সারাদেশ

ব্যবহারে অনুপযোগী অর্ধকোটি টাকার সেতু

নিজস্ব প্রতিনিধি, ময়মনসিংহ: চোখের সামনে গড়ে ওঠা কংক্রিটের সেতুতেই নতুন স্বপ্ন বুনেছিলো গ্রামের মানুষ। সেটি স্বপ্নই থেকে যায়। সেতু নির্মাণ হলেও তা ব্যবহারের ভাগ্য হয়নি তাদের। ৫৪ লাখ টাকার সেতুটি নির্মাণের পরপরই পানির তোড়ে হেলে পড়ে। ময়মনসিংহ সদরের চরাঞ্চলের এই সেতু এখন গ্রামের মানুষের স্বপ্নভঙ্গের গল্প হয়ে উঠেছে।

খাগডহরে মানুষ ময়মনসিংহ বিজিবি ক্যাম্পের সামনে দিয়ে ব্রহ্মপুত্র নদ ও কাটাখাল পার হয়ে সিরতাসহ চরের বিভিন্ন অঞ্চলে যাতায়াত করে। ইঞ্জিনচালিত নৌকা দিয়ে ব্রহ্মপুত্র পার হওয়ার পর কাটাখাল পারাপারের জন্য সেতুর প্রয়োজনীয়তা দেখা দেয়। কারণ বর্ষা মৌসুমে ব্রহ্মপুত্রের চ্যানেল কাটাখাল পানিতে ভরা থাকলেও পরে শুকিয়ে যায়। চরাঞ্চলের বিপুল জনগোষ্ঠী ওই চ্যানেল দিয়ে চলাচল করায় একটি সেতু নির্মাণের উদ্যোগ নেওয়া হয়। দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা অধিদপ্তরের সেতু-কালভার্ট কর্মসূচির আওতায় ২০১৬-১৭ অর্থবছরে খাগডহর এলাকায় কাটাখালের ওপর সেতুটির নির্মাণকাজ শুরু হয়। ৬০ ফুট দৈর্ঘ্যের সেতুটির নির্মাণ ব্যয় ধরা হয়েছিলো ৫৪ লাখ চার হাজার ৬৫০ টাকা। ২০১৭ সালের ২০ এপ্রিল নির্মাণকাজ শেষ হয়। বরিশালের মেসার্স মায়ের দোয়া এন্টারপ্রাইজ নামের ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান সেতুটির নির্মাণ কাজ করে।

স্থানীয়রা জানান, ব্রহ্মপুত্র নদে পানি বাড়লে কাটাখাল দিয়ে পানি প্রবাহিত হয়। স্থানীয়দের দীর্ঘদিনের দাবির মুখে সেতুটি নির্মিত হলেও বন্যায় সেটি হেলে পড়ে। ভেঙে যায় সংযোগ সড়ক। এর পর দীর্ঘদিন কেটে গেলেও তা মেরামতের উদ্যোগ নেওয়া হয়নি।

চরজেলখানা গ্রামের আতাউর রহমান বলেন, ব্রহ্মপুত্র নদের পাড় থেকে সিরতা রাস্তায় পাঁচ বছর ধরে মোটরসাইকেলে যাত্রী পরিবহন করে সংসার চালান তিনি। সেতু না থাকায় তাদের অনেক কষ্ট করতে হতো। সেতু হওয়ায় তারা কষ্ট লাঘবের আশা করেছিলেন। কিন্তু দুর্ভাগ্য তাদের পিছু ছাড়েনি। সেতুটি হেলে পড়ায় এর পাশ দিয়ে নিজেদের চাঁদার টাকায় বিকল্প রাস্তা তৈরি করে চলাচল করছেন তারা।

স্থানীয় সোহান মিয়া বলেন, সেতুটি নির্মাণ করে কার লাভ হলো? গ্রামের মানুষ তো সেতুটি ব্যবহারই করতে পারছে না!

খাগডহর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আনোয়ার হোসেন খান বলেন, ব্রহ্মপুত্র নদের ওপর একটি নতুন সেতু নির্মাণসহ কাটাখালের সেতুটি পুনঃনির্মাণ করতে হবে। বিষয়টি নিয়ে উপজেলা পরিষদের সভায় একাধিক বার আলোচনা করা হয়েছে।

ময়মনসিংহ সদর উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা মনিরুল হক ফারুক রেজা বলেন, কাটাখালের সেতুটি নির্মাণের পরই বন্যা আসায় মাটি সরে গেলে তা হেলে পড়ে। এ কারণে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানও পুরো বিল পায়নি; ১৮ লাখ টাকার মতো পেয়েছিলো। সেতুটি নিয়ে নতুন করে কিছু করার সুযোগ নেই।

সান নিউজ/এফএআর

Copyright © Sunnews24x7
সবচেয়ে
পঠিত
সাম্প্রতিক

উত্তরায় প্রাইভেটকারে অপহরণ; ভিডিও ভাইরালের পর গ্রেপ্তার ২

রাজধানীর উত্তরা এলাকায় চাঞ্চল্যকর অপহরণের ঘটনায় অপহরণে ব্যবহৃত একটি প্রাইভে...

আমাকে চেয়েছিলো যুদ্ধাপরাধী মামলার আসামী বানাতে: ডা. শফিকুর রহমান

বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর আমীর ডা. শফিকুর রহমান বলেছেন, গত সরকারের সময় তিনবার...

ভালুকায় সৌন্দর্য বাড়াতে ইউএনও’র ‘নিজ খরচে’ সবুজ বিপ্লব

ভালুকা উপজেলার পরিবেশ সংরক্ষণ ও নগর সৌন্দর্য বৃদ্ধিতে এক ব্যতিক্রমী উদ্যোগ নি...

কালীগঞ্জে ফিল্মিস্টাইলে যুবককে পিটিয়ে হত্যা

গাজীপুরের কালীগঞ্জে জমি সংক্রান্ত পূর্ব বিরোধের জে...

সড়কহীন ৩৪ কোটি টাকার সেতু

সেতু আছে কিন্তু সংযোগ সড়ক করা হয়নি এমন সেতু ফেনীতে...

লাইফস্টাইল
বিনোদন
sunnews24x7 advertisement
খেলা