শওকত জামান, জামালপুর : জামালপুরে উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢল ও টানা বর্ষনে যমুনা ও ব্রহ্মপুত্রের পানি বৃদ্ধি অব্যাহত রয়েছে।
আরও পড়ুন : বন্যা নিয়ে দুশ্চিন্তার কিছু নেই
যমুনার পানি বাহাদুরাবাদ পয়েন্টে বিপৎসীমার ৫৮ সেন্টিমিটার ও ব্রহ্মপুত্রের পানি জামালপুর ফেরিঘাট পয়েন্টে বিপৎসীমার ১৭ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে জানিয়েছেন পানি উন্নয়ন বোর্ডের পানি পরিমাপক আব্দুল মান্নান।
পানি বৃদ্ধি অব্যহত থাকায় যমুনাপাড়ের তীরবর্তী নিম্নাঞ্চলের নতুন নতুন এলাকা বন্যা কবলিত হয়ে পড়ছে। বন্যা পরিস্থিতি ক্রমেই অবনতি হচ্ছে।
আরও পড়ুন : ভারতে রাষ্ট্রপতি নির্বাচনে যশবন্ত সিনহা?
যমুনার পানির তোড়ে নদীপাড়ের তীরবর্তী মাদারগঞ্জের গাবের গ্রামে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা মন্ত্রনালয়ের অর্থায়নে ৬ কোটি ৩৮ লাখ টাকা ব্যয়ে নির্মাণাধীন বন্যা নিয়ন্ত্রন বাঁধের ২০০ মিটার ধসে বন্যার পানি প্রচন্ড বেগে লোকালয়ে প্রবেশ করছে। ফলে মাদারগঞ্জের নিন্মাঞ্চলের গ্রামগুলো বন্যা কবলিত হয়ে পড়েছে।
সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, মেলান্দহ, ইসলামপুর, দেওয়ানগঞ্জ, বকশীগঞ্জ, সরিষাবাড়ী ও মাদারগঞ্জ উপজেলার ৩০টি ইউনিয়নের শতাধিক গ্রামের নিম্নাঞ্চলে পানি প্রবেশ করেছে। এসব এলাকার প্রায় ৫০ হাজার মানুষ পানিবন্দি হয়ে পড়েছেন। ডুবে গেছে নিম্নাঞ্চলের বিভিন্ন ফসল।
আরও পড়ুন : মালিতে সশস্ত্র হামলায় নিহত ১৩২
জেলার দেওয়ানগঞ্জের চুকাইবাড়ী, চিকাজানী, বাহাদুরাবাদ, হাতিভাঙ্গা, পার রাম রাম পুর, চর আম খাওয়াসহ ৬টি ইউনিয়নের অন্তত ৪০টি গ্রাম প্লাবিত হয়েছে। দেওয়ানগঞ্জ উপজেলা পরিষদে বন্যার পানি প্রবেশ করেছে। ফলে অফিসিয়াল কার্যক্রমে বিঘ্ন ঘটছে উপজেলা ক্যাম্পাসে বন্যার পানি হাটু থেকে কোমর পর্যন্ত উঠেছে।
এদিকে ইসলামপুর-মাহমুদপুর সড়কের আমতলী ড্রাইবেশন, পাথর্শী-আমতলী সড়কের বলিয়াদহ ড্রাইবেশন, পচাবহলা-উলিয়া সড়কের ধর্মকুড়া ড্রাইবেশন তলিয়ে গেছে। ডুবে গেছে দেলিরপার-বামনা সড়ক । এসব সড়কে পানিতে তলিয়ে যাওয়ায় সড়ক যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে
আরও পড়ুন : আসামে বন্যায় ১১ জনের মৃত্যু
বিদ্যালয়ে পানি প্রবেশ করায় পাঠদান বন্ধ হয়েছে জেলার প্রায় অর্ধশতাধিক শিক্ষা প্রতিষ্ঠান।
জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার মো. আব্দুর রাজ্জাক বলেন, জেলায় ৯০টি বিদ্যালয়ে বন্যার পানি ঢুকেছে। এর মধ্যে ৪৮টি প্রতিষ্ঠানের পাঠদান বন্ধ রয়েছে। বাকিগুলো পর্যবেক্ষণ করে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।
উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা মেহেদী হাসান টিটু জানান, পানি বিপৎসীমার উপর দিয়ে প্রবাহিত হলেও বন্যা পরিস্থিতি ভয়াবহ রূপ নেয়নি। বন্যা পরিস্থিতি মোকাবেলায় সবধরনের প্রস্তুতি রয়েছে।
আরও পড়ুন : জৈন্তাপুরে মা-ছেলের লাশ উদ্ধার
জেলা ত্রাণ ও পূনর্বাসন কর্মকর্তা মোঃ আলমগীর হোসেন জানায়, পরিস্থিতি মোকাবিলায় সরকারিভাবে জেলার প্রত্যেক উপজেলায় ৫০ মেট্রিক টন চাল ও নগদ ১ লাখ করে টাকা বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। এছাড়াও দুর্যোগ মোকাবিলা ৮৬টি আশ্রয় কেন্দ্র ও ৮০টি মেডিকেল টীম প্রস্তুত রাখা হয়েছে। বন্যা মোকাবিলায় জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে সব ধরনের প্রস্তুতি নেয়া হয়েছে।
সান নিউজ/এইচএন