খায়রুল খন্দকার, টাঙ্গাইল : উপজেলা প্রশাসন সূত্রে জানা গেছে, ইলিশের নিরাপদ প্রজনন ও বংশবৃদ্ধির জন্য ৭ অক্টোবর থেকে ২৮ নভেম্বর পর্যন্ত ২২ দিন ইলিশ প্রজননক্ষেত্রে সব ধরনের মৎস্য আহরণ নিষিদ্ধ ঘোষণা করেছে সরকার।
আরও পড়ুন : ধর্ষণ মামলার আসামির যাবজ্জীবন কারাদণ্ড
তবে এই নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে শনিবার রাতে টাঙ্গাইল জেলার ভূঞাপুর উপজেলার গাবসারা ইউনিয়নের বিভিন্ন এলাকায় যমুনা নদীতে জাল ও নৌকা দিয়ে ইলিশ শিকার করছিলেন স্থানীয় বেশ কয়েকজন জেলে।খবর পেয়ে বুধবার রাত থেকে ভোর পর্যন্ত উপজেলা প্রশাসন, মৎস্য বিভাগ ও ভূঞাপুর নৌ পুলিশ ফাঁড়ির সহযোগিতায় যমুনা নদীর বিভিন্ন স্থানে অভিযান পরিচালনা করে তাদেরকে আটক করা হয়।
এ সময় তাঁদের কাছ থেকে ১০ কেজি ইলিশ এবং বিশ হাজার মিটার জাল জব্দ করা হয়। পরে বৃহস্পতিবার সকালে ওই ১৪ জনকে ভ্রাম্যমাণ আদালতে হাজির করে জরিমানা করা হয়।
আরও পড়ুন : বিষপানে প্রাণ গেল প্রবাসীর স্ত্রীর
বৃহস্পতিবার (১৩ অক্টোবর) সকাল এই ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করেন উপজেলা নিবার্হী কর্মকর্তা ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মোছাঃ ইসরাত জাহান।
এ সময় উপস্থিত ছিলেন এসময় আরো উপস্থিত ছিলেন ভূঞাপুর উপজেলা মৎস্য অফিসার সুদীপ ভট্টাচার্য, মৎস্য অফিসের কর্মচারীবৃন্দ, আইসি মোঃ ইউনুস মুন্সী ,সঙ্গীয় ফোর্স ভূঞাপুর নৌ পুলিশ ফাঁড়ি।
আরও পড়ুন : ঈশ্বরগঞ্জে কৃষি মেলার উদ্বোধন
অর্থদণ্ড প্রাপ্তরা হলেন ভূঞাপুর উপজেলার গাবসারা ইউনিয়নের শহিদ (৩৫), শাহআলম (৩০), আঃ হাকিম (৩৫), আলিম উদ্দিন (৪৫), সাইফুল ইসলাম (৪০), হযরত আলী (১৮), মোঃ সাইফুল ইসলাম (৪০), মোঃ আলমগীর শেখ (১৮), জসিম(২০), মঞ্জুর আলী (১৮) মোঃ সুরুজ্জামান (৩৬), আঃ মজিদ (৩০), মোঃ কামরুল মন্ডল (৩০) এবং সিরাজগঞ্জ সদর উপজেলার মোঃ আব্দুল্লাহ (৩৪)।
নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মোছাঃ ইসরাত জাহান বলেন,যমুনা নদীতে অভিযান চালিয়ে অবৈধভাবে ইলিশ মাছ ধরার সময় চৌদ্দ জন জেলেকে ২০ হাজার মিটার জালসহ আটক করা হয়। ভ্রাম্যমাণ আদালত বসিয়ে চৌদ্দ জেলেকে ৭০ হাজার টাকা জরিমানা করা হয় এবং জব্দকৃত জাল পুড়িয়ে ধ্বংস করা হয়। এবং জব্দ করা ১০ কেজি ইলিশ স্থানীয় এতিমখানা মাদ্রাসায় বিতরণ করা হয়েছে। এই অভিযান অব্যাহত থাকবে।
আরও পড়ুন : নোয়াখালীতে ৪ বিএনপি নেতা গ্রেফতার
এই সময়ে কথা হয় জেলেদের সাথে ইলিশ ধরার কারণে বহু জেলেকে কারাদণ্ড ও অর্থদণ্ড দেওয়া হচ্ছে। জেলেরা দরিদ্র শ্রেণির মানুষ, মাছ ধরার মাধ্যমে দৈনিক যে আয় হয়, তা দিয়ে তাদের সংসার চলে। ৭ অক্টোবর থেকে ইলিশ ধরা বন্ধ রয়েছে, অথচ অধিকাংশ জেলে এখনো প্রতিশ্রুত ২০ কেজি চাল পাননি। একটি জেলে পরিবারের পক্ষে ২০ কেজি চাল দিয়ে ২২ দিন চলা কঠিন। সেই চালটুকুও যদি তাঁরা না পান, তাহলে কীভাবে তাঁদের দিন চলবে? মাছ ধরা নিষিদ্ধ ঘোষণা করার আগে কেন জেলেদের কাছে চাল পৌঁছানো হলো না? বিভিন্ন স্থানে মাছ ধরার দায়ে যেসব জেলে জরিমানার শিকার হয়েছেন, তাঁদের বেশির ভাগই বলেছেন, পেটের দায়ে তাঁরা মাছ ধরতে এসেছেন।
তারা আরও বলেন শুধু জেল-জরিমানা নয়, জেলেদের মাছ ধরার জালও পুড়িয়ে ফেলা হচ্ছে।
সান নিউজ/এইচএন