নিজস্ব প্রতিবেদক : প্রায় ঘণ্টাব্যাপী একটি প্রতিবেদন সম্প্রচার করে বার বার প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নাম জড়িয়ে অভিযোগ করা হচ্ছে। কিন্তু প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে কোনও যোগসূত্র দেখাতে পারলেন না।
সম্প্রতি আল–জাজিরার প্রচারিত তথ্যচিত্র ‘অল দ্য প্রাইম মিনিস্টারস মেন’ প্রসঙ্গে আদালতে এ কথা বলেন এ্যামিকাস কিউরি হিসেবে দায়িত্ব পাওয়া জ্যেষ্ঠ আইনজীবী কামাল উল আলম।
তিনি বলেন, গণতান্ত্রিকভাবে নির্বাচিত রাষ্ট্রের প্রধান ব্যক্তিকে বিতর্কিত করা হলে রাষ্ট্রকেই বিতর্কিত করা হয়। বাংলাদেশে আল–জাজিরার সম্প্রচার বন্ধের নির্দেশনা চেয়ে করা এক রিটের গ্রহণযোগ্যতার ওপর শুনানিতে অংশ নিয়ে একথা বলেন এ্যামিকাস কিউরির দায়িত্ব পাওয়া কামাল উল আলম।
তিনি আরও বলেন, রিট আবেদনকারীর সংক্ষুব্ধ হওয়ার যৌক্তিকতা নেই। রিটটি গ্রহণযোগ্য নয় । বিচারপতি মো. মুজিবুর রহমান মিয়া ও বিচারপতি মো. কামরুল হোসেন মোল্লার সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ কামাল উল আলমের শুনানি গ্রহণ করেন।
এর আগে এ্যামিকাস কিউরি হিসেবে দায়িত্ব পাওয়া আরও দুজন আদালতে তাদের বক্তব্য পেশ করেন। আইনজীবী এ জে মোহাম্মদ আলী ও ফিদা এম কামালও রিট গ্রহণযোগ্য নয় বলে মত দেন। আরও তিনজন আইনজীবী এ্যামিকাস কিউরি হিসেবে তাদের বক্তব্য তুলে ধরবেন। তারা হলেন আইনজীবী আবদুল মতিন খসরু, প্রবীর নিয়োগী ও শাহদীন মালিক।
কাতার ভিত্তিক টেলিভিশন চ্যানেল আল-জাজিরার সম্প্রচার বাংলাদেশে বন্ধের নির্দেশনা চেয়ে করা রিটের গ্রহণযোগ্যতাসহ পাঁচটি বিষয়ে মতামত দিতে ১০ ফেব্রুয়ারি এ্যামিকাস কিউরি হিসেবে ৬ জন আইনজীবীর নাম ঘোষণা করেন হাইকোর্ট।
এ্যামিকাস কিউরি হলেন আদালতের আইনি সহায়তাকারী। রিট আবেদনকারীর সংক্ষুব্ধ হওয়ার দিক, রিটের প্রার্থনা অনুসারে এই আদালত থেকে কোনও আদেশ দেওয়া হলে বিদেশি কোনও টিভি চ্যানেলের ক্ষেত্রে তা কার্যকর করা যাবে কি না, কোনও আইনি নোটিশ ছাড়া রিট (ম্যান্ডামাস) চলে কি না, রিটের প্রার্থনা অনুসারে এই আদালত থেকে আল-জাজিরার তথ্যচিত্রটি সব মাধ্যমে থেকে বন্ধ করার কোনও নির্দেশনা দেওয়ার প্রয়োজন আছে কি না, ১ ফেব্রুয়ারি তথ্যচিত্রটি প্রকাশের পর এত দেরিতে রিট করার প্রেক্ষাপটে কোনও নির্দেশ দেওয়ার প্রয়োজন আছে কি না—এসব বিষয়ে এ্যামিকাস কিউরিদের মতামত দিতে বলা হয়েছে।
আদালতে রিট আবেদন করেন আইনজীবী এনামুল কবির ইমন। আল-জাজিরায় ১ ফেব্রুয়ারি রাতে ‘অল দ্য প্রাইম মিনিস্টারস মেন’ শিরোনামে একটি প্রতিবেদন প্রচার করা হয়। ভিডিও-সংবলিত ওই ডকুমেন্টারি বিভ্রান্তিকর, বিদ্বেষমূলক ও মানহানিকর উল্লেখ করে দেশে আল-জাজিরার সম্প্রচার ও ওয়েবসাইট বন্ধের নির্দেশনা চেয়ে সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী এনামুল কবির ইমন ৮ ফেব্রুয়ারি রিটটি করেন। ইমন সুনামগঞ্জ জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক।
আল-জাজিরায় প্রচারিত প্রতিবেদনকে মিথ্যা ও অবমাননাকর’ আখ্যা দিয়েছে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের আন্তঃবাহিনী জনসংযোগ পরিদফতরও (আইএসপিআর) এই প্রতিবেদনের তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়েছে। প্রতিবাদ জানিয়েছে বাংলাদেশ পুলিশও।
সান নিউজ/এসএ