এহসানুল হক, ঈশ্বরগঞ্জ (ময়মনসিংহ): ময়মনসিংহের ঈশ্বরগঞ্জ উপজেলায় ব্রহ্মপুত্র নদের তীরবর্তী ৭০০ পরিবার বাঁচাতে মানববন্ধন করেছে এলাকাবাসী। উপজেলার উচাখিলা ইউনিয়নের মরিচারচর এলাকায় নদের ভাঙ্গনের মুখে গ্রামবাসীর চিরচেনা বসতভিটা-ফসলি জমি। চোখের সামনে নিজেদের মাথা গোঁজার ঠাঁই ও ফসলের জমির কথা ভেবে ও নদের ভাঙ্গনের দৃশ্য দেখে কাঁদছে মানুষ। সবার চোখে-মুখে আতংক, আর্তনাদ।
আরও পড়ুন: বিএনপিকে কাভারেজ বেশি দেওয়া হচ্ছে
জানা যায়, উপজেলার উচাখিলা ইউনিয়নের ব্রহ্মপুত্র নদের মরিচারচর (দপ্তর) এলাকায় খনন কাজ করার জন্য ড্রেজার মেশিন বসিয়ে বালু উত্তোলন করার সিদ্ধান্ত নেয় পানি উন্নয়ন বোর্ড। ভাঙন রোধে সেই খনন কাজ ও বালু উত্তোলন বন্ধে সোমবার দুপুরে ওই মানববন্ধন করা হয়।
সরেজমিনে পরিদর্শন করে জানা যায়, উচাখিলা ইউনিয়নের মরিচারচর এলাকা দিয়ে বয়ে গেছে ব্রহ্মপুত্র নদী। ইতিমধ্যে সেই এলাকাটি দীর্ঘদিন যাবত নদী ভাঙনের কবলে। সেই ভাঙনের মধ্যে দিয়েও মূল নদীর বাহিরে নদী খনন ও বালু উত্তোলনের জন্য বসানো হয়েছে বিশাল শক্তিশালী ড্রেজার মেশিন। যে মেশিন চালু হলে ভাঙনে বিলীন হয়ে যেতে পারে মরিচারচর দপ্তর পাড়া এলাকার প্রায় ৭শত পরিবার। তাই ড্রেজার মেশিন দিয়ে খনন কাজ ও বালু উত্তোলন বন্ধের দাবি স্থানীয়দের। এছাড়াও বিষয়টি নিয়ে রবিবার এলাকাবাসীর গণ-স্বাক্ষরে কাজ বন্ধের দাবিতে উপজেলা নির্বাহী অফিসার বরাবর একটি অভিযোগ দায়ের করেন স্থানীয়রা।
আরও পড়ুন: ইভিএম কিনতে ৮৭১১ কোটি টাকা চায় ইসি
এদিকে, মরিচারচর গ্রামের চল্লিশোর্ধ্ব মোসাঃ হালিমা, ঝর্ণা ও বিউটি বলেন, এমনিতেই নদীর পাড় ভেঙে ভেঙে আমরার বাড়ির কাছাকাছি আইয়া পড়ছে, অহন (এখন) যদি ড্রেজার দিয়ে বালু উঠানো হয় তাহলে যেকোন সময় আমাদের বাড়ি-ঘর ধসে নদীতে ভেসে যাবে।
অপরদিকে, একই গ্রামের ষাটোর্ধ মোঃ ওয়াহাব, মোঃ ছিদ্দিক, মোঃ হেলাল উদ্দিন, মোঃ হাসিম উদ্দিন, ছফির উদ্দিন বলেন, এভাবে বালু উত্তোলন করলে নদী ভেঙে আমাদের বসতভিটা-ফসল জমি হারিয়ে পথের ফকির হতে হবে। তখন আমরা বউ-পোলাপান লইয়া কোথায় যাইয়াম? তাই মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর নিকট দাবি আমাদের বাঁচাতে এ এলাকা থেকে ড্রেজার মেশিন দিয়ে বালু উত্তোলন বন্ধ করা হোক।
আরও পড়ুন: ১০ টাকা মূল্যের চাউল আত্মসাতের অভিযোগ
এছাড়াও মানববন্ধনে এলাকাবাসী তাদের বাড়িঘর নদী ভাঙন কবল থেকে রক্ষা ও ড্রেজার মেশিন দিয়ে মূল নদীর বাহিরে গিয়ে খনন কাজ ও বালু উত্তোলন বন্দের জন্য উর্ধতন কর্মকর্তাদের কাছে জোর দাবি জানান।
এ বিষয়ে পানি উন্নয়ন বোর্ডের প্রকৌশলী দিদার আলম বলেন, আমরা নদী খননের জন্য কেবল ড্রেজার মেশিন বসিয়েছি। এলাকাবাসীসহ সবার সাথে আলোচনা করে পরে কাজ শুরু করা হবে। এলাকাবাসীর ক্ষতি হলে বা ভাঙন হলে তাহলে বিষয়টি আমরা দেখবো।
আরও পড়ুন: সম্রাটের জামিনের মেয়াদ বাড়ল
উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোসাঃ হাফিজা জেসমিন বলেন, আমার কাছে স্থানীয়রা একটি অভিযোগ দিয়েছে সেই অভিযোগের পর পানি উন্নয়ন বোর্ডের প্রকৌশলীর সাথে আমার কথা হয়েছে। যদিও বালু উত্তোলনের জন্য ড্রেজার মেশিন বসানো হয়েছে কিন্তু বালু উত্তোলন এখনো হচ্ছে না। এলাকাবাসীর সাথে আলোচনা করে পরবর্তী কাজ করা হবে।
সান নিউজ/কেএমএল