নিজস্ব প্রতিবেদক: বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) মেধাবী ছাত্র আবরার ফাহাদ হত্যাকাণ্ডের আজ দুই বছর পূর্ণ হলেও শেষ হয়নি বিচারকাজ। ২০১৯ সালের ৬ অক্টোবর দিনগত রাতে বুয়েটের শেরেবাংলা হলে নৃশংসভাবে তাকে পিটিয়ে হত্যা করে ছাত্রলীগের একদল নেতাকর্মী।
এর আগে ২০২০ সালের ১৫ সেপ্টেম্বর ঢাকার দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনাল ১-এর বিচারক আবু জাফর মো. কামরুজ্জামান এ মামলায় অভিযোগ গঠনের মাধ্যমে বিচার শুরুর আদেশ দেন। এর পর এক বছরের বেশি সময় পেরিয়েছে।
করোনায় ছুটিতে আদালত বন্ধ থাকায় বিচারকাজ শেষ হয়নি। দীর্ঘ সময়েও আলোচিত এ হত্যা মামলার বিচারিক কার্যক্রম শেষ না হওয়ায় আক্ষেপ প্রকাশ করেছেন নিহত আবরারের বাবা ও মামলার বাদী বরকত উল্লাহ।
গত ২০ সেপ্টেম্বর আদালতে রাষ্ট্রপক্ষের যুক্তি উপস্থাপনের জন্য দিন ধার্য ছিল। ওইদিন বিচারক অসুস্থ থাকায় আদালতে উপস্থিত হতে পারেননি। পরে ট্রাইব্যুনালের ভারপ্রাপ্ত বিচারক মনির কামাল রাষ্ট্রপক্ষের যুক্তি উপস্থাপনের জন্য ২০ অক্টোবর দিন ধার্য করেন। রাষ্ট্রপক্ষের যুক্তি উপস্থাপন শেষে শুরু হবে আসামিপক্ষের যুক্তি উপস্থাপন। এরপর মামলাটির রায় ঘোষণার জন্য দিন ধার্য হবে।
আবরারের বাবা বরকত উল্লাহ বলেন, আমার ছেলে আবরার হত্যার দুই বছর হলো। দুই বছরেও ছেলের হত্যার বিচার না পাওয়ায় আক্ষেপ ছাড়া আর কিছু নেই আমার। বিচার কার্যক্রম যেন দ্রুত শেষ হয় এবং রায়ে আসামিরা যেন দৃষ্টান্তমুলক শাস্তি পায়, এ প্রত্যাশা করছি।
আবরার ফাহাদ হত্যাকাণ্ডের সূত্রপাত ২০১৯ সালের ৫ অক্টোবর। এদিন বাংলাদেশ-ভারতের মধ্যকার চুক্তি নিয়ে ফেসবুকে একটি স্ট্যাটাস দেন বুয়েটের তড়িৎ ও ইলেকট্রনিকস প্রকৌশল বিভাগের দ্বিতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী আবরার ফাহাদ। পরদিন ৬ অক্টোবর দিনগত রাতে আবরারকে তার কক্ষ থেকে ডেকে নিয়ে যায় বুয়েট শাখা ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা।
২০১১ নম্বর কক্ষে নিয়ে গিয়ে আবরারকে পিটিয়ে হত্যা করে তারা। পরে রাত তিনটার দিকে শেরেবাংলা হলের সিঁড়ি থেকে তার মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ।
এঘটনায় ২৫ জনকে অভিযুক্ত করে ২০১৯ সালের ১৩ নভেম্বর চার্জশিট তৈরি করলে ২০২০ সালের ১৫ সেপ্টেম্বর মামলায় অভিযোগ গঠন করা হয়। চার্জশিটভুক্ত ২৫ আসামির মধ্যে ২১ জনকে গ্রেফতার করে পুলিশ।
আবরার ফাহাদ হত্যাকাণ্ডের পর বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়সহ বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ব্যাপক বিক্ষোভ হয়। পরে বুয়েট কর্তৃপক্ষ ক্যাম্পাসে সব ধরনের রাজনৈতিক সংগঠন এবং ছাত্ররাজনীতি নিষিদ্ধ ঘোষণা করে।
১৯৯৮ সালের ১৩ মে কুষ্টিয়ার কুমারখালী উপজেলার কয়া গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন আবরার ফাহাদ। আবরার কুষ্টিয়া মিশন স্কুল ও জেলা স্কুলে লেখাপড়া শেষ করে ২০১৮ সালের ৩১ মার্চ তিনি বুয়েটে ভর্তি হন। এরপর বুয়েট ছাত্রলীগের হাতে নিহত হন তিনি।
সান নিউজ/এফএইচপি