সারাদেশ

বাঁধ চায় যমুনার ভাঙ্গন কবলিত মানুষ

খায়রুল খন্দকার, (ভূঞাপুর) টাঙ্গাইল: টাঙ্গাইলে প্রতিবছরই যমুনার ক্ষুর ধারালো স্রোত ও আর তীব্র ভাঙ্গনে তিন শতাধিক বসতভিটা ও কয়েক'শত একর ফসলি জমি নদী গর্ভে বিলীন হয়ে যাচ্ছে। মানুষ তার শেষ মাথা গোঁজার ঠাঁই টুকুও হারিয়ে একেবারে নিঃস্ব ও দিশেহারা হয়ে পড়েছেন।

এদিকে ভাঙনকবলিত মানুষদের অভিযোগ, বছরের পর বছর টাঙ্গাইল ভূঞাপুর উপজেলার বঙ্গবন্ধু সেতু পূর্বপাড় ক্যান্টনমেন্ট এলাকা হতে নলিন পর্যন্ত বাঁধ নির্মাণে প্রতিশ্রুতি দেয়া হলেও নদীভাঙন রোধে এখনো কোনো কাজ শুরুই হয়নি।

বুধবার (২৯জুন) সরেজমিনে দেখা গেছে, সপ্তাহ খানেক ধরে যমুনা নদীসহ সব নদীর কমতে শুরু করেছে। সেই সাথে পানি কমার সঙ্গে সঙ্গে উপজেলার গোবিন্দাসী ইউনিয়নের, ভালকুটিয়া, চিতিলাপাড়া, কষ্টাপাড়া, খানুরবাড়ী ও জিগাতলা এলাকায় দেখা দিয়েছে তীব্র ভাঙন। এখনও প্রতিদিনই নদী ভাঙনে নতুন করে বসতভিটা, ঘরবাড়ি হারাচ্ছে নদী পাড় ঘেঁষে বসবাসরত শত শত মানুষ।

এসব এলাকার ভাঙনকবলিতরা সহায়-সম্বল হারিয়ে রাস্তার পাশে, কালা সড়কের বিভিন্ন আশ্রয় গ্রহণ করছেন। পরিবারের নারী-শিশুসহ গবাদিপশু নিয়ে মানবেতর জীবনযাপন করছেন ভাঙনে নিঃস্ব হওয়া মানুষেরা।

স্থানীয় বানভাসি মানুষেরা জানান, প্রতিবছরই জনপ্রতিনিধি ও পানি উন্নয়ন বোর্ডের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা ভাঙন এলাকা পরিদর্শন করেন। তারা নদীভাঙন বন্ধে দ্রুত কাজ শুরুর প্রতিশ্রুতি দেন বারবার, কিন্তু তা বাস্তবায়ন হয়নি আজও। ফলে বছরের পর বছর বন্যার পানিতে আমাদের ভাসতে হয়। বর্ষার মৌসুম এলেই বন্যার পানির সঙ্গে শুরু আমাদের সংগ্রাম। বন্যার পানি আমাদের ঘরবাড়িতে ঢুকে, থাকা, খাওয়া, চলাচলে নাস্তানাবুদ করে ছাড়ে।

উপজেলার গোবিন্দাসী ইউনিয়নের চিতুলিয়া গ্রামের খলিলুর রহমান জানান, ইতিমধ্যে বসতভিটা হারিয়ে আমি অন্যত্র আশ্রয় নিয়েছি। যমুনার পানি কমতে শুরু করলেও গত বৃহস্পতিবার রাতে হঠাৎ দেখা দেয় তীব্র ভাঙন। ভাঙন আতঙ্কে আমার বড় ভাই আমাকে ফোন দেয়। পরে আমি দ্রুত চলে যাই ভাইয়ের বসত ভিটায় চিতুলিয়াপাড়ায়, সেখানে গিয়ে দেখি নদী ভাঙনে ও ভাঙন আতঙ্কে সবাই কান্না কাটি করছে। এরপর রাতেই ভাইয়ের ঘরবাড়ি সরিয়ে অন্যত্র নিরাপদ আশ্রয়ে নিয়ে আসি। ইতিমধ্যে বসতভিটা নদী ভাঙনে বিলীন হয়ে গেছে। এসময় তিনি বলেন, বেড়িবাঁধের কথা থাকলেও বাঁধ নির্মাণ হচ্ছে না। যদি আজ আমাদের বাড়ির পাশ দিয়ে একটি বাঁধ নির্মাণ হতো, হয়তো এভাবে আমাদের ভিটে-মাটি হারাতে হতো না।

পানি উন্নয়ন বোর্ড সূত্রে জানা গেছে, শনিবার (২৬ জুন) সকাল ৬টা থেকে রবিবার সকাল ৬টা পর্যন্ত গত ২৪ ঘণ্টায় যমুনা নদীর পানি পোড়াবাড়ী পয়েন্টে ৩০ সেন্টিমিটার কমে বিপৎসীমার ১৬ সেন্টিমিটার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। এ ছাড়াও ঝিনাই নদীর পানি জোকারচর পয়েন্টে ২৮ সেন্টিমিটার কমে বিপৎসীমার ৮ সেন্টিমিটার নিচ দিয়ে ও ধলেশ্বরী নদীর পানি এলাসিন পয়েন্টে ২৯ সেন্টিমিটার কমে বিপৎসীমার ১৬ সেন্টিমিটার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।

এ ব্যাপারে জেলা পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. সিরাজুল ইসলাম জানান, বেড়িবাঁধের প্রোজেক্ট বা কাজ এখনও শুরু হয়নি। তবে অচিরেই এর কাজ শুরু হবে বলে তিনি জানান।

সান নিউজ/এনকে

Copyright © Sunnews24x7
সবচেয়ে
পঠিত
সাম্প্রতিক

উত্তরায় প্রাইভেটকারে অপহরণ; ভিডিও ভাইরালের পর গ্রেপ্তার ২

রাজধানীর উত্তরা এলাকায় চাঞ্চল্যকর অপহরণের ঘটনায় অপহরণে ব্যবহৃত একটি প্রাইভে...

আমাকে চেয়েছিলো যুদ্ধাপরাধী মামলার আসামী বানাতে: ডা. শফিকুর রহমান

বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর আমীর ডা. শফিকুর রহমান বলেছেন, গত সরকারের সময় তিনবার...

ভালুকায় সৌন্দর্য বাড়াতে ইউএনও’র ‘নিজ খরচে’ সবুজ বিপ্লব

ভালুকা উপজেলার পরিবেশ সংরক্ষণ ও নগর সৌন্দর্য বৃদ্ধিতে এক ব্যতিক্রমী উদ্যোগ নি...

কালীগঞ্জে ফিল্মিস্টাইলে যুবককে পিটিয়ে হত্যা

গাজীপুরের কালীগঞ্জে জমি সংক্রান্ত পূর্ব বিরোধের জে...

সড়কহীন ৩৪ কোটি টাকার সেতু

সেতু আছে কিন্তু সংযোগ সড়ক করা হয়নি এমন সেতু ফেনীতে...

লাইফস্টাইল
বিনোদন
sunnews24x7 advertisement
খেলা