সারাদেশ

নোয়াখালীতে প্রকল্পের অর্থ আত্মসাতের অভিযোগ

নোয়াখালী প্রতিনিধি: নোয়াখালীর কবিরহাট উপজেলার করিমের নেছা সাহেবানী এতিমখানা ও হাফেজিয়া মাদরাসার পরিচালনা কমিটির সভাপতি সৈয়দ আবদুল মোদাচ্ছের হোসাইনী মাসুক চিশতীর যোগসাজশে দুটি বেসরকারী এতিমখানার ক্যাপিটেশন গ্র্যান্ট প্রকল্পের অর্থ আত্মসাতের অভিযোগ উঠেছে।

আরও পড়ুন: ডিজিটাল বাংলাদেশের সংযুক্তির মহাসড়ক

গতকাল বুধবার (২৫ জানুয়ারি) দুপুরে এতিমের টাকা আত্মসাতের অভিযোগ এনে উপজেলার পদুয়া গ্রামের বাসিন্দা হারুনুর রশীদ নোয়াখালী ও লক্ষীপুর জেলা প্রশাসক বরাবর লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন। এছাড়াও কবিরহাট উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) ও লক্ষীপুর সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা বরাবরও একই লিখিত অভিযোগ দেন তিনি। লিখিত অভিযোগের অনুলিপি দেওয়া হয়, দুর্নীতি দমন কমিশন নোয়াখালী ও লক্ষীপুর, জেলা সমাজ সেবা অধিদপ্তর ও জেলা প্রেসক্লাব বরাবর।

আরও পড়ুন: বিদেশি শিক্ষার্থী কমানোর প্রস্তাব!

লিখিত অভিযোগ ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, অভিযুক্ত সৈয়দ আবদুল মোদাচ্ছের হোসাইনী মাসুক চিশতী কবিরহাট উপজেলার পদুয়া গ্রামের করমবক্স বাজার সংলগ্ন করিমের নেছা সাহেবানী এতিমখানা ও হাফেজিয়া মাদরাসা পরিচালনা কমিটির সভাপতি এবং পাশ্ববর্তী লক্ষীপুর জেলার সদর উপজেলার খালেকগঞ্জ বাজার সংলগ্ন শাহ জকিউদ্দিন হোসাইনী এতিমখানা ও হাফেজিয়া মাদরাসার অন্যতম পরিচালক। এই দুটি প্রতিষ্ঠান তিনি পারবিারিক সূত্র ধরে দায়িত্ব পেয়ে একক নিয়ন্ত্রণে পরিচালনা করে আসছেন। দীর্ঘ কয়েক বছর ধরে মাসুক চিশতীর যোগসাজশে দুটি মাদরাসার মধ্যে স্বমনয় করে ক্যাপিটেশন গ্র্যান্টভুক্ত ভুয়া এতিমের তালিকা তৈরী করা হয়। ওই দুটি মাদরাসার গ্র্যান্টভুক্ত এতিমদের তালিকায় এক ছাত্রের নাম দুটি তালিকায় দুইবার ব্যবহার করে ভুয়া এতিমের নাম ভাঙ্গিয়ে সরকারি টাকা আত্মসাত করে আসছেন তিনি। দুটি এতিমখানার গ্র্যান্টভুক্ত এতিমদের তালিকায় দেখা যায় যায় অনেক ছাত্রের নাম দুটি এতিমখানার তালিকায় হয়েছে। এতে করে অভিযুক্ত মাসুক চিশতী দুটি এতিমখানার মাধ্যমে এতিমের নামে টাকা তুলে গত কয়েক বছরে সরকারের কোটি কোটি টাকা দুর্নীতির মাধ্যমে আত্মসাৎ করে আসছেন। দুটি এতিমখানায় নামমাত্র এতিম থাকলেও খাতা-কলমে ১১৫জনের ওপরে দেখানো হয়েছে।

আরও পড়ুন: রপ্তানি আয় বেড়েছে দেড় লাখ কোটি টাকা

এতিমখানায় সরেজমিন দেখা গেছে, বেসরকারী এতিমখানার ক্যাপিটেশন গ্র্যান্ট প্রকল্পে এতিম ছাত্রদের তালিকা তৈরী, অর্থ গ্রহণে ও বন্টনে মানা হয়নি সরকারি নীতিমাল। এদের অনেকের বাবা-মা আছেন। তাদেরও গ্র্যান্ট ক্যাপিটেশন এতিম হিসেবে দেখানো হয়েছে। গ্র্যান্টভুক্ত এতিম শিক্ষার্থীরা নিজেদের বাড়ি থেকে খাবার নিয়ে আসে এবং তারা তাদের ভর্তি থেকে শুরু সকল শিক্ষা কার্যক্রম তাদের টাকায় চালিয়ে আসছে। স্থানীয়দের অভিযোগ, কবিরহাটের করিমের নেছা সাহেবানী এতিমখানা ও হাফেজিয়া মাদরাসায় কোনো এতিম ছাত্র নেই। এতিমখানার কর্মকর্তারা এতিমের নামে সরকারি অর্থ বরাদ্দ নিয়ে অর্থ আত্মসাত করছেন। তবে এতিমখানা পরিচালকের দাবি, এতিমরা ছুটিতে রয়েছে।

অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে করিমের নেছা সাহেবানী এতিমখানা ও হাফেজিয়া মাদরাসার পরিচালনা কমিটির সভাপতি সৈয়দ আবদুল মোদাচ্ছের হোসাইনী মাসুক চিশতী বলেন, অনেক জায়গায় অসহায়দেরকে প্রত্যয়ন পত্র থাকলে এতিম হিসেবে গণ্য করা হয়। তার প্রতিষ্ঠানে এতিম আছে, এতিমের বাহিরেও আছে। লুকোচুরি করার কিছুই নেই। এতিমের বাহিরে কত জন আছে এতিমখানায় গেলে তা দেখা যাবে বলেও মন্তব্য করেন তিনি। দুটি এতিমখানায় শতাধিক ছাত্রের উপরে গ্র্যান্ট ক্যাপিটেশন ভাতা পাচ্ছেন। অপর এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, এই দুটি মাদরাসার সভাপতি আমি নয়। দুটি এতিমখানা, মাদরাসা,মসজিদসহ কয়েকটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান আমাদের শাহ মোহাইমেন কমপ্লেক্সের অধীনে পরিচালিত হয়ে আসছে। আমি শাহ মোহাইমেন কমপ্লেক্সের সভাপতির দায়িত্ব পালন করছি। কিছু লোক জ্ঞাতি হিংসা থেকে এই গুলো প্রচার করছে বলে তিনি অভিযোগ করেন।

আরও পড়ুন: জার্মানিতে ট্রেন হামলায় নিহত ২

কবিরহাট উপজেলা সমাজসেবা কার্যালয়ের অতিরিক্ত দায়িত্বে থাকা কর্মকর্তা মো.হাফিজুর রহমান বলেন, আমি এখানে নতুন এসেছি। আমার কাছে কোনো তথ্য নেই। এর আগে, উপজেলা সমাজসেবা কর্মকর্তার দায়িত্বে রাসেল এই বিষয়ে বলতে পারবেন বলে তিনি জানান। তবে তিনি গণমাধ্যম কর্মিদের বলেন, কারো যেন ক্ষতি না হয়।

লক্ষীপুর সদর উপজেলা সমাজসেবা কর্মকর্তা মো.শরীফ হোসেন বলেন, ইতিমধ্যে সদর উপজেলায় একটি বেসরকারী এতিমখানার ক্যাপিটেশন গ্র্যান্ট প্রকল্পে অনিয়মের অভিযোগে ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। এই অভিযোগ সত্য হলে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে। তবে এর বাহিরে এই কর্মকর্তা কোনো তথ্য ও মন্তব্য করতে রাজি হননি।

আরও পড়ুন: পাহাড়ে দুই গ্রুপের গোলাগুলি, নিহত ১

কবিরহাট উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) ফাতিমা সুলতানা বলেন, এই বিষয়ে আমি একটি লিখিত অভিযোগ পেয়েছি। উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূর্মি) কর্মকর্তাকে তদন্তের জন্য দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। তদন্ত শেষে বিস্তারিত জানানো হবে।

এই বিষয়ে জানতে নোয়াখালী জেলা প্রশাসক দেওয়ান মাহবুবুর রহমানের মুঠোফোনে কল করা হলেও তিনি ফোন রিসিভ করেননি।

সান নিউজ/এমআর

Copyright © Sunnews24x7
সবচেয়ে
পঠিত
সাম্প্রতিক

উত্তরায় প্রাইভেটকারে অপহরণ; ভিডিও ভাইরালের পর গ্রেপ্তার ২

রাজধানীর উত্তরা এলাকায় চাঞ্চল্যকর অপহরণের ঘটনায় অপহরণে ব্যবহৃত একটি প্রাইভে...

আমাকে চেয়েছিলো যুদ্ধাপরাধী মামলার আসামী বানাতে: ডা. শফিকুর রহমান

বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর আমীর ডা. শফিকুর রহমান বলেছেন, গত সরকারের সময় তিনবার...

ভালুকায় সৌন্দর্য বাড়াতে ইউএনও’র ‘নিজ খরচে’ সবুজ বিপ্লব

ভালুকা উপজেলার পরিবেশ সংরক্ষণ ও নগর সৌন্দর্য বৃদ্ধিতে এক ব্যতিক্রমী উদ্যোগ নি...

কালীগঞ্জে ফিল্মিস্টাইলে যুবককে পিটিয়ে হত্যা

গাজীপুরের কালীগঞ্জে জমি সংক্রান্ত পূর্ব বিরোধের জে...

সড়কহীন ৩৪ কোটি টাকার সেতু

সেতু আছে কিন্তু সংযোগ সড়ক করা হয়নি এমন সেতু ফেনীতে...

লাইফস্টাইল
বিনোদন
sunnews24x7 advertisement
খেলা