সান নিউজ ডেস্ক : চা-শ্রমিকদের চলমান মজুরি থেকে ২৫ টাকা বৃদ্ধি করে নতুন মজুরি ১৪৫ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে। অবশেষে দীর্ঘ ১২ দিন ধরে চলা কর্মবিরতি প্রত্যাহার করে নিয়েছেন শ্রমিকরা।
আরও পড়ুন : আগামী নির্বাচন বাঁচা-মরার নির্বাচন
শনিবার (২০ আগস্ট) বিকেলে সিলেটের মৌলভীবাজার জেলার শ্রীমঙ্গলে অবস্থিত বিভাগীয় শ্রম দফতরের অফিসে চা-শ্রমিক ইউনিয়নের নেতৃবৃন্দের সাথে বৈঠকে নতুন মজুরি নির্ধারণ করা হয়।
শ্রমিকদের চলমান কর্মবিরতি প্রত্যাহারের ঘোষণা দেন বাংলাদেশ চা-শ্রমিক ইউনিয়নের ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক নৃপেন পাল। এ সময় কর্মসূচি পালনকালে গত ১২ দিনের মজুরি, রেশনসহ আনুষঙ্গিক অন্যান্য সুবিধা প্রদানের দাবিও জানান তিনি।
মৌলভীবাজার-৪ আসনের সংসদ সদস্য উপাধ্যক্ষ আব্দুস শহীদ, শ্রম অধিদফতরের মহাপরিচালক খালেদ মামুন চৌধুরী, মৌলভীবাজারের পুলিশ সুপার মোহাম্মদ জাকারিয়াসহ চা-শ্রমিক ইউনিয়নের বিভিন্ন পর্যায়ের নেতৃবৃন্দ বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন।
আরও পড়ুন : বিদ্যুৎস্পৃষ্টে একই পরিবারের নিহত ৩
সাংবাদিকদের সমঝোতা সভা শেষে আব্দুস শহীদ এমপি জানান, চা শ্রমিকদের টানা আন্দোলনের প্রেক্ষিতে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আপাতত শ্রমিকদের দৈনিক মজুরি ১৪৫ টাকা নির্ধারণ করে দিয়েছেন। প্রধানমন্ত্রীর এই প্রস্তাব নিয়ে চা শ্রমিকদের সাথে আলোচনা শেষে শ্রমিকরা ধর্মঘট প্রত্যাহারে সম্মত হয়েছে।
তিনি আরও বলেন, মাননীয় প্রধানমন্ত্রী চা-শ্রমিকদের নিজের পরিবারের মানুষ মনে করেন। তাই চা-শ্রমিকদের স্বার্থসংশ্লিষ্ট বিষয়ে প্রধানমন্ত্রী সবসময় আন্তরিক।
চা শ্রমিক ইউনিয়নের ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক নৃপেন গোয়ালা বলেন, প্রধানমন্ত্রীর এ সিদ্ধান্তের প্রতি সম্মান জানিয়ে আন্দোলন প্রত্যাহার ঘোষণা করছি। আগামীকাল রোববার (২১ আগস্ট) শ্রমিকরা কাজে যোগ দেবে।
আরও পড়ুন : সাগরে ট্রলার ডুবি, ৩৪ জেলে নিখোঁজ
প্রধানমন্ত্রী শ্রমিকদের ১৪৫ টাকার যে মজুরি নির্ধারণ করে দিয়েছেন- তার প্রতি সম্মান জানিয়ে এ সিদ্ধান্ত মেনে নিয়েছি বলে জানান চা-শ্রমিক ইউনিয়নের সাংগঠনিক সম্পাদক ও বালিশিরা ভ্যালীর সভাপতি বিজয় হাজরা।
এসময় বিজয় হাজরা মজুরি বৃদ্ধির বিষয়টি পুনর্বিবেচনার জন্য প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার প্রতি অনুরোধও জানান।
প্রসঙ্গত, চলতি বছরের জুন মাসে বাংলাদেশ চা-শ্রমিক ইউনিয়ন ও মালিকপক্ষের সংগঠন বাংলাদেশ চা সংসদের বৈঠক হয়। সেখানে শ্রমিকদের দৈনিক মজুরি ৩০০ টাকা করার প্রস্তাব দেন শ্রমিক নেতারা।
আরও পড়ুন : নদীতে ভেসে উঠছে যুদ্ধজাহাজ
কিন্তু মালিকপক্ষ বিদ্যমান ১২০ টাকা থেকে ১৪ টাকা বাড়িয়ে ১৩৪ টাকা মজুরির প্রস্তাব দেয়। যে কারণে শ্রমিক নেতারা তা প্রত্যাখ্যান করেন। এরপর আরও এক মাস পেরিয়ে যায়, মালিকপক্ষ কোনো সিদ্ধান্ত জানায়নি। এর প্রতিবাদে গত ৯ থেকে ১২ আগস্ট পর্যন্ত টানা চার দিন প্রতিদিন দুই ঘণ্টা করে ধর্মঘট পালন করা হয়।
তবুও মালিকপক্ষ থেকে এ বিষয়ে কোনো কথা না বলায় ১৩ আগস্ট থেকে বাংলাদেশের সব চা-বাগানে অনির্দিষ্টকালের জন্য পূর্ণদিবস কর্মবিরতি শুরু করেন শ্রমিকরা।
সান নিউজ/এইচএন