আমিরুল হক, নীলফামারী: উত্তরের জেলা নীলফামারীতে ৫৯ কিলোমিটার রেলপথে ৪০টি রেলক্রসিংয়ের মধ্যে গেটম্যান আছে ১৪টিতে। আর ২৬টি অরক্ষিত। এই গুলোতে কোন প্রতিবন্ধক নেই। এমনকি হাতের ইশারায় যানবাহন থামানোর জন্য নেই কোনো প্রহরী। কিছু ক্রসিংয়ে নামমাত্র প্রতিবন্ধক থাকলেও সেগুলো দেখার মতো কেউ নেই। এতে অনেকেই অকালে হারাচ্ছেন প্রাণ আর কেউ শিকার হচ্ছেন অঙ্গহানির। দীর্ঘদিন রেলক্রসিং অরক্ষিত থাকলেও কার্যকর পদক্ষেপ নিচ্ছে না রেলওয়ে কর্তৃপক্ষ।
সরেজমিন দেখা গেছে, ‘সাবধান সামনে রেল পারাপার, সামনে রেলপথ, ধীরে চলুন সামনে রেল ক্রসিং’ ইত্যাদি লেখা সাইনবোর্ড টানানো থাকলেও এসব রেল ক্রসিংয়ের একটিতেও নেই সিগনালম্যান। এসব ক্রসিং দিয়ে অবাধে পারপার হচ্ছে পথচারী ও বিভিন্ন পরিবহন।
এদিকে, নীলফামারী দারোয়ানী রেলক্রসিংয়ে গত ২৪ জানুয়ারী ৪জন অটোরিকশা যাত্রী প্রাণ হারান। তাঁরা সকলেই নীলফামারী উত্তরা ইপিজেডের শ্রমিক ছিলেন। এ ঘটনা মনে নাড়া দেয়ায় ওই এলাকার আলমগীর হোসেন নামে এক ভ্যান চালক নিজ খরচে রেললাইনের দুপাশে বাঁশের বেড়া দিয়ে ট্রেন চলাচলের সময় ব্যারিকেড দিয়ে দায়িত্ব পালন করছেন।
আরও পড়ুন: মেহেরপুরে হামলায় কৃষক নিহত
স্থানীয়রা জানান, অরক্ষিত রেলক্রসিংয়ে প্রতনিয়ত ঘটছে দুর্ঘটনা। কিন্তু এসব অরক্ষিত ক্রসিং অতিক্রম করার সময় ট্রেনের গতি কমানো হয় না। এমনকি ট্রেনের হুইসেল পর্যন্ত বাজানো হয় না। ক্রসিংগুলো অতিক্রম করার সময় মানুষ বা যানবাহন পারাপারের বিষয়টি ট্রেনের চালকের দৃষ্টিতে এলেও ব্রেক পর্যন্ত ধরা হয় না।
এ ব্যাপারে জানতে চাইলে উর্দ্ধতন উপ-সহকারি প্রকৌশলী (পথ) সুলতান মৃধা বলেন, প্রত্যেকটি রেলক্রসিংয়ে পাশে সতর্কবার্তা ও সাবধানতার বাণী দেওয়া হয়েছে। পথচারীরা এটি দেখে চলাচল করবেন। এ ছাড়াও রেললাইনের দুই পাশে বসবাসকারীদের নানা ধরনের পরামর্শ দিয়েছে রেলওয়ে কর্তৃপক্ষ। বেশি ঝঁকিপূর্ণ নীলফামারীর দারোয়ানী ও খয়রাত নগর এলাকায় সুরক্ষিত রেলক্রসিং ও গ্যাটমান নিয়োগের জন্য প্রস্তাব পাঠানো হয়েছে।
তিনি আরও বলেন, ২০২১ সালের জানুয়ারি থেকে ডিসেম্বর মাস পর্যন্ত রেলক্রসিং পার হতে গিয়ে প্রাণ হারিয়েছে ৫০ জন। দুর্ঘটনায় যারা নিহত হয়েছেন তারা সবাই পথচারী ও শিশু।
সান নিউজ/এনকে