ফিচার

প্রাচীন ঐতিহ্যের ধারক ‘চিনি মসজিদ’

আমিরুল হক, নীলফামারী: পীর আউলিয়ার শহর বলা হয় নীলফামারী সৈয়দপুরকে। মুসলিম, হিন্দু, বৌদ্ধ ও খ্রিষ্টান সব ধর্মের মানুষের বসবাস এখানে। জাতি ধর্মের কোন বৈষম্য নেই। স্ব স্ব ধর্মের উৎসব পালন হয় আপন মহিমায়। এক সময় ভারত উপমহাদেশে মুঘল সম্রাট আকবরের রাজত্ব ছিল এই বাংলা জুড়ে।

ইসলামের নিদর্শনের অনেক কীর্তি আজও দাঁড়িয়ে আছে সারা দেশ জুড়ে। সেই রকম মুসলিম রাজত্বের প্রাচীন ঐতিহ্যের ধারক হল এখানকার চিনি মসজিদ। অপরূপ সুন্দর চিনা মাটির পাথর দিয়ে খোদায় করা এই মসজিদটি বাংলাদেশের অন্যতম প্রধান মসজিদগুলোর একটি।

স্থানীয়রা জানায়, নীলফামারী জেলা সদর থেকে প্রায় ২০ কিলোমিটার দুরে ব্রিটিশ আমলে সৈয়দপুর শহরের ইসলামবাগ এই এলাকায় ছিল না কোনো মসজিদ। মুসল্লিদের অনেক দূরের পথ পার হয়ে নামাজ আদায় করতে যেতে হত। প্রথমে ১৮৬৩ সালে এলাকার বাসিন্দা হাজী বকর আলী ও হাজী মুখখুর আলীর উদ্যোগে প্রথমে খড় দিয়ে তৈরি করা হয় মসজিদটি।

এলাকাবাসীর দেওয়া দান করা একমুঠ করে চাল ও চাকরিজীবীদের এক মাসের মাসিক বেতনের ১৩ থেকে ১৪ টাকার পুঁজিতে টিনের ঘর থেকে নির্মাণ করা হয় পাকা ঘর। মসজিদের প্রথম কাঠামো ব্রিটিশ, দ্বিতীয় কাঠামো পাকিস্তান আর তৃৃতীয় কাঠামো বাংলাদেশ আমলে নির্মিত। প্রতিদিন ১০ আনা মজুরিতে প্রথম কাঠামো নির্মাণ করেন হিন্দু মিস্ত্রি শঙ্খ রায়। এতে ব্যয় হয় ৯ হাজার ৯৯৯ রুপিয়া ১০ আনা।

আরও পড়ুন: শিক্ষামন্ত্রীর সাথে আলোচনায় শিক্ষার্থীরা

পরে ১৯৬৫ সাল থেকে চলতে থাকে দক্ষিণ পাশের অংশের কাজ। ঐতিহাসিক এই মসজিদের নকশা করেন মো. মোখতুল ও নবী বক্স। কয়েকশ’ দক্ষ কারিগর ও শিল্পীর একনিষ্ঠ পরিশ্রমের ফসল হিসেবে গড়ে ওঠে এটি। মসজিদ নির্মাণে মোগল স্থাপত্যশৈলী অনুসরণ করা হয়েছে। উত্তর ও দক্ষিণে রয়েছে দুটি ফটক। কারুকার্য়ের মূল ফটকে চোখে পড়বে ফারসি বা উর্দু ও বাংলায় লেখা ‘চিনি মসজিদ’।

মসজিদের পুরো অংশ চীনামাটি দিয়ে তৈরি বলে এর নামকরণ হয় ‘চিনি মসজিদ’। এটি খ্যাতি পাওয়ার অন্যতম কারণ দেয়ালের আবরণ। পুরো দেয়ালজুড়ে ফুলদানি, ফুলের ঝাড়, গোলাপফুল, চাঁদ, তারাসহ অসংখ্য কারুকাজ রয়েছে।

আরও পড়ুন: সার্চ কমিটিতে নাম দিয়েছে আ’লীগ

বগুড়ার একটি গ্লাস ফ্যাক্টরি মসজিদের পুরো অংশ সাজানোর জন্য ২৫ মেট্রিক টন চীনামাটির টুকরা দান করে। এগুলো দিয়ে মোড়ানো হয় মসজিদের ৩২টি মিনারসহ তিনটি বড় গম্বুজ। এর মূল অংশের বর্ণ অনেকটা লালচে হলেও একটু খেয়াল করলেই বোঝা যায়, পরবর্তী সময়ে তৈরি করা অংশ অনেকটা সাদা বর্ণের।

মসজিদ পরিচালনা কমিটির সাধারণ সম্পাদক মো. ফজলুর রহমান জানান, সৈয়দপুর শহরের ঐতিহ্যবাহী চিনি মসজিদটি দেখতে দূর-দূরান্ত থেকে মানুষ পরিদর্শনে আসেন। মসজিদটি দেখে ইসলাম ধর্ম অনুসারী মানুষের প্রাণ জুড়িয়ে যায়। এলাকাবাসীর আর্থিক সহায়তা আর দোকানের ভাড়া দিয়ে মসজিদর প্রতিমাসে আয় হয় ২৫-৩০ হাজার টাকা। এই সামান্য আয় দিয়ে মসজিদের সার্বিক ব্যয়ভার বহন করা দুঃসাধ্য হয়ে পড়েছে বলেও মন্তব্য করেন তিনি।

সান নিউজ/এমকেএইচ

Copyright © Sunnews24x7
সবচেয়ে
পঠিত
সাম্প্রতিক

ছুটি শেষে বাংলাবান্ধা স্থলবন্দর চালু

মো. রাশেদুজ্জামান রাশেদ, পঞ্চগড় প্রতিনিধি:...

খাগড়াছড়িতে ৪১ প্রার্থীর মনোনয়ন দাখিল

আবু রাসেল সুমন, খাগড়াছড়ি প্রতিনিধি:

দীর্ঘতম আলপনায় বিশ্বরেকর্ড গড়ার উদ্যোগ

নিজস্ব প্রতিবেদক: এশিয়াটিক এক্সপে...

খাগড়াছড়িতে নানা আয়োজনে নববর্ষ উদযাপন

আবু রাসেল সুমন, খাগড়াছড়ি প্রতিনিধি:

শিবগঞ্জে তেলের গোডাউনে আগুন

জেলা প্রতিনিধি: বগুড়ার শিবগঞ্জে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় একটি তেলে...

বজ্রপাতে কিশোরের মৃত্যু

জেলা প্রতিনিধি : ঝালকাঠিতে বজ্রপাতে সিহাব জমাদ্দার (১৫) নামে...

মুন্সীগঞ্জে দুই গ্রুপের সংঘর্ষে আহত ৭

জেলা প্রতিনিধি : মুন্সীগঞ্জে আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে আ...

বিদ্যুৎস্পৃষ্টে ছাত্রলীগ নেতার মৃত্যু

ভালুকা (ময়মনসিংহ) প্রতিনিধি: ময়মনসিংহের ভালুকায় বিদ্যুৎস্পৃষ...

কেএনএফের আরও ৯ সদস্য গ্রেফতার

জেলা প্রতিনিধি : বান্দরবানের রুমায় দুর্গম পাহাড়ি এলাকা থেকে...

বজ্রপাতে প্রাণ গেল ২ জনের 

জেলা প্রতিনিধি : মাদারীপুরের শিবচরে পৃথক বজ্রপাতে ২ জনের মৃত...

লাইফস্টাইল
বিনোদন
sunnews24x7 advertisement
খেলা