আন্তর্জাতিক ডেস্ক:
প্রাণঘাতী করোনা ভাইরাসে বেড়েই চলেছে মৃতের সংখ্যা। চীনের হুবেই প্রদেশে একদিনে আরও যোগ হয়েছে ১১৬ জন। এ নিয়ে বিশ্বব্যাপী মৃতের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ১৪৮৩ জনে।
১৪ ফেব্রুয়ারি শুক্রবার হুবেই স্বাস্থ্য কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, বৃহস্পতিবার প্রদেশটিতে নতুন করে এ ভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন আরও চার হাজার ৮২৩ জন। এ নিয়ে প্রদেশে মোট আক্রান্তের সংখ্যা দাঁড়াল ৫১ হাজার ৯৮৬ জনে।
চীনের পর প্রাণঘাতী এ ভাইরাস সবচেয়ে বেশি ছড়িয়েছে জাপানে। সেখানে আক্রান্তের সংখ্যা ২৫০ ছাড়ালেও মৃত্যুর ঘটনা ঘটেছে প্রথম বৃহস্পতিবার। দেশটির কানাগাওয়া জেলায় এক বৃদ্ধা করোনায় আক্রান্ত হয়ে মারা গেছেন বলে নিশ্চিত করেছে কর্তৃপক্ষ।
জাপানের স্বাস্থ্যমন্ত্রী কাৎসুনোবু কাতু জানিয়েছেন, গত ২২ জানুয়ারি করোনাভাইরাস সংক্রমণের লক্ষণ নিয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছিলেন ওই নারী। কিন্তু চিকিৎসারত অবস্থায় বৃহস্পতিবার তার মৃত্যু হয়। আর এরপরই তার করোনায় আক্রান্ত হওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত হওয়া যায়।
এদিকে জাপানের ইয়োকোহামা বন্দরে নোঙর করা বিলাসবহুল প্রমোদতরীতে তিন হাজার ৭০০ যাত্রী আছেন কোয়ারেন্টাইনে। বৃহস্পতিবার পর্যন্ত সেখানে থাকা ১৭৫ জনকে করোনায় আক্রান্ত হিসেবে শনাক্ত করা হয়েছে।
হংকং, ফিলিপাইনে এই ভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে মারা গেছেন ২জন। এখন পর্যন্ত চীনের বাইরে ২৫টি দেশে করোনা ভাইরাস শনাক্তের খবর পাওয়া গেলেও দুর্বল স্বাস্থ্য ব্যবস্থাপনার কারণে দেশগুলোতে প্রাণঘাতী এ ভাইরাস ছড়িয়ে থাকতে পারে বলে আশঙ্কা করছেন গবেষকরা।
বিশেষ করে দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়া ও আফ্রিকার দেশগুলো এ ভাইরাসে বেশি আক্রান্ত হয়ে থাকতে পারে বলে ধারণা তাদের। একইসঙ্গে, অনুন্নত দেশগুলো করোনা আক্রান্ত হলে মারাত্মক হুমকিতে পড়বে বলে সতর্ক করেছেন বিশেষজ্ঞরা।
উহানের পাশাপাশি চীনের সঙ্গে বিভিন্ন দেশের বিমানের ফ্লাইটের তথ্য উপাত্ত পর্যালোচনার ভিত্তিতে এ আশঙ্কার কথা জানান গবেষকরা।
থাইল্যান্ডে এখন পর্যন্ত ৩৩ জনের দেহে করোনা ভাইরাসের উপস্থিতির কথা বলা হলেও যুক্তরাজ্যের ইউনিভার্সিটি অব সাউদ্যাম্পটনের অধ্যাপক শেংজি লাই জানান, তাদের প্রাপ্ত গবেষণা বলছে, উহান ভ্রমণে নিষেধাজ্ঞা আরোপের আগেই অন্তত ২০৭ ব্যক্তি করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে থাকতে পারেন।
ইন্দোনেশিয়ায় এখন পর্যন্ত কারো দেহে করোনা শনাক্ত করা না গেলেও বিশেষজ্ঞদের গবেষণা বলছে অন্তত ৩৩ জন করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে থাকতে পারেন। মালয়েশিয়া, ভিয়েতনাম, কম্বোডিয়া ও অস্ট্রেলিয়াতেও আক্রান্তের যে সংখ্যা বলা হচ্ছে প্রকৃতপক্ষে তা আরও বেশি বলেও উল্লেখ করা হয়।
আফ্রিকার কোনও দেশে এখনো করোনাভাইরাস শনাক্তের খবর পাওয়া না গেলেও মহাদেশটিতে চীনা শ্রমিকরা কাজ করায় ভাইরাস ছড়িয়ে থাকতে পারে বলে ধারণা হার্ভার্ড টি এইচ চান স্কুল অব পাবলিক হেলথের গবেষক মার্ক লিপসিচের। আফ্রিকার মধ্যে মিশর, আলজেরিয়া ও দক্ষিণ আফ্রিকাকে সবচেয়ে ঝুঁকিপূর্ণ হিসেবে উল্লেখ করা হয়।
গত ৩১ ডিসেম্বর চীনের মধ্যাঞ্চলীয় হুবেই প্রদেশের উহানে প্রাণঘাতী করোনা ভাইরাসের উপস্থিতি নিশ্চিত করা হয়। এরপর ৩১ প্রাদেশিক পর্যায়ের অঞ্চল ছাড়াও বিশ্বব্যাপী ছড়িয়েছে এটি। এ ভাইরাসে আক্রান্ত মানুষের সংখ্যা এবং প্রাণহানি বাড়তে থাকায় বিশ্বব্যাপী জরুরি অবস্থা জারি করেছে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা। এরইমধ্যে সংক্রমণ ঠেকাতে ব্যাপক সতর্কতামূলক ব্যবস্থাও নিয়েছে অধিকাংশ দেশ।
সান নিউজ/সালি
Newsletter
Subscribe to our newsletter and stay updated.