ছবি: সংগৃহীত
আন্তর্জাতিক
ভারতের চাল রফতানিতে নিষেধাজ্ঞা

বিশ্বজুড়ে খাদ্য সংকটের সম্ভাবনা

আন্তর্জাতিক ডেস্ক: বিশ্বের সর্ববৃহৎ চাল রফতানিকারক দেশ হলো ভারত। সারা বিশ্বের মোট চাহিদার ৪০ ভাগই আসে এ দেশ থেকে। সম্প্রতি বিশ্বের কোটি কোটি মানুষের অতি প্রয়োজনীয় এই খাদ্যপণ্যটির রফতানিতে দেশটির নিষেধাজ্ঞার ফলে বিশ্বব্যাপী খাদ্য সংকট দেখা দিতে পারে বলে আশঙ্কা করছেন বাজার বিশ্লেষকরা।

আরও পড়ুন: ভারতে ট্রেনে গুলি, নিহত ৪

বুধবার (২ আগস্ট) ব্রিটিশ সংবাদ মাধ্যম বিবিসি এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে।

চলতি বছরের ২০ জুলাই নন-বাসমতি সাদা চাল রফতানিতে নিষেধাজ্ঞা দেয় ভারত। এর প্রভাবে যুক্তরাষ্ট্র এবং কানাডায় ভারতীয় চালের সংকট দেখা দেয়।

মূলত, অভ্যন্তরীণ বাজারে চালের দাম স্থিতিশীল রাখতে এমন উদ্যোগ নিয়েছে দেশটি।

আরও পড়ুন: বঙ্গোপসাগরে ট্রলারডুবি, নিখোঁজ ৩০

সামাজিক মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া ভিডিওতে দেখা গেছে, আতঙ্কিত হয়ে চাল কিনছেন মানুষ। ফলে বেড়ে গেছে এ পণ্যের দামও।

বিশ্বব্যাপী কয়েক হাজার জাতের চাল উৎপাদন হয়। তবে আমদানি-রফতানি হয় মূলত ৪ জাতের চাল। এর মধ্যে সবচেয়ে বেশি বেঁচাকেনা হয় সরু লম্বা দানার ইন্ডিকা চাল।

বাকিগুলো হলো- সুগন্ধি বাসমতি, ছোট দানার জাপোনিকা (সুসি এবং রিসোটস তৈরিতে ব্যবহৃত হয়) এবং আঠালো চাল (মিস্টি তৈরিতে ব্যবহার করা হয়)।

আরও পড়ুন: দেশে ফিরেছেন ১১৪০১৮ হাজি

ভারতের পর চাল রফতানির শীর্ষে থাকা অন্য দেশগুলো হলো- থাইল্যান্ড, ভিয়েতনাম, পাকিস্তান এবং যুক্তরাষ্ট্র।

অপরদিকে চাল আমদানিকারক দেশগুলোর মধ্যে শীর্ষে রয়েছে- চীন, ফিলিপাইন এবং নাইজেরিয়া।

আরও পড়ুন: চীনে ভয়াবহ বন্যায় নিহত ২০

অভ্যন্তরীণ বাজারে ঘাটতি দেখা দিলে চাল আমদানি করে ইন্দোনেশিয়া এবং বাংলাদেশ। বর্তমানে আফ্রিকা মহাদেশেও চালের চাহিদা বাড়ছে। এছাড়া কিউবা এবং পানামাতেও শক্তির মূল উৎস এই খাদ্যপণ্যটি।

গত বছর ভারত ১৪০ টি দেশে ২২ মিলিয়ন টন চাল রফতানি করেছে, যার মধ্যে ৬ মিলিয়ন টন ছিল তুলনামূলক কমদামী ইন্ডিকা চাল। (২০২২ সালে বিশ্বব্যাপী চাল আমদানি-রফতানি হয়েছে প্রায় ৫৬ মিলিয়ন টন)।

আরও পড়ুন: সাধারণ ক্ষমা পেলেন সু চি

২০২২ সালে সারা বিশ্বে যত চাল আমদানি-রফতানি হয়েছে, তার ৭০ শতাংশ ছিল ইন্ডিকা চাল। বর্তমানে ভারত এ চাল রফতানি বন্ধ করে দিয়েছে। সে বছর দেশটি খুদের চাল এবং বাসমতি চাল রফতানির ওপর ২০ শতাংশ কর আরোপ করে। এবার আসলো পুরোপুরি নিষেধাজ্ঞা।

প্রত্যাশিতভাবেই ভারতের চাল রফতানি নিষেধাজ্ঞা বিশ্বব্যাপী আতঙ্ক সৃষ্টি করেছে।

আইএমএফের অর্থনীতিবিদ পিয়ে অলিভার গোরিনচাস জানান, এ নিষেধাজ্ঞা চালের দাম বাড়িয়ে দেবে এবং বিশ্বব্যাপী শস্যের দাম ১৫ শতাংশের বেশি বাড়তে পারে।

আরও পড়ুন: গার্ডার লঞ্চিং মেশিন পড়ে নিহত ১৬

জাতিসংঘের খাদ্য ও কৃষি সংস্থার (এফএও) বাজার বিশ্লেষক সিরলে মুস্তাফা বলেন, ভারত এমন সময় চালের ওপর নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে, যখন সময়টা ভালো নয়।

প্রথমত, ২০২২ সালের শুরু থেকেই চালের দাম বাড়ছে। গত জুন থেকে এ পর্যন্ত যা ১৪ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়েছে।

দ্বিতীয়ত, চালের সরবরাহে এখন বিঘ্ন দেখা যাচ্ছে। বাজারে নতুন চাল আসতে আরও ৩ মাস বাকি আছে।

আরও পড়ুন: মামলা দিয়ে নির্বাচন থেকে সরানো যাবে না

দক্ষিণ এশিয়ায় অস্বাভাবিক আবহাওয়া- ভারতে অধিক বৃষ্টি ও পাকিস্তানে বন্যা চাল সরবরাহে বিঘ্ন ঘটিয়েছে। এছাড়া সারের মূল্য বৃদ্ধির ফলে চালের মূল্যও বেড়েছে।

অন্যদিকে যেসব দেশ চাল আমদানি করে, তাদের মুদ্রার মান কমে যাওয়ায় আমদানি বেড়ে গেছে। মুদ্রাস্ফীতির প্রভাবে এ ব্যবসার ব্যয়ও বেড়েছে।

আরও পড়ুন: রংপুর যাচ্ছেন প্রধানমন্ত্রী

জাতিসংঘের বাজার বিশ্লেষক মুস্তফা বলেন, আমরা এমন পরিস্থিতিতে আছি, যেখানে আমদানিকারকরা বাধার মধ্যে পড়েছেন। এসব আমদানিকারক মূল্যবৃদ্ধির সাথে নিজেদের মানিয়ে নিতে পারবেন কিনা, এখন এটিই দেখার বিষয়।

ভারতের নিজস্ব মজুদকৃত ৪১ মিলিয়ন টন চাল রয়েছে, যা প্রয়োজনের তুলনায় প্রায় ৩ গুণ। এসব চাল দেশটির ৭০ কোটি মানুষকে কম দামে দেওয়া হয়।

২০২২ সালে বড় ধরনের মূল্যস্ফীতির মধ্যে দিয়ে গেছে ভারত। গত অক্টোবর থেকেই বাজারে চালের দাম বেড়েছে ৩০ শতাংশ, যা নির্বাচনের আগে দেশটির সরকারের ওপর বাড়তি চাপ তৈরি করেছে।

আরও পড়ুন: পাকিস্তানের সংসদ ভেঙে দেওয়ার ঘোষণা

ভারতের কৃষিনীতির বিশেষজ্ঞ দ্বেবিন্দর শর্মা বলেন, এল নিনোসহ অস্বাভাবিক আবহাওয়ার প্রভাবে চালের উৎপাদনে ঘাটতি দেখা দিতে পারে। এ কারণে সরকার আগে থেকেই প্রস্তুতি নিয়ে রাখতে চাইছে।

অনেকের বিশ্বাস, ভারতের চাল রফতানির ওপর নিষেধাজ্ঞা দেওয়া উচিত নয়। কারণ, এ নিষেধাজ্ঞা বিশ্ব খাদ্য নিরাপত্তার জন্য ক্ষতিকর।

খাদ্য বিষয়ক সংস্থা ইফরি বলছে, বিশ্বের আমদানিকারক ৪২ টি দেশ তাদের মোট আমদানির অর্ধেক চালই ভারত থেকে আনে। আফ্রিকার কিছু দেশ রয়েছে, যেগুলো মোট আমদানির ৮০ শতাংশ যায় এশিয়ার এ দেশটি থেকে।

আরও পড়ুন: ফল পাল্টানোর চেষ্টায় অভিযুক্ত ট্রাম্প

বিশেষজ্ঞদের মতে, বিশ্বে খাদ্যপণ্যের ওপর নিষেধাজ্ঞা নতুন নয়। রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ শুরুর পর ইন্দোনেশিয়া পাম ওয়েল, আর্জেন্টিনা মাংস, তুরস্ক শস্য রফতানিতে নিষেধাজ্ঞা দেয়।

তবে ভারতের চাল রফতানির বিষয়টি অন্য, যার বড় প্রভাব পড়বে পুরো বিশ্বে। কারণ তাদের রফতানির ওপর নির্ভরশীল অনেক দেশ।

এ হঠাৎ নিষেধাজ্ঞা খাদ্য নিশ্চয়তাকে তো শঙ্কায় ফেলবেই, সেই সাথে বিশ্বে ভারতেরও সুনাম ক্ষুন্ন হবে। কারণ বিশ্বে তখন আর ভারতকে নির্ভরযোগ্য চাল রফতানিকারক হিসেবে বিবেচনা করবে না। সূত্র: বিবিসি।

সান নিউজ/এনজে

Copyright © Sunnews24x7
সবচেয়ে
পঠিত
সাম্প্রতিক

জায়েদের ফোন পানিতে ছুড়ে ফেললেন সাকিব

বিনোদন ডেস্ক: বাংলাদেশ ক্রিকেটের...

রাজধানীতে তাপমাত্রা বাড়ছে

নিজস্ব প্রতিবেদক: চলতি তাপপ্রবা...

চীনে সড়ক ধসে নিহত ১৯ 

আন্তর্জাতিক ডেস্ক: চীনের দক্ষিণাঞ...

টিভিতে আজকের খেলা

স্পোর্টস ডেস্ক: প্রতিদিনের মতো আজ বুধবার (১লা মে) বেশ কিছু খ...

বিরক্ত হয়েই শাকিবের পরিবার এই সিদ্ধান্ত 

বিনোদন ডেস্ক: ঢাকাই সিনেমার শীর্ষ নায়ক শাকিব খানকে নতুন করে...

এলপি গ্যাসের দাম কমলো 

নিজস্ব প্রতিবেদক: ভোক্তা পর্যায়ে আরেক দফা কমানো হলো তরলীকৃত...

লিওনার্দো দা ভিঞ্চি’র প্রয়াণ

সান নিউজ ডেস্ক: আজকের ঘটনা কাল অতীত। প্রত্যেকটি অতীত সময়ের স...

বজ্রপাতে প্রাণ গেল ২ জনের

জেলা প্রতিনিধি : রাঙামাটিতে বজ্রপাতে ২ জনের মৃত্যু হয়েছে। বৃ...

ঢাকায় ফিরল ৮ বাংলাদেশির লাশ  

নিজস্ব প্রতিবেদক : ভূমধ্যসাগর পাড়ি দিয়ে ইউরোপ যাওয়ার সময় তিউ...

শনিবার খুলছে স্কুল-কলেজ, রোববার প্রাথমিক 

নিজস্ব প্রতিবেদক: পবিত্র রমজান, ঈ...

লাইফস্টাইল
বিনোদন
sunnews24x7 advertisement
খেলা