সারাদেশ

'রাজাকারপুত্রকে' মুক্তিযোদ্ধা যাচাই কমিটি থেকে অব্যাহতি 

নিজস্ব প্রতিনিধি, লক্ষ্মীপুর: লক্ষ্মীপুরের কমলনগরে বীর মুক্তিযোদ্ধা যাচাই-বাছাই কমিটির সভাপতি পদ থেকে ‘রাজাকারপুত্র’ মোস্তাফিজুর রহমানকে অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে। এর পরিবর্তে যুদ্ধকালীন বীর মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার আবু তাহেরকে সভাপতি পদে মনোনীত করা হয়।

সোমবার (১ ফেব্রুয়ারি) দুপুরে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. কামরুজ্জামান বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। এরআগে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার ই-মেইলে জাতীয় মুক্তিযোদ্ধা কাউন্সিলের (জামুকা) পাঠানো চিঠিতে আবু তাহেরকে সভাপতি মনোনীত করার বিষয়টি জানানো হয়।

উপজেলা প্রশাসন সূত্র জানায়, শনিবার (২১ জানুয়ারি) আবু তাহেরের সভাপতিত্বে মুক্তিযোদ্ধা যাচাই-বাছাইয়ের সভা হয়। এতে কমিটির সদস্য সচিব উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. কামরুজ্জামান, মুক্তিযোদ্ধা নুরুল ইসলাম ও শরীফ উল্যাহ উপস্থিত ছিলেন। এসময় সন্দেহভাজন ২১ জন মুক্তিযোদ্ধার কাগজপত্র ও প্রমাণাদি বিশ্লেষণ করে কমিটি। তবে তাদের সাক্ষ্য ও প্রমাণাদিতে কমিটি সন্তুষ্ট নয়। তাদেরকে বিস্তারিত সাক্ষ্য ও প্রমাণ সংগ্রহ করে কমিটির কাছে জমা দিতে বলা হয়েছে। পূর্ণাঙ্গ সাক্ষ্য-প্রমাণ উপস্থাপন করতে পারলেই তাহলে তাদের পক্ষে প্রতিবেদন দেওয়া হবে। তা না হলে যথাসময়েই তাদের বিপক্ষে প্রতিবেদন দিতে হবে।

অন্যদিকে, সারাদেশের মতো লক্ষ্মীপুরেও মুক্তিযোদ্ধা যাচাই-বাছাই কার্যক্রম অব্যাহত রয়েছে। এরমধ্যে জেলার কমলনগর উপজেলায় ৩০ জানুয়ারি ২১ জনের যাচাই-বাছাই অনুষ্ঠিত হয়। এ লক্ষ্যে জামুকা ২৫ জানুয়ারি মুক্তিযোদ্ধা মোস্তাফিজুর রহমানকে সভাপতি মনোনীত করে জেলা প্রশাসকের (ডিসি) কাছে তালিকা পাঠায়। কিন্তু ২৮ জানুয়ারি বিকেলে মোস্তাফিজুরকে ‘রাজাকারপুত্র’ আখ্যায়িত করে কমলনগর উপজেলা মুক্তিযেদ্ধা কমান্ড কাউন্সিল কার্যালয়ে স্থানীয় কয়েকজন বীর মুক্তিযোদ্ধা সংবাদ সম্মেলন করেন। এনিয়ে এরআগে তাঁরা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার (ইউএনও) কাছে লিখিত অভিযোগও দিয়েছেন।

অভিযোগ সূত্র জানায়, নীতিমালা অনুযায়ী বীর মুক্তিযোদ্ধা যাচাই-বাছাইয়ের উপজেলা কমিটিতে যুদ্ধকালীন কমান্ডার অথবা ভারতীয় প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত বীর মুক্তিযোদ্ধাকে সভাপতি করার কথা রয়েছে। কিন্তু মোস্তাফিজুর রহমান সেই ক্যাটগরির কেউ নয়। এমনকি তিনি একজন ‘বিতর্কিত’ মুক্তিযোদ্ধা। তাছাড়া তার বাবা আব্দুল গফুর তহশিলদার শান্তি (পিস) কমিটির চেয়ারম্যান এবং রাজাকারদের সংগঠক। চাচা আব্দুল হালিমও রাজাকার ছিলেন। মূলত, রাজাকার বাবা ও চাচাকে সুরক্ষা দেওয়ার জন্য ‘গুপ্তচর’ হিসেবে মোস্তাফিজ মুক্তিযোদ্ধা ক্যাম্পে অনুপ্রবেশ করেন এবং মুক্তিযোদ্ধা তালিকায় অর্ন্তভুক্ত হন। তার দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে রাজাকার ও আলবদর বাহিনী বেশ কয়েকজন বীর মুক্তিযোদ্ধাকে হত্যাও করেছিলেন।

অভিযোগের বিষয়ে মুক্তিযোদ্ধা মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, আমি বীর মুক্তিযোদ্ধা। হেয়প্রতিপন্ন করার উদ্দেশ্যে আমার বিরুদ্ধে অপপ্রচার চালানো হচ্ছে। রাজাকার ইস্যুতে আমার বাবার বিরুদ্ধে আনা অভিযোগও সত্য নয়।

জানতে চাইলে কমলনগর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. কামরুজ্জামান বলেন, ২১ জন মুক্তিযোদ্ধার সাক্ষ্য ও প্রমাণাদি যাচাই-বাছাই করা হয়েছে। কিন্তু তা সন্তোষজনক নয়। সঠিক সাক্ষ্য, তথ্য ও প্রমাণসহ সহযোদ্ধাদের (বেঁচে থাকা) উপস্থিত করতে তাদেরকে বলা হয়েছে। তাদেরকে কয়েকদিনের সময় দেওয়া হয়েছে। এরমধ্যেই তথ্য-প্রমাণ দিতে হবে। যথাসময়ে জাতীয় মুক্তিযোদ্ধা কাউন্সিলে প্রতিবেদন জমা দেওয়া হবে।

সান নিউজ/জেইউবি/কেটি

Copyright © Sunnews24x7
সবচেয়ে
পঠিত
সাম্প্রতিক

উত্তরায় প্রাইভেটকারে অপহরণ; ভিডিও ভাইরালের পর গ্রেপ্তার ২

রাজধানীর উত্তরা এলাকায় চাঞ্চল্যকর অপহরণের ঘটনায় অপহরণে ব্যবহৃত একটি প্রাইভে...

আমাকে চেয়েছিলো যুদ্ধাপরাধী মামলার আসামী বানাতে: ডা. শফিকুর রহমান

বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর আমীর ডা. শফিকুর রহমান বলেছেন, গত সরকারের সময় তিনবার...

ভালুকায় সৌন্দর্য বাড়াতে ইউএনও’র ‘নিজ খরচে’ সবুজ বিপ্লব

ভালুকা উপজেলার পরিবেশ সংরক্ষণ ও নগর সৌন্দর্য বৃদ্ধিতে এক ব্যতিক্রমী উদ্যোগ নি...

কালীগঞ্জে ফিল্মিস্টাইলে যুবককে পিটিয়ে হত্যা

গাজীপুরের কালীগঞ্জে জমি সংক্রান্ত পূর্ব বিরোধের জে...

সড়কহীন ৩৪ কোটি টাকার সেতু

সেতু আছে কিন্তু সংযোগ সড়ক করা হয়নি এমন সেতু ফেনীতে...

লাইফস্টাইল
বিনোদন
sunnews24x7 advertisement
খেলা