সারাদেশ

সিরাজদীখানে পৃথক ৫ সড়কে ডাকাতের আতঙ্ক

মো. নাজির হোসেন, মুন্সীগঞ্জ: মুন্সীগঞ্জের সিরাজদীখান উপজেলার পৃথক ৫টি সড়কে দীর্ঘদিন ধরে ডাকাতের আতঙ্ক নিয়ে চলাচল করে আসছে গাড়ি চালক, যাত্রী ও পথচারিরা। এসব সড়কে শীত মৌসুমে বেশি হয়ে থাকে ডাকাতি। তবে শীত মৌসুম ছাড়াও প্রায়ই ঘটে থাকে ছিনতাই, নানা অপরাধমূলক কর্মকান্ড। এসব সড়কে নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠা করা সম্ভব হচ্ছে না অজানিত কারণে।

আরও পড়ুন : খাগড়াছড়িতে ইউপিডিএফ ডা‌কে সড়ক অবরোধ চলছে

স্হানীয়রা বলেন, এসব সড়কে চলাচল করতে আতঙ্ক মধ্য দিয়ে। তাই রাতের বেলায় আরও ভয়াবহ হয়ে উঠে অপরাধমূলক কর্মকান্ড। এর ফলে কার্যকরী উদ্যোগ না নেওয়ায় গ্রেফতার করা সম্ভব হয় না, অপরাধকারী চক্রকে।

এসব ঘটনার ভুক্তভোগীরা আইনপ্রয়োগকারী সংস্থাগুলোকে অবহিত করলেও আশানুরূপ প্রতিকার পাচ্ছেনা বলে অভিযোগ থাকে। তাই দিনদিন আইনপ্রয়োগকারী সংস্থাগুলোকে অবহিত করতে অনীহা বাড়ছে ভুক্তভোগীদের মাঝে। তাই বছরের-পর-বছর এই ডাকাতি বন্ধ হচ্ছে না।

জানা যায়, ২০২৩ সালের ২ জানুয়ারি (সোমবার) ভোর ৫টার দিকে সিরাজদিখান-নিমতলা সড়কের রশুনিয়া টানা ব্রিজের সামনে মুখে মুখোশ পরে অন্তত ২০টি গাড়িতে ডাকাতি সংঘটিত হয়। ৮ থেকে ১০ জনের দল দেশীয় অস্ত্র নিয়ে ভয় ভীতি দেখিয়ে নগদ টাকা ও মোবাইল সেট নিয়ে যায় এবং অনেককে মারধর করে ডাকাতরা। এতে ডাকাতের কবলে পড়া বেশীরভাগ গাড়ীতেই ছিল মাছ ও সবজি ব্যবসায়ীরা।

সিরাজদিখান বাজারের ৪জন মাছ ব্যবসায়ী ও ৪জন সবজি ব্যবসায়ীর কাছ থেকে নগদ প্রায় ২ লাখ টাকা ও ৭টি মোবাইল সেট ডাকাতরা নিয়ে যায়। এছাড়া বিভিন্ন গাড়ি থেকে নগদ টাকা, মোবাইল ও স্বর্ণালঙ্কার নিয়ে যায়। এর আগেও এই সড়কে একাধিকবার ডাকাতি সংঘটিত হয়েছে।

আরও জানা যায়, উপজেলার ঢাকা-মাওয়া এক্সপ্রেসওয়ের কেয়াইন ইউনিয়নের চালতিপাড়া এলাকা,কুচিয়ামোড়া ধলেশ্বরী নদীর উপর দুই সেতু এলাকা,কুচিয়ামোড়া-সৈয়দপুর সড়ক, ঢাকা-নবাবগঞ্জ সড়কের তুলসিখালী ও মরিচা সেতু এলাকা। এসব সড়কে দীর্ঘদিন ধরে ডাকাতি সংঘটিত হয়ে আসছে, কোনো ভাবেই তা বন্ধ হচ্ছে না। এতে করে এই সড়কগুলোতে চলাচলরত গাড়ি চালক, যাত্রী ও পথচারীদের মাঝে আতঙ্ক বিরাজ করে থাকে।

আরও পড়ুন :

ডাকাতের কবলে পড়া ক্ষতিগ্রস্ত সিরাজদীখান বাজারের সবজি ব্যবসায়ী শেখ মাহবুব বলেন, প্রতিদিন টঙ্গীবাড়ি আর সিরাজদীখানের মাছ ও সবজি ব্যবসায়ীরা ঢাকার কারন বাজার, যাত্রাবাড়ী ও শ্যামবাজার থেকে পাইকারী সবজি, মাছ কিনে জেলার বিভিন্ন বাজারে বিক্রি করে থাকে। ভোরে ঢাকা থেকে মাছ সবজি কিনে ফেরার পথে রশুনিয়া এলাকায় দা ও লোহার রড নিয়ে আমাদের গতিরোধ করে ডাকাতরা।

এ সময় আমাদের গাড়িটিও আটকায় এবং আমার থেকে ২০ হাজার টাকা,২টি মোবাইল ও আমার গাড়ি চালকের কাছ থেকে ১টি মোবাইল ছিনিয়ে নিয়ে যায়। এছাড়া আরও প্রায় ২০ থেকে ২৫টি গাড়িতে ডাকাতরা ডাকাতি করে এবং অনেকেকে মারধর করে।

সিরাজদীখানের এক সরকারি কর্মকর্তা নাম পরিচয় গোপন রাখার শর্তে বলেন, আমি কিছুদিন আগে ঢাকা থেকে সিরাজদীখানে আসতে ছিলাম, কুচিয়ামোড়া দুই সেতুর মাঝামাঝি আসার পর কয়েকজন মুখে মুখোশ পড়া ডাকাতদল আমার গাড়িটির পথ রোধ করে আমাকে মারধোর করে এবং আমার সাথে থাকা টাকা পয়সা সব নিয়ে যায়। এরপর থেকে আমি এই পথে চলতে খুবই ভয় পাই।

আরও পড়ুন : স্টাফদের হামলায় লঞ্চের সুপারভাইজার নিহত

উপজেলার আরও কয়েকজন বাসিন্দা জানান, উপজেলার ৫টি সড়কে বছরের বিভিন্ন সময়ে ডাকাতি হয়ে থাকে। পুলিশ দীর্ঘ অনেক বছর হয়ে যাওয়ার পরও এখনো বন্ধ করতে পারেনি। এটা খুবই দুঃখজনক। আমরা চাই পুলিশ ডাকাতির সাথে জড়িতদের খুঁজে বের করে আইনের আওতায় আনবে এটাই দাবি।

কেয়াইন ইউপির চেয়ারম্যান মো. আশ্রাফ আলী বলেন, চালতিপাড়া এলাকায় ডাকাতির বিষয়টি আমি আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীকে অনেকবার জানিয়েছি। তাছাড়া পরিষদেও এই বিষয়ে কয়েকবার আলাপ আলোচনা এবং উপজেলার মাসিক সভায় আলোচনা করেছি। তবে আমরা চেষ্টা করে যাচ্ছি, যাতে করে ডাকাতি বন্ধ করা যায়।

রাজানগর ইউপির চেয়ারম্যান মো. মজিবুর রহমান বলেন, কুচিয়ামোড়া-সৈয়দপুর সড়কে অনেক বছর ধরে ডাকাতি হয়ে আসছে। শীত মৌসুমে একটু বেশি হয়ে থাকে। তবে আমরা চেষ্টা করছি এ ডাকাতি বন্ধ করার জন্য। এ জন্য প্রতিদিন আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্য এবং গ্রাম পুলিশ এখানে ডিউটি করে থাকে। যেদিন আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্য এবং গ্রাম পুলিশ না থাকে সেদিনই এ সড়কে ডাকাতি হয়। সেই জন্য আমাদের গ্রাম পুলিশ এবং পুলিশের সদস্যরাও রাতের ডিউটি বৃদ্ধি করেছে।

চালতিপাড়া ডাকাতির বিষয়ে হাসাড়া হাইওয়ে থানার ট্রাফিক ইন্সপেক্টর শামীম আল-মামুন বলেন, শীত মৌসুম হওয়ায় চালতিপাড়া এলাকায় ডাকাতি হয়েছিল। এরপর থেকে ঢাকা-মাওয়া এক্সপ্রেসওয়েতে সন্ধ্যা থেকে পরদিন সকাল ৮টা পর্যন্ত আমাদের পুলিশ সদস্যরা ডিউটি করে থাকেন। যেহেতু এক্সপ্রেসওয়ের ৪০ কিলোমিটার এলাকায় আমাদের কাজ করতে হয়।

তাই বিভিন্ন এলাকায় আলাপ-আলোচনা এবং আমাদের নাম্বার দিয়ে এসেছি ঘটনা ঘটার আগেই যেন মানুষজন আমাদের জানায়, সেই জন্য আমরা বলে এসেছি এবং টহল বৃদ্ধি করেছি। তিনি আরো বলেন, এলাকাবাসী যদি আমাদের সহযোগিতা করে অবশ্যই এখানে ডাকাতি রোধ করা সম্ভব বলে মনে করছি।

আরও পড়ুন : স্মৃতিস্তম্ভ পরিদর্শন করলেন জনপ্রশাসন সচিব

সিরাজদীখান থানার ওসি একেএম মিজানুল হক বলেন, কয়েকদিন আগে ঢাকা-মাওয়া এক্সপ্রেসওয়েতে একটি ডাকাতি হয়েছিল, এরপর একটি মামলা হয়েছিল, সেই মামলায় গ্রেফতার ও রয়েছে। এছাড়া উপজেলার বিভিন্ন এলাকার জনপ্রতিনিধিদের সাথে আমরা কথা বলেছি, তারা যেন অন্ধকার এলাকাগুলোতে আলোকিত করা হয়েছে এবং আমরা পুলিশি টহল জোরদার করেছি।

সান নিউজ/এসআই

Copyright © Sunnews24x7
সবচেয়ে
পঠিত
সাম্প্রতিক

ভোলায় ছাত্রলীগের বৃক্ষরোপন কর্মসূচি পালিত 

ভোলা প্রতিনিধি: তীব্র তাপদাহ থেকে...

উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে চেয়ারম্যান প্রার্থীর গণসংযোগ

মো. নাজির হোসেন, মুন্সীগঞ্জ প্রতিনিধি:

বিশ্ব ম্যালেরিয়া দিবস আজ

সান নিউজ ডেস্ক: আজ বিশ্ব ম্যালেরি...

টঙ্গীবাড়ি ভাতিজারা পিটিয়ে মারলো চাচাকে

মো. নাজির হোসেন, মুন্সীগঞ্জ প্রতিনিধি:

গরমে ত্বক ব্রণমুক্ত রাখতে যা খাবেন

লাইফস্টাইল ডেস্ক: গরমকাল এলেই ব্র...

মাকে গলা কেটে হত্যা করল ছেলে

জেলা প্রতিনিধি: বিয়ে না দেওয়ায় চা...

পঞ্চগড়ে দুই শিশুর মৃত্যু

জেলা প্রতিনিধি: পঞ্চগড়ে চাওয়াই নদীতে গোসল করতে নেমে আলমি আক্...

চারতলা থেকে পড়ে শ্রমিকের মৃত্যু

খায়রুল খন্দকার টাঙ্গাইল : টাঙ্গাই...

শনিবার ১২ ঘণ্টা গ্যাস থাকবে না 

নিজস্ব প্রতিবেদক: পাইপলাইনের কাজে...

ভারতীয় ৩ কোম্পানির ওপর নিষেধাজ্ঞা

আন্তর্জাতিক ডেস্ক: যুক্তরাষ্ট্র স...

লাইফস্টাইল
বিনোদন
sunnews24x7 advertisement
খেলা