নিজস্ব প্রতিনিধি, ধুনট (বগুড়া) :বগুড়া জেলার ধুনট উপজেলায় পূর্ব শত্রুতার জের ধরে বলারবাড়ি দুবলার দিয়াড় মাঠে ৩ কৃষকের ৫ বিঘা জমির বোরো ধান বিষাক্ত কীটনাশক স্প্রে করে পুড়িয়ে দেয়ার অভিযোগ উঠেছে।
এ ঘটনায় ক্ষতিগ্রস্ত ৩ কৃষক বাদী হয়ে একই এলাকার বানিয়াগাতি গ্রামের ইজ্জত আলীর ছেলে ব্যবসায়ী আসাদুল ইসলাম ও তার ছেলে নাঈম হোসেনের বিরুদ্ধে থানায় পৃথক ৩টি অভিযোগ দায়ের করেছেন।
শুক্রবার ( ১২ মার্চ) দুপুরের দিকে ধুনট থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) আবু তাহের সরেজমিন ক্ষতিগ্রস্ত ধানক্ষেত পরিদর্শন করেছেন। তিনি জানান, ৩ কৃষকের ক্ষেতের ধান বিষাক্ত কীটনাশক স্প্রে করে পুড়িয়ে দেওয়া হয়েছে। এ ঘটনার সঙ্গে জড়িত ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে আনিত অভিযোগ তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকের মধ্যে উপজেলার বলারবাড়ি গ্রামের গোলাম হোসেনের ছেলে মিন্টু সেখের ৩ বিঘা, শুকুর আলীর ছেলে আব্দুস ছালামের ২৮ শতক ও একই এলাকার খাটিয়ামারি গ্রামের জবদুল মন্ডলের ছেলে নাসির উদ্দিনের ৩৬ শতক জমির উঠতি বোরো ধান।
অভিযোগ সূত্রে জানা গেছে, চলতি মৌসুমে বলারবাড়ি দুবলার দিয়াড় মাঠে বোরো ধান চাষ করেছে ৩ কৃষক। ক্ষেতের ধান গাছ বাড়তে শুরু করেছে। আর কিছু দিন পরই ধান গাছে শীষ বের হবে। এ পর্যন্ত তাদের এই ক্ষেতে ব্যয় হয়েছে প্রায় ৫০ হাজার টাকা, যার বেশির ভাগ তারা ধারদেনা করে জোগাড় করেছেন।
এ অবস্থায় মঙ্গলবার বিকেলে ৩ কৃষক ক্ষেত পরিচর্যা করতে গিয়ে দেখেন ধান গাছ পুড়ে বিবর্ণ হয়ে গেছে। এ ঘটনায় বৃহস্পতিবার সন্ধ্যার দিকে তারা থানায় অভিযোগ দিয়েছেন।
সরেজমিন দেখা যায়, নিড়ানি দেওয়া পরিষ্কার-চকচকে জমি, চারদিকে সবুজ আর সবুজ। মাঝখানে ৩ কৃষকের পুড়ে যাওয়া বিবর্ণ ধান ক্ষেত। শুধু ৩ কৃষক নয়, ক্ষেতের এই অবস্থা যিনিই দেখতে যাচ্ছেন, তিনিই হতবাক হয়ে পড়ছেন। ক্ষতিগ্রস্ত ৩ কৃষকের সঙ্গে সঙ্গে অনেকেই তাদের চোখের পানি ধরে রাখতে পারেননি।
এই ক্ষতি কোনোভাবেই মানা যায় না। ফসলের সঙ্গে এভাবে কেউ শত্রুতা করতে পারে! এ দৃশ্য না দেখলে বিশ্বাস হবে না। এ বিষয়ে ব্যবসায়ী আসাদুল ইসলাম বলেন, আমি এই জমির অংশিদার। কিন্ত তারা আমাকে জমি থেকে বঞ্চিত করে অবৈধভাবে চাষাবাদ করছে। জমি নিয়ে তাদের সঙ্গে আমার বিরোধ রয়েছে।
তবে বিষাক্ত কীটনাশক দিয়ে জমির ধান পুড়িয়ে দেওয়ার ঘটনায় আমি জড়িত না। জমি নিয়ে বিরোধের জের ধরে তারা আমার বিরুদ্ধে থানায় মিথ্যা অভিযোগ দিয়েছে। ধুনট উপজেলা উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তা আবু তাহের বলেন, বিষাক্ত কীটনাশক স্প্রে করায় ক্ষেতের ধান গাছ পুড়ে গেছে।
ক্ষতিগ্রস্ত ধানক্ষেত পরিদর্শন করা হয়েছে। কৃষক যেন ঘুরে দাড়াতে পারে, সে বিষয়ে তাদের পরামর্শ দিয়েছেন। এ ছাড়া কৃষি বিভাগের পক্ষ থেকে তাদের সার্বিক সহযোগিতার আশ্বাস দেওয়া হয়েছে।
সান নিউজ/এসএ