নিজস্ব প্রতিনিধি, দিনাজপুর : দিনাজপুরের ঘোড়াঘাটে প্রেমিকের ছদ্মবেশে ফোনে কথা বলে রাতের আধারে এক আদিবাসী কিশোরীকে (১৭) গণধর্ষণের ঘটনা ঘটেছে।
এই ঘটনায় থানায় অভিযোগ দায়েরের এক ঘণ্টার মধ্যে থানা পুলিশের পৃথক কয়েকটি টিম অভিযান চালিয়ে ওই তিন ধর্ষককে গ্রেফতার করেছে।
গ্রেফতার ওই তিনজন, ঘোড়াঘাট উপজেলার ঘুুঘুরা (ভোতরা পাড়া) গ্রামের মৃত লাল মিয়ার ছেলে নাইট গার্ড এবং ছদ্মবেশী প্রেমিক লাবু মিয়া (২৮), একই গ্রামের আহাম্মদ আলীর ছেলে রাজমিস্ত্রি আশরাফুল ইসলাম (৩৫) এবং অপরজন ঘোড়াঘাট পৌর এলাকার বাউপুকুর গ্রামের বেল্লাল হোসেনের ছেলে রাজমিস্ত্রি ওমর ফারুক (২১)।
এজাহার সূত্রে জানা যায়, ঘোড়াঘাট পৌর এলাকার বাউপুকুর গ্রামের মৃত চুরকা হাসদার দশম শ্রেণী পড়ুয়া কিশোরীর সাথে প্রায় দেড় বছর আগে রাজু নামে এক যুবকের প্রেমের সম্পর্ক গড়ে উঠে। মাঝে মাঝেই ফোনে যোগাযোগ হতো রাজুর সাথে। কিন্তু কোনভাবে তাদের প্রেমের সম্পর্কের কথা জানতে পারে লাবু নামের এক যুবক এবং সে কৌশলে ওই কিশোরীর মোবাইল নাম্বার সংগ্রহ করে। পরে সে সখিনাকে কল করে রাজু পরিচয় দিয়ে একাধিক বার কথা বলার এক পর্যায়ে গত শনিবার (৩০ জানুয়ারি) রাত তিনটার সময় কিশোরীর বাড়ির পাশে আব্দুর রহমানের লিচু বাগানে তাকে দেখা করতে ডাকে। ছদ্মবেশী প্রেমিক লাবুর কথা অনুযায়ী বাগানে গিয়ে সে প্রেমিক রাজুর পরিবর্তে অন্য এক যুবককে দেখে চিৎকার করে এবং দৌড়িয়ে বাড়িতে পালানোর চেষ্টা করে। লাবুর সাথে পূর্ব পরিকল্পিতভাবে বাগানে আগে থেকেই অবস্থান নেয়া দুই সহযোগী ওমর ফারুক এবং আশরাফুল ওই কিশোরীর আটকে মুখ চেপে ধরে। পরে লিচুর বাগানেই পালাক্রমে ওই তিন জন কিশোরীকে গণধর্ষণ করে বাগানে ফেলে রেখে চলে যায়।
ওই কিশোরীর মা জানান, এই তিন ধর্ষক প্রায় প্রায় তাদের বাড়ির পাশের লিচু বাগানে গাঁজা সেবন করতে আসত। রাতের আঁধারে তার মেয়েকে ধর্ষণ করে ওই তিন ধর্ষক বিভিন্ন ভয়ভীতি ও হুমকি প্রদান করেছিল। সকালে ঘুম থেকে উঠে ঘরে মেয়েকে দেখতে না পেয়ে সে চিন্তিত হয়ে যায় এবং অনেক খোঁজাখুঁজির এক পর্যায়ে বাড়ির পাশের লিচুর বাগানে রক্তাক্ত অবস্থায় পড়ে থাকা মেয়েকে উদ্ধার করে বাড়িতে নিয়ে আসে। পরে মেয়ের মুখে পুরো ঘটনা শুনে সে মেয়েকে নিয়ে থানায় যায় এবং মামলা দায়ের করে।
ঘোড়াঘাট থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) আজিম উদ্দিন বলেন, রোববার (৩১ জানুয়ারি) সন্ধ্যায় ভিকটিমকে নিয়ে তার মা থানায় এসে মামলা দায়ের করে।, তাৎক্ষণিক পৃথক পৃথক স্থান থেকে আমরা ওই তিন ধর্ষককে গ্রেফতার করতে সক্ষম হই। আসামিদের বিরুদ্ধে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে গণধর্ষণের অভিযোগে মামলা হয়েছে। আসামিদেরকে সোমবার (১ জানুয়ারি) দিনাজপুরের বিজ্ঞ আদালতে প্রেরণ করা হয়েছে। মামলাটি আমি নিজেই তদন্ত করছি এবং এই ঘটনার বেশ কিছু আলামত সংগ্রহ করা হয়েছে। এই ঘটনায় আরো কেও জড়িত আছে কিনা এবং ভিকটিমের আসল প্রেমিক রাজুর সাথে এই তিন আসামির কোন সম্পর্ক আছে কিনা! তা আমরা দেখছি।
ওসি আরও বলেন, আসামিদের আদালতে জবানবন্দি দেওয়ার কথা রয়েছে। ভিকটিমকে মেডিকেল করানোর জন্য দিনাজপুর মেডিকেলে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। সেই সঙ্গে আমরা অধিকতর তদন্তের জন্য উভয়ের ডিএনএ টেস্ট করানো হবে।
সান নিউজ/এএসএমএ/কেটি