পরিবেশ

এসেছে নৌ-কারিগরদের সুদিন 

নিজস্ব প্রতিনিধি, রংপুর : বর্ষার মৌসুমে বৃষ্টি ও উজানের ঢলে তিস্তা নদীতে পানি বেড়েছে। নদীর তীরবর্তী চরের নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়ে পানি বসতবাড়িতে ঢুকে পড়েছে। বর্ষার শুরুতে ইতোমধ্যে কয়েক হাজার পরিবার পানিবন্দিও হয়েছে। তলিয়ে গেছে রাস্তা-ঘাট, আবাদি জমিসহ ধান ও পাটের ক্ষেত।

বন্যা আর পানি বৃদ্ধি তিস্তা পারের মানুষের লালিত স্বপ্নকে যেন ভেঙে চুরমার করে দেয়। কিন্তু এই পানি বৃদ্ধি এক শ্রেণির মানুষের যেন ভাগ্যের পরিবর্তনও এনে দেয়। এই ভাগ্যবানরা হলেন, তিস্তা পারের নৌ-কারিগর। প্রতি বছরের ন্যায় এবারও বর্ষা মৌসুমের শুরুতেই সারা দেশের মতো রংপুর অঞ্চলেও ভারি বর্ষণ ও বৃষ্টিতে ব্যাপক পানি তিস্তা নদীতে। সঙ্গে সঙ্গে তিস্তার তীরবর্তী এ এলাকায় নতুন নৌকা তৈরি ও আগের পুরাতন নৌকা মেরামতের কাজ শুরু হয়েছে পুরোদমে।

রংপুরের কাউনিয়া উপজেলার তিস্তার তীরবর্তী তালুক শাহাবাজ এলাকার নৌ-কারিগর সুরেশ চন্দ্র। বাবা নীলকান্ত চন্দ্র রায়ের কাছে শেখা নিজের জীবিকার একমাত্র পথ হিসেবে নিয়েছেন তিনি ও ছোট ভাই নরেশ চন্দ্র। দীর্ঘ দশ মাস ক্ষেত খামারে দিন মজুরের কাজ করে কোন রকমে জীবিকা নির্বাহ করতেন তারা। আর এই বর্ষার মৌসুম আসলেই দু’মাস যেন তাদেরে ব্যস্ততার অন্ত থাকেনা।

বুধবার (৭ জুলাই) সরেজমিনে দেখা যায়, কাউনিয়া উপজেলার তালুক শাহবাজের এই দুই নৌ-কারিগর ব্যস্ত সময় পার করছেন। একইসাথে আশ-পাশ এলাকার অনেক কৃষক ও মাঝিরাও এসে নৌকা তৈরির জন্য আগাম অর্ডার দিয়ে যাচ্ছেন তাদেরকে নিজের পছন্দের নৌকার। কাঠ, বাঁশ, প্লেনসিট ব্যাটোন, আলকাতরাসহ আর অন্যান্য উপকরণ দিয়ে তৈরি এসব নৌকা বিক্রি হয় সাইজ অনুযায়ী বিভিন্ন দামে।

নৌকা তৈরির কারিগর সুরেশ চন্দ্রের জানায়, বর্ষার এই সময়ে আমাদের ভালো আয়-রোজগার হয়। দুমাসে সুরেশ ২৫-৩০টি নৌকা তৈরি করে প্রায় দুই থেকে আড়াই লাখ টাকা উপার্জন করেন। উপার্জনের এই টাকা দিয়ে দু’বছর আগে এক মেয়েকে বিয়ে দিয়েছেন তিনি। এছাড়াও এক ছেলে ও মেয়ে বর্তমানে কলেজ ও স্কুলে পড়ালেখা করছে।

দামের বিষয়ে সুরেশ বলেন, ১৬-১৮ হাতের একটি নৌকা তৈরি করতে নেন ১২-১৫ হাজার টাকা। এছাড়া ২০ হাত নৌকা ৩০ হাজার, ২৪ হাত- ৪০ হাজার এবং ৩০ হাতের নৌকা তৈরিতে ৬০ হাজার টাকা পর্যন্ত নেন তিনি। তবে কাঠ, পেরেক আর প্লেনসিটের দাম আগের মতো নেই। ফলে তৈরিতে খরচ বেশি লাগে। তাই আগের চেয়ে দামও একটু বাড়িয়ে দিয়েছেন তিনি।

নৌকা অর্ডার দিতে আসা কৃষক তুষার মিয়া জানান, আমরা তিস্তা পারের মানুষ কষ্টের শেষ নেই আমাদের। সব সময় ভাঙন আতঙ্কে বর্ষার মৌসুম পার করতে হয়। তার উপর বছরে একবার ফসল চাষ করি সেটিও ঘরে তোলা নিয়ে অনিশ্চয়তায় ভুগি। এই মৌসুমে যোগাযোগ ব্যবস্থা একেবারে ভেঙে যায় এখানে। তাই ফসল নৌকায় করে ঘরে তুলতে ও পরিবারের সদস্যদের নিয়ে যাতায়াত করতে একটা নৌকা অর্ডার দিতে এসেছি।

কৃষক হাসান আলী বলেন, তিস্তার তীরে বাড়ি হওয়ার প্রতিবছর বেড়িবাঁধ ভাঙনের কবলে পরে দীর্ঘ দেড় থেকে দুমাস রাস্তাঘাট তলিয়ে থাকে তার। চলাচলের জন্য তিনিসহ কয়েকটি পরিবার মিলে একটি নৌকা কিনতে এসেছেন।

সান নিউজ/এসএ

Copyright © Sunnews24x7
সবচেয়ে
পঠিত
সাম্প্রতিক

তারেক রহমানের ৩১ দফা বাস্তবায়নে হাতিয়াতে উঠান বৈঠক

নোয়াখালীর দ্বীপ উপজেলা হাতিয়াতে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান ঘোষ...

ইসলামী ব্যাংক কর্মকর্তাদের বিশেষ যোগ্যতা মূল্যায়ন পরীক্ষার ফলাফল প্রকাশ

ইসলামী ব্যাংক কর্মকর্তাদের বিশেষ যোগ্যতা মূল্যায়ন পরীক্ষার ফলাফল প্রকাশ ইসলাম...

বাগেরহাটের কলার বাম্পার ফলন

বাগেরহাটের মোরেলগঞ্জে কলার বাম্পার ফলন হয়েছে। জমিতে বসেই কলার দাম ভালো পাওয়ায়...

ধামাচাপা দেওয়ার চেষ্টা করা হয়েছে শাপলা চত্বরের ঘটনা

ধামাচাপা দেওয়ার চেষ্টা করা হয়েছে শাপলা চত্বরের গণহত্যার ঘটনা এমন মন্তব্য কর...

একীভূত হচ্ছে না গণঅধিকার পরিষদ ও এনসিপি

সম্প্রতি গুঞ্জন উঠে দেশের তরুণদের নিয়ে গঠিত দল দুইটি একীভূত হওয়ার বিষয়ে। তবে...

ব্রেন টিউমারে আক্রান্ত হয়ে লন্ডনে চিকিৎসাধীন ইলিয়াস কাঞ্চন

নিরাপদ সড়ক চাই (নিসচা) আন্দোলনের প্রতিষ্ঠাতা ও চিত্রনায়ক ইলিয়াস কাঞ্চন ব্রেন...

আ.লীগ নিষিদ্ধের সিদ্ধান্ত নেবে জনগণ, সরকার নয়: এজেডএম জাহিদ হোসেন

বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ডা. এজেডএম জাহিদ হোসেন বলেছেন, প্রধান উপদেষ্টার ব...

জামায়াত আমিরের সাথে সুইডেন রাষ্ট্রদূতের সাক্ষাৎ

বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর আমির ডা. শফিকুর রহমানের সঙ্গে ঢাকায় নিযুক্ত সুইডেনে...

দেশে ভূমিধস-জলাবদ্ধতার শঙ্কা, ৮ বিভাগেই ভারী বৃষ্টির সতর্কতা

বঙ্গোপসাগরে সুস্পষ্ট লঘুচাপ ও সক্রিয় মৌসুমি বায়ুর প্রভাবে আগামী ৭২ ঘণ্টায় রা...

আওয়ামী লীগের নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহারের কোনো সম্ভাবনা নেই

রাজনৈতিক কার্যক্রমে আওয়ামী লীগের নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহারের কোনো সম্ভাবনা নেই বল...

লাইফস্টাইল
বিনোদন
sunnews24x7 advertisement
খেলা