সান নিউজ ডেস্ক: বাংলাদেশের দণ্ডবিধিতে ধর্ষণ মামলায় জেন্ডার সমতা কেন ঘোষণা করা হবে না, তা জানতে চেয়ে রুল জারি করেছেন হাইকোর্ট। সোমবার (১১ এপ্রিল) ব্যারিস্টার তাপস কান্তি এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
আরও পড়ুন: ১৮ কেজি গাঁজাসহ গ্রেফতার ৩
আদালতে রিট আবেদনের পক্ষে শুনানি করেন আইনজীবী তাপস কান্তি বল। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল বিপুল বাগমার। রিটকারী তিনজন হলেন, গাজীপুরের বাসিন্দা সৌমেন ভৌমিক, সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী তাসমিয়া নূহিয়া আহমেদ ও সমাজকর্মী মাসুম বিল্লাহ।
ব্যারিস্টার তাপস কান্তি বলেন, রবিবার (১০ এপ্রিল) বিচারপতি মো. মজিবুর রহমান মিয়া ও বিচারপতি খিজির হায়াতের হাইকোর্ট বেঞ্চ এ রুল জারি করেন। একইসঙ্গে রুলে নারী ধর্ষণ-সংক্রান্ত দণ্ডবিধির ৩৭৫ ধারাটি লিঙ্গ সমতা করে সংশোধন করতে কেন নির্দেশ দেওয়া হবে না, তা জানতে চেয়ে আগামী ৪ সপ্তাহের মধ্যে আইন মন্ত্রণালয়ের সচিব, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সচিব ও পুলিশের মহাপরিদর্শককে জবাব দিতে বলা হয়েছে।
আরও পড়ুন: বিশ্বে করোনায় মৃত্যু ও শনাক্ত কমেছে
তিনি আরও বলেন, দণ্ডবিধির ৩৭৫ ধারাকে আমরা চ্যালেঞ্জ করেছি, সেখানে ডেফিনিশনটা কেবল ভ্যাজাইনাল পেনিট্রেশনকে রিকগনাইজ করে। কিন্তু শব্দটা যদি কেবল পেনিট্রেশন (বলাৎকার, শিশুধর্ষণ, পুরুষ কর্তৃক পুরুষ, নারী কর্তৃক নারী ও হিজড়া) হয়, সেক্ষেত্রে শরীরের যে কোনো জায়গায়, তা ওরালও হতে পারে, পেনিট্রেট করলেই সেটা ধর্ষণ হিসেবে বিবেচিত হবে। আমরা আইনে থাকা ধর্ষণের সংজ্ঞার জেন্ডার নিউট্রালাইজেশন দাবি করেছি।
এর আগে গত বছরের ১১ জানুয়ারি এ রিট আবেদনটি করা হয়। ওই সময় ছেলে শিশু তথা পুরুষকে যৌন নির্যাতন ও বলৎকারের ঘটনা উল্লেখযোগ্য হারে বেড়েছিল জানিয়ে তাপস কান্তি বল বলেন, এ ধরনের নির্যাতনকে ধর্ষণের অপরাধ হিসেবে বিচার করা যাচ্ছে না। এ কারণে দণ্ডবিধির ৩৭৫ ধারায় সংশোধন এনে ‘নারী ধর্ষণ ’এর অপরাধের পাশাপাশি অপরাধ হিসেবে ‘পুরুষ ধর্ষণ’ বিষয়টিকে যুক্ত করার আবেদন করা হয়।
আরও পড়ুন: পাকিস্তানের পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করছে বাংলাদেশ
আবেদনে উল্লেখ করা হয়, দণ্ডবিধির ৩৭৫ ধারায় শুধু পুরুষ দ্বারা নারীদের ধর্ষণের বিষয়ে বলা আছে। এখানে সম্মতি ছাড়া নারীদের দ্বারা নারী, নারীর দ্বারা পুরুষ, পুরুষ দ্বারা পুরুষ ও একজন ট্রান্সজেন্ডার আরেক ট্রান্সজেন্ডারের দ্বারা যৌন নিপীড়নের বিষয়টি নেই। কোনো নারীকে পুরুষ ধর্ষণ করার বিষয়ে দণ্ডবিধির ৩৭৫ ধারায় ৫টি উপাদানের কথা বলা হয়েছে।
সেগুলো হলো, নারীর ইচ্ছার বিরুদ্ধে, সম্মতি ছাড়া, সম্মতি থাকলেও তাকে মৃত্যু ও আঘাতের ভয় দেখিয়ে, স্বামী না হয়েও স্বামী বলে মিথ্যা পরিচয় দিয়ে এবং সম্মতি থাকলেও ১৪ বছরের কম বয়সের নারীর সঙ্গে যৌন সম্পর্ক স্থাপন করলে তা ধর্ষণ হিসেবে বিবেচিত হবে।
সান নিউজ/এমকেএইচ