আন্তর্জাতিক ডেস্ক: পশ্চিম আফ্রিকার দেশ মালিতে পৃথক হামলার ঘটনায় বেসামরিক নাগরিকসহ কমপক্ষে ৬৪ জন নিহত হয়েছেন। এ ঘটনায় দেশটিতে ৩ দিনের শোক ঘোষণা করা হয়েছে।
আরও পড়ুন: নতুন স্যাটেলাইট চুক্তি সই হচ্ছে
শুক্রবার (৮ সেপ্টেম্বর) ব্রিটিশ সংবাদ মাধ্যম বিবিসি এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে।
দেশটির অন্তর্বর্তী সরকারের বরাত দিয়ে প্রতিবেদনে বলা হয়, জঙ্গিরা উত্তর-পূর্ব মালির একটি নদীতে নৌকায় হামলা চালিয়ে কমপক্ষে ৪৯ বেসামরিক নাগরিককে হত্যা করেছে। একই জঙ্গিরা একটি সেনা ঘাঁটিতে হামলা চালিয়ে ১৫ জন সৈন্যকে হত্যা করে।
আরও পড়ুন: ঢাকায় রুশ পররাষ্ট্রমন্ত্রী
এদিকে হামলার সময় প্রায় ৫০ জন জঙ্গিও মারা গেছে বলে জানা গেছে। এ ঘটনায় ৩ দিনের জাতীয় শোক ঘোষণা করেছে সরকার।
বিবিসির প্রতিবেদনে বলা হয়, রাশিয়ান ওয়াগনার গ্রুপের ভাড়াটে সৈন্যরা মালির অস্থিতিশীল পরিস্থিতির মোড় সেনাবাহিনীর দিকে ঘুরিয়ে দিচ্ছে বলে সামরিক বাহিনীর দাবি সত্ত্বেও সেখানে জঙ্গিদের হুমকি বাড়ছে।
আরও পড়ুন: মালিতে ভয়াবহ হামলা, নিহত ৬৪
গত মাসের শেষের দিক থেকে মালির উত্তরাঞ্চলীয় শহর টিমবুকটু অবরোধের মধ্যে রয়েছে। সম্প্রতি দেশটিতে পরিবহনেও বেশ কয়েকটি হামলা হয়েছে।
সরকারের দেওয়া সর্বশেষ এ হামলা ও প্রাণহানির প্রতিবেদনটি অবশ্য স্বাধীনভাবে যাচাই করতে পারেনি বিবিসি।
জানা গেছে, নাইজার নদীতে গাও শহর থেকে মোপ্তির দিকে যাওয়ার সময় বেসামরিক নাগরিকদের বহনকারী একটি নৌকায় হামলা চালায় জঙ্গিরা। পরে গাও অঞ্চলের বুরেম সার্কেলে একটি সেনা ক্যাম্পেও হামলা চালায় তারা।
আরও পড়ুন: পেড্রো আসছেন না জি-২০ সম্মেলনে
দেশটির সেনাবাহিনী সোশ্যাল মিডিয়ায় বলছে, বেলা ১১ টার দিকে সশস্ত্র সন্ত্রাসী গোষ্ঠী নৌকাটিতে আক্রমণ করে।
হামলার শিকার নৌকাটির পরিচালনার দায়িত্বে থাকা কোমানভ নামক সংস্থা বার্তা সংস্থা এএফপিকে জানান, নৌকাটির ইঞ্জিন লক্ষ্য করে কমপক্ষে ৩ টি রকেট হামলা চালানো হয়েছে।
আরও পড়ুন: মন্ত্রিপরিষদ সচিব হাসপাতালে ভর্তি
নাম প্রকাশ না করার শর্তে কোমনাভের একজন কর্মকর্তা বলেন, নৌকাটি নদীতে স্থির অবস্থায় ছিল। সে সময় সেনাবাহিনী যাত্রীদের সরিয়ে নিতে গিয়েছিল।
উল্লেখ্য, ২০২০ সাল থেকে মালি শাসন করছে সামরিক জান্তা। নিরাপত্তাহীনতা বাড়তে থাকায় দেশটিতে ২০২০ ও ২০২১ সালে পরপর দুটি অভ্যুত্থান ঘটে। তৎকালীন প্রেসিডেন্ট ইব্রাহিম বুবাকার কেইতার বিরুদ্ধে ব্যাপক বিক্ষোভের পর জান্তা যখন ক্ষমতা দখল করে, তখন তাদের পক্ষে ব্যাপক জনসমর্থন ছিল।
আরও পড়ুন: নাটোর-৪ আসনের নির্বাচন ১১ অক্টোবর
মূলত অর্থনৈতিক অনিশ্চয়তা, বিতর্কিত নির্বাচন এবং দীর্ঘস্থায়ী নিরাপত্তাহীনতায় দেশটির জনগণ ক্ষুব্ধ ছিল। এরপর মালির সামরিক সরকার দেশের কিছু অংশ নিয়ন্ত্রণকারী ইসলামপন্থিদের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে কিছুটা অগ্রগতি অর্জন করে।
আফ্রিকা মহাদেশের অন্যতম বৃহৎ দেশ মালি। সাহেল অঞ্চল জুড়ে বিভিন্ন সশস্ত্র গোষ্ঠীগুলোর মধ্যে যে সংঘাত চলছে, দরিদ্র এই দেশটি তার উপকেন্দ্র। দেশটিতে বছরের পর বছর ধরে জঙ্গিদের সাথে সংঘর্ষে হাজার হাজার সৈন্য ও বেসামরিক নাগরিক নিহত হয়েছেন। এছাড়া বাস্ত্যুচুত হয়েছেন প্রায় ২০ লাখ মানুষ।
সান নিউজ/এনজে