ছবি ও প্রতিবেদন: বিভাষ দত্ত, ফরিদপুর থেকে:
করোনাকালে জাংলা বা মাচায় পুষ্টিকর ও জনপ্রিয় উচ্চমূল্যের সবজি কাকরোল চাষ করে সাড়া ফেলেছেন ফরিদপুরের চাষিরা। অন্য ফসলের তুলনায় অল্প খরচে কম পরিশ্রমে চাষ করা যায়, তাই অনেক কৃষি উদ্যোক্তা এ চাষে ঝুঁকেছেন।
বাজারে কাকরোলের ব্যাপক চাহিদা ও ভালো দাম পাওয়ায় হাসি ফুটেছে চাষিদের মুখে। আর এ চাষে বীজ, সার ও পরামর্শ দিয়ে সহযোগিতা করছে বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থা সোসাইটি ডেভেলপমেন্ট কমিটি (এসডিসি)।
অনেক চাষি ক্ষেত থেকে কাকরোল তুলে বিক্রিও শুরু করেছেন। তারা জানান, মাচায় আবাদ হওয়ায় সাম্প্রতিক বন্যায় এ সবজিটির কোনো ক্ষতি হয়নি। নতুন পদ্ধতিতে কাকরোল চাষ করে সাফল্য পেয়েছেন তারা, ফলনও হয়েছে ভালো।
সরেজমিনে গেলে দেখা গেছে, চাষিদের মাচায় এখন ঝুলছে সবুজ কাকরোল। ক্ষেত পরিচর্যা ও পরাগায়নে ব্যস্ত তারা। কৃষাণিরাও সহায়তা করছেন তাদের।
কাকরোলচাষিরা বলেন, ‘কাকরোল চাষ করেছি, ফলন ভালো হয়েছে। বাজারে ব্যাপক চাহিদা থাকায় ভালো দাম পাচ্ছি। অন্য ফসলের চেয়ে কাকরোল চাষ সহজ। আমাদের দেখে আরো অনেকে নতুন করে কাকরোল চাষে আগ্রহ প্রকাশ করছেন।’
ফরিদপুর কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সূত্র জানায়, কাকরোলে প্রচুর পরিমাণ ক্যালসিয়াম, ক্যারোটিন, ভিটামিন বি, আমিষ শ্বেতসার ও খনিজ পদার্থ আছে, যা মানবদেহের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায়। কাকরোলের বীজ বা মোথা মার্চ মাসের মাঝামাঝি সময় থেকে জুন মাস পর্যন্ত বপন করা যায়। বীজ বপণের ৭০ থেকে ৭৫দিনের মধ্যে সবজি তোলা যায়। জুন মাস থেকে একটানা অক্টোবর মাস পর্যন্ত কাকরোল পাওয়া যাবে।
এসডিসির নির্বাহী পরিচালক কাজী আশরাফুল হাসান বলেন, ‘এসডিসি কৃষকদের উন্নয়নে কাজ করে যাচ্ছে। বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা ইনস্টিটিউট যেসব জাত উদ্ভাবন করছে, সেই জাতগুলো আমরা কৃষকদের মাঝে ছড়িয়ে দিচ্ছি।’
ফরিদপুর কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের অতিরিক্ত উপ-পরিচালক আশুতোষ কুমার বিশ্বাস বলেন, ‘কাকরোল একটি উচ্চমূল্যের ফসল। আগে ফরিদপুরে এটির চাষ হতো না। বর্তমানে নতুন পদ্ধতিতে মাচায় কাকরোল চাষ করে ভালো ফলন পেয়েছেন চাষিরা। এটি ৫০ থেকে ৭০ টাকা পর্যন্ত কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে। এটি খুবই জনপ্রিয় ও পুষ্টিগুণ সমৃদ্ধ একটি সবজি। সহজেই চাষ করা যায়। কাকরোল চাষ করে চাষিরা তাই বেশি লাভবান হচ্ছেন। আমরা চাষিদের পাশে থেকে প্রশিক্ষণসহ সব ধরনের সহযোগিতা করছি।’
সান নিউজ/ এআর