময় ফিলিস্তিনি প্রতিরোধযোদ্ধাদের পাল্টা জবাবের সমালোচনা করে ইসরায়েলিয়েদের পক্ষ নিয়েছিলেন আজকের ইউক্রেনীয় প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি। ওই যুদ্ধে ইসরায়েলই ভিকটিম (ভুক্তভোগী) বলে দাবি করেছিলেন তিনি। অথচ সেই সময় টানা ১১ দিনের ইসরায়েলি হামলায় অন্তত ২৬০ ফিলিস্তিনি নিহত হন, যাদের মধ্যে ৬৭ জনই ছিল কোমলমতি শিশু। এগুলো জেলেনস্কির নজরে পড়েনি, হামলা ঠেকাতে হামাস যে রকেট ছুড়েছিল, পশ্চিমাদের মতো তিনিও শুধু সেটিই দেখেছেন।

আরও পড়ুন:জাতিসংঘে মহীসোপানের তথ্য পেশ

রুশ আক্রমণের মধ্যে ইউক্রেনীয়দের আরও একটি বিষয় সামনে আসছে, তা হলো বর্ণবাদী আচরণ। বিবিসি, আল-জাজিরাসহ বিভিন্ন মিডিয়ায় খবর এসেছে, যুদ্ধের কারণে দেশত্যাগে আগ্রহীদের বেছে বেছে সীমান্ত পার করাচ্ছে ইউক্রেন। কৃষ্ণাঙ্গদের ট্রেনে উঠতে দেওয়া হচ্ছে না বলে অভিযোগ উঠেছে। ভারতীয় শিক্ষার্থীদের গায়ে হাত তোলার ভিডিও পর্যন্ত সামনে এসেছে।

সাননিউজ/এমআরএস

Copyright © Sunnews24x7
সবচেয়ে
পঠিত
সাম্প্রতিক

উত্তরায় প্রাইভেটকারে অপহরণ; ভিডিও ভাইরালের পর গ্রেপ্তার ২

রাজধানীর উত্তরা এলাকায় চাঞ্চল্যকর অপহরণের ঘটনায় অপহরণে ব্যবহৃত একটি প্রাইভে...

আমাকে চেয়েছিলো যুদ্ধাপরাধী মামলার আসামী বানাতে: ডা. শফিকুর রহমান

বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর আমীর ডা. শফিকুর রহমান বলেছেন, গত সরকারের সময় তিনবার...

ভালুকায় সৌন্দর্য বাড়াতে ইউএনও’র ‘নিজ খরচে’ সবুজ বিপ্লব

ভালুকা উপজেলার পরিবেশ সংরক্ষণ ও নগর সৌন্দর্য বৃদ্ধিতে এক ব্যতিক্রমী উদ্যোগ নি...

কালীগঞ্জে ফিল্মিস্টাইলে যুবককে পিটিয়ে হত্যা

গাজীপুরের কালীগঞ্জে জমি সংক্রান্ত পূর্ব বিরোধের জে...

সড়কহীন ৩৪ কোটি টাকার সেতু

সেতু আছে কিন্তু সংযোগ সড়ক করা হয়নি এমন সেতু ফেনীতে...

লাইফস্টাইল
বিনোদন
sunnews24x7 advertisement
খেলা