শিক্ষা

স্বাস্থ্যসম্মত স্যানিটেশন নিশ্চিত ও শিক্ষা ফি মওকুফের দাবি 

নিজস্ব প্রতিবেদক:

খুলনা: করোনা ভাইরাসের ঝুঁকি কমাতে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান খোলার আগে স্বাস্থ্যসম্মত স্যানিটেশন ও স্যানিটেজার ব্যবস্থা নিশ্চিত এবং করোনাকালের সরকারি ও বেসরকারী শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষা ফি মওকুফের দাবিতে সংবাদ সম্মেলন করেছে নাগরিক সংগঠন জনউদ্যোগ খুলনার নারী ও যুব সেল।

সোমবার (২৪ আগস্ট) দুপুর ১টায় নিজস্ব মিলনায়তনে সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন নারী সেলের আহবায়ক অ্যাড. শামীমা সুলতানা শীলু। উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ কৃষকলীগের নেতা শ্যামল সিংহ রায়, বাংলাদেশ মানবাধিকার সংস্থার সমন্বয়কারী অ্যাড. মোমিনুল ইসলাম, সেফের সমন্বয়কারী মো: আসাদুজ্জামান, সাংস্কৃতিককর্মী জেসমিন জামান, যুবসেলের রিপন বিশ্বাস প্রমুখ।

লিখিত বক্তব্যে বলা হয়, বর্তমানে খুলনা শহরের বেশিরভাগ শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের স্যানিটেশন ব্যবস্থার বেহাল অবস্থা। ফলে স্কুলগুলোতে আসা ৯০ শতাংশ শিক্ষার্থী টয়লেট ব্যবহারে অনীহা দেখাচ্ছে। তবে বেশি অনীহা দেখায় মেয়ে শিক্ষার্থীরা।

বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক ও মনোবিজ্ঞানীরা বলছেন, দীর্ঘ সময় ধরে শিক্ষার্থীরা এভাবে টয়লেট ব্যবহার থেকে বিরত থাকলে তাদের স্বাস্থ্য ঝুঁকিতে পড়বে।পাশাপাশি শ্রেণিকক্ষে মনোযোগ দিতেও সমস্যা হয়। এসএনভি নেদারল্যান্ডস ডেভেলপমেন্ট অর্গানাইজেশনের স্কুল বেজলাইন জরিপে সম্প্রতি এ ধরনের তথ্য উঠে এসেছে। খুলনা মহানগরীর ১৩টি প্রাক-প্রাথমিক বিদ্যালয়ের চার হাজার ২৭৩ জন শিক্ষার্থী, ৩৫টি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ১০ হাজার ১৬৯ জন শিক্ষার্থী, ১৪টি ধর্মীয় শিক্ষা প্রতিষ্ঠান/মাদ্রাসার চার হাজার ৮৭০ জন শিক্ষার্থী ও ১০১টি মাধ্যমিক/উচ্চ মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের ৪৯ হাজার ৩৯৩ জন শিক্ষার্থীর ওপর জরিপ পরিচালনা করে এসএনভি।

জরিপে উল্লেখ করা হয়েছে, স্কুলগুলোতে মোট ছাত্রী ছিল ২৩ হাজার ৫০৬ জন এবং ছাত্র ছিল ২৫ হাজার ৮৮৭ জন। জরিপে দেখা গেছে, বাংলাদেশ ন্যাশনাল বিল্ডিং কোড (বিএনবিসি) অনুসারে প্রাক-প্রাথমিক স্কুলে টয়লেট ব্যবহার করছে শতকরা ১০ শতাংশ শিক্ষার্থী, বাকি ৯০ শতাংশ শিক্ষার্থী টয়লেট ব্যবহার করে না। প্রাথমিক স্কুলে ছাত্রীরা করছে শতকরা ১৯ শতাংশ, বাকি ৮১ শতাংশ টয়লেট ব্যবহার করে না। ছাত্ররা করছে শতকরা ৫৬ শতাংশ, বাকি ৪৪ শতাংশ ছাত্র টয়লেট ব্যবহার করে না। ধর্মীয় শিক্ষা প্রতিষ্ঠান/ মাদ্রাসায় ছাত্রীরা করছে শতকরা ১৩ শতাংশ, বাকি ৮৭ শতাংশ করে না। ছাত্ররা করছে শতকরা ৪৩ শতাংশ, বাকি ৫৭ শতাংশ করে না। মাধ্যমিক/উচ্চ মাধ্যমিক স্কুলে ছাত্রী করছে শতকরা ৫৫ শতাংশ, বাকি ৪৫ শতাংশ করে না। ছাত্ররা করছে শতকরা ৩৩ শতাংশ, বাকি ৬৭ শতাংশ করে না। এছাড়া এসব স্কুলগুলোতে প্রতিবন্ধী শিক্ষার্থীদের জন্য আলাদা টয়লেট রয়েছে মাত্র ১ দশমিক ৩ শতাংশ এবং বাকি ৯৮ দশমিক ৭ শতাংশের জন্য পৃথক টয়লেটের ব্যবস্থা নেই।

জরিপে আরও উল্লেখ করা হয়, বিএনবিসি অনুসারে এক বছরের মধ্যেই সেপটিক ট্যাংক খালি করার নিয়ম থাকলেও প্রাক-প্রাথমিক স্কুলের ৪৫ শতাংশ, প্রাথমিক স্কুলে ৩৮ শতাংশ, ধর্মীয় শিক্ষা প্রতিষ্ঠান/মাদ্রাসায় ৬৪ শতাংশ এবং মাধ্যমিক/উচ্চ মাধ্যমিকে ৪৭ শতাংশ সেপটিক ট্যাংক কখনো খালি করা হয়নি। বাকি যেগুলো খালি করা হয়েছে তার মধ্যে শতকরা ৮২ শতাংশ করা হয়েছে সুইপারের মাধ্যমে এবং ১৮ শতাংশ করা হয়েছে যান্ত্রিকভাবে। এছাড়া ওই সব স্কুলগুলোতে হাত ধোয়ার স্টেশন রয়েছে ২৮ শতাংশ, পানি রয়েছে ২৭ শতাংশ, সাবান/ডিটারজেন্ট রয়েছে ১৯ শতাংশ এবং হাত ধোয়ার সুবিধাগুলো প্রবেশগম্যতা রয়েছে ১৮ শতাংশ। এর ফলে স্কুলগুলোতে আসা ৯০ শতাংশ পর্যন্ত শিক্ষার্থী টয়লেট ব্যবহারে অনীহা দেখাচ্ছে। বেশি অনীহা প্রকাশ করে মেয়ে শিক্ষার্থীরা।

এদিকে বেশ কিছু শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে সরেজমিনে গিয়ে দেখা গেছে, শিক্ষার্থীদের ব্যবহৃত টয়লেটগুলো বেশিরভাগ নোংরা ও দুর্গন্ধময়। কোনো টয়লেটে হাত পরিষ্কারের সাবান বা ডিটারজেন্ট নেই। রয়েছে পর্যাপ্ত পানি সংকটও। এছাড়া কিছু শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের ভবনে কোনো টয়লেটের ব্যবস্থা না থাকায় বিকল্প হিসেবে বিদ্যালয় থেকে বিচ্ছিন্ন কোনো স্থানে অস্থায়ী টয়লেট নির্মাণ করা হয়েছে। কিন্তু সেগুলোও ব্যবহারের অনুপযোগী।

অভিভাবকরা বলেছেন, বেশিরভাগ স্কুলের টয়লেটের মান প্রথমত ভালো না। দ্বিতীয়ত টয়লেটগুলো দীর্ঘদিন পরিষ্কার না করায় ব্যবহারের অনুপযোগী হয়ে পড়েছে। এ অবস্থায় ছেলে-মেয়েরা টয়লেট ব্যবহার করতে না পেরে ভোগান্তিতে পড়ছে।

স্কুলগুলোর শিক্ষার্থীরা জানিয়েছে, টয়লেটে দুর্গন্ধ ও ময়লা থাকায় তারা টয়লেটে যায় না। তাই দীর্ঘ সময় জোর করে টয়লেট থেকে নিজেদের বিরত রাখে। এতে তাদের কষ্ট সহ্য করতে হয়।

শিক্ষার্থীদের স্বাস্থ্যঝুঁকি কমাতে টয়েলেট ব্যবহারের অনিহা দূর করতে অবিলম্বে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কাছে স্বাস্থ্যসম্মত স্যানিটেশন নিশ্চিতের দাবি জানানো হয় সংবাদ সম্মেলনে।


সান নিউজ/ এআর

Copyright © Sunnews24x7
সবচেয়ে
পঠিত
সাম্প্রতিক

ব্রাজিলে মাদকচক্রবিরোধী অভিযানে ৪ পুলিশসহ ১১৯ জন নিহত

ব্রাজিলে মাদকচক্রের বিরুদ্ধে এক বড় পুলিশি অভিযানে...

২০৩৪ সালের ট্রিলিয়ন ডলারের লক্ষ্য অর্জনে নারীই চালিকাশক্তি: তারেক রহমান

বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান বলেছেন, “আমাদের দৃষ্টিভঙ্গি স...

নির্বাচনের আগে গণভোট অযৌক্তিক ও অপ্রয়োজনীয়

আগামী এয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আগে গণভোট অপ্রয়োজনীয় ও অযৌক্তিক বলে মন্তব্য...

‘হ্যাঁ’ ভোটে বিএনপির জন্ম, ‘না’ ভোটে মৃত্যু

জামায়াত ও বিএনপি কুতর্ক বাদ দিয়ে নির্বাচনী পরিবেশ তৈরিতে এগিয়ে আসার আহ্বান জা...

এমপিওভুক্ত শিক্ষকদের জবাবদিহির আওতায় আনছে সরকার

জবাবদিহির আওতায় আনা হচ্ছে এমপিওভুক্ত শিক্ষকদের, এ কথা জানিয়েছেন শিক্ষা উপদেষ্...

এমপিওভুক্ত শিক্ষকদের জবাবদিহির আওতায় আনছে সরকার

জবাবদিহির আওতায় আনা হচ্ছে এমপিওভুক্ত শিক্ষকদের, এ কথা জানিয়েছেন শিক্ষা উপদেষ্...

বোয়ালমারীতে দুর্ধর্ষ ডাকাতি, স্বর্ণালঙ্কারসহ কোটি টাকার মালামাল লুট

ফরিদপুরের বোয়ালমারীতে নারায়ণ চন্দ্র নামে এক ব্যবসায়ীর বাড়িতে দুর্ধর্ষ ডাকাতির...

জনগণের সিদ্ধান্ত নাকি রাজনীতির সাজানো সম্মতি?

গণভোট হলো জনগণের সরাসরি অংশগ্রহণের একটি পদ্ধতি, যে...

এবার ইসির প্রতীক তালিকায় যুক্ত হলো ‘শাপলা কলি’ 

নির্বাচন বিধিমালা ২০০৮ সংশোধন করে সংরক্ষিত প্রতীকের তালিকায় নির্বাচন কমিশন যু...

সুন্দরবনে দাপিয়ে বেড়াচ্ছে বনদস্যু, তিন শতাধিক জেলে অপহরণ

দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের বিশ্বের সর্ববৃহৎ ম্যানগ্রোভ বনাঞ্চল ও মৎস্যভান্ডার নামে...

লাইফস্টাইল
বিনোদন
sunnews24x7 advertisement
খেলা