নিজস্ব প্রতিবেদক : করোনা মহামারি মোকাবেলায় চিকিৎসার সঙ্গে সংশ্লিষ্ট সকল চিকিৎসক, নার্স ও অন্য স্বাস্থ্যকর্মীদের জন্য বিশেষ ভাতা প্রদানের উদ্যোগ নিয়েছে সরকার। শিগগিরই নির্দিষ্ট হারে এ ভাতা দেয়ার কার্যক্রম শুরু হচ্ছে বলে অর্থ বিভাগ ও স্বাস্থ্যসেবা বিভাগ সূত্রে জানা গেছে।
দেশে গত ৮ মার্চ প্রথম করোনা রোগী শনাক্ত হওয়ার পর থেকে আক্রান্তদের চিকিৎসায় পৃথক হাসপাতাল নির্ধারণ করা হয় । রোগীদের চিকিৎসার সঙ্গে যুক্ত চিকিৎসক, নার্স ও অন্য স্বাস্থ্যকর্মীদের থাকা-খাওয়ার জন্য আলাদা আবাসিক ব্যবস্থা গ্রহণ করেও এ ব্যবস্থা থেকে সরে আসে সরকার।
নির্ধারিত আবাসিক সুবিধা গ্রহণ না করলে দৈনিক বিশেষ ভাতা প্রদানের বিষয়টিতে প্রধানমন্ত্রীর অনুমোদন নিয়ে গত ২৯ জুলাই পরিপত্র জারি করে স্বাস্থ্যসেবা বিভাগ। কিন্তু এক্ষেত্রে তাড়াহুড়ো করতে গিয়ে অর্থ বিভাগের অনুমোদন না নেয়ায় স্বাস্থ্যকর্মীদের এ ভাতা প্রদান সম্ভব হচ্ছে না। তবে তাদের অনুকূলে অর্থ ছাড় করতে সম্প্রতি অর্থ বিভাগে ভূতাপেক্ষ অনুমোদনের জন্য প্রস্তাব পাঠিয়েছে স্বাস্থ্যসেবা বিভাগ।
স্বাস্থ্যসেবা বিভাগের ঊর্ধ্বতন এক কর্মকর্তা এ প্রসঙ্গে বলেন, করোনা রোগীদের চিকিৎসায় নিয়োজিত যেসব চিকিৎসক, নার্স ও অন্য স্বাস্থ্যকর্মীদের জন্য আলাদা থাকা-খাওয়ার ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়নি, তাদের সবাইকে নির্দিষ্ট হারে ভাতা প্রদান করা হবে। এক্ষেত্রে ঢাকা মহানগরে চিকিৎসকরা প্রতিদিন ভাতা হিসেবে পাবেন ২ হাজার টাকা, নার্সরা পাবেন ১ হাজার ২০০ টাকা ও অন্য স্বাস্থ্যকর্মীরা পাবেন ৮০০ টাকা করে।
এছাড়া ঢাকার বাইরে দেশের অন্যান্য এলাকায় চিকিৎসকরা পাবেন ১ হাজার ৮০০ টাকা, নার্সরা পাবেন ১ হাজার টাকা ও অন্য স্বাস্থ্যকর্মীদের জন্য ভাতা নির্দিষ্ট করা হয়েছে দৈনিক ৬৫০ টাকা।
তিনি বলেন, বিষয়টি অনুমোদনের জন্য আমরা অর্থ বিভাগে পাঠিয়েছি। যেহেতু এ বিষয়ে প্রধানমন্ত্রীর অনুমোদন নেয়া আছে, তাই আশা করছি শিগগিরই অর্থ বিভাগ এতে অনুমোদন দেবে। অর্থ বিভাগের অনুমোদন পেলে আমরা ভাতা প্রদান কার্যক্রম শুরু করব।
এদিকে গত ২৯ জুলাই জারি করা পরিপত্রে বলা হয়, করোনা রোগীদের চিকিৎসার সঙ্গে সম্পৃক্ত চিকিৎসক, নার্স ও অন্য স্বাস্থ্যকর্মীরা ১৫ দিনের বেশি দায়িত্ব পালন করবেন না। প্রতি মাসে ১৫ দিন দায়িত্ব পালন শেষে পরবর্তী ১৫ দিন তারা কোয়ারেন্টিন ছুটিতে থাকবেন।
চিকিৎসক ও স্বাস্থ্যকর্মীরা ১৫ দিন কর্মকালীন পৃথক অবস্থানের জন্য বিশেষ ভাতা অথবা খাবারসহ আবাসনের সুবিধা পাবেন। আবাসনের জন্য হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ আবাসিক স্থাপনা প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে যোগাযোগ করে আবাসিক সুবিধা গ্রহণে ইচ্ছুক স্বাস্থ্যকর্মীদের আবাসন ব্যবস্থা নিশ্চিত করবেন। সেজন্য প্রয়োজনীয় অর্থ আবাসিক স্থাপনাগুলোর কর্তৃপক্ষের বিল দাখিল সাপেক্ষে পরিশোধ করবেন।
চিকিৎসক, নার্স ও স্বাস্থ্যকর্মীদের যাতায়াতের জন্য আবশ্যিকভাবে (প্রাপ্যতা সাপেক্ষে) বিআরটিসির যানবাহন ব্যবহার করতে হবে। এক্ষেত্রে যানবাহন পরিশোধের জন্য বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন করপোরেশনের (বিআরটিসি) কাছ থেকে প্রাপ্ত বিলের ভিত্তিতে বরাদ্দকৃত অর্থ পরিশোধ করবে। যেখানে বিআরটিসির যানবাহন নেই, সেখানে জেলা প্রশাসকের মাধ্যমে রিকুইজিশনকৃত যানবাহন ভাড়ার ভিত্তিতে ব্যবহার করা যেতে পারে।
পরিপত্রে আরও বলা হয়, একজন চিকিৎসক, নার্স বা অন্যান্য স্বাস্থ্যকর্মী এক মাসে ১৫ দিনের বেশি এ ভাতা পাবেন না। ভাতা প্রাপ্তরা এ ভাতা বিশেষ ভাতা ভ্রমণ ও দৈনিক ভাতা আহরণের পদ্ধতিতে উত্তোলন করবেন। স্বাস্থ্য অধিদপ্তর ত্রৈমাসিক ভিত্তিতে দৈনিক ভাতার হিসাবে সরকারের কাছে বরাদ্দ দাবি করবে।
সান নিউজ/এসএ