ছবি: সংগৃহীত
সারাদেশ

রংপুরে সবজির দ্বিগুণ দামে দিশেহারা ক্রেতারা 

হারুন উর রশিদ সোহেল, রংপুর: রংপুর মহানগরীর সবজি বাজারে শীতকালীন বিভিন্ন সবজির দ্বিগুণ দামে ক্রেতারা দিশেহারা হয়ে পড়েছে। গত মৌসুমে দাম ক্রেতারা সাধ্যের মধ্যে থাকলেও এবার দাম বৃদ্ধির কারণে ক্ষুদ্ধ প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করেছেন অনেক ক্রেতাসহ সাধারণ মানুষজন।

আরও পড়ুন: সবজির বাজারে স্বস্তি

তবে সংশ্লিষ্টরা জানিয়েছে, এবারে উৎপাদনে খরচ বেশি ও সিন্ডিকেট- এই দুই কারণে সবজির দাম চড়া।

এদিকে বাজারে চড়া দামে সবজি বিক্রি হলেও রংপুরের সবজি চাষিরা ‘পাইকার’ নামের সিন্ডিকেটের কারণে ন্যায্যমূল্য পাচ্ছেন না।

জানা গেছে, মিঠাপুকুর উপজেলা হচ্ছে রংপুর অঞ্চলের সবজি উৎপাদনের জন্য বিখ্যাত। এরপরেই পীরগঞ্জ ও গঙ্গাচড়া উপজেলায় বেশি সবজি চাষাবাদ হয়। এছাড়াও রংপুর সদরের সদ্য পুষ্করনী ইউনিয়ন সবজির জন্য বিখ্যাত।

এ এলাকাগুলোতে প্রচুর পরিমাণে সবজি উৎপাদন হয়ে থাকে। তবে সংরক্ষণ ব্যবস্থা না থাকায় এবং স্থানীয় বাজার ব্যবস্থার অভাবে ন্যায্য মূল্য থেকে বঞ্চিত থাকেন বেশিরভাগ চাষিরা।

আরও পড়ুন: গরুর বদলে নিজেরাই মই দিচ্ছেন দম্পতি

মিঠাপুকুর উপজেলার রানীপুকুর, জায়গীরহাট, লতিপবপুর, শুকুরেরহাট, ময়েনপুর, কাফ্রিখাল, আলিপুর, বালারহাট, রংপুর সদরের পালিচড়া, জানকি ধাপেরহাট, শ্যামপুর ও গঙ্গাচড়া উপজেলার মহিপুর, এসকেএস বাজার, লক্ষিটারি, গজঘন্টাসহ বিভিন্ন বিভিন্ন এলাকায় খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, এসব এলাকার ফুলকপি, বাঁধাকপি, লাউ, সীম, গাজর, করলা, মুলা, বেগুনসহ রকমারি শীতকালীন সবজি চাষাবাদ হচ্ছে।

মাঠে সবজি ক্ষেত পরিচর্যায় ব্যস্ত সময় কাটছে কৃষক-কৃষাণীদের। কেউ ক্ষেত থেকে ফসল তুলছেন, কেউ পরিচর্যা অথবা স্প্রে করছেন সবজি ক্ষেতে। কারো দম ফেলার সময় নেই।

এসব উৎপাদিত সবজি প্রতিদিন ট্রাকযোগে যাচ্ছে রাজধানী ঢাকার প্রধান কাঁচামালের আড়ত কারওয়ান বাজারসহ খুলনা, ফরিদপুরসহ দেশের বিভিন্ন পাইকারি বাজারে। পাইকার নামক এক শ্রেণীর লোক নানা অজুহাতসহ সিন্ডিকেট করে চাষি বা বিক্রেতার নিকট থেকে কম দামে শাক-সবজি ক্রয় করছেন।

আরও পড়ুন: সাদুল্লাপুরে নির্বাচনের মাঠে আ’লীগের ৬ নেতা

শুধুমাত্র হাত বদল করেই লাভ করছেন স্থানীয় পাইকাররা। অথচ বাজার থেকে ভোক্তাদের সেই সবজি কিনতে হচ্ছে দ্বিগুণ দাম দিয়ে। ফলে কারসাজিতে শাকসবজি চাষ করেও আশানুরূপ দাম না পাচ্ছেন না চাষিরা। এ নিয়ে চাষিরা চরম ক্ষুদ্ধ প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করলেও করার কিছু নেই তাদের।

কৃষকরা জানান, চাষাবাদ করা শাকসবজি সংরক্ষণের কোনো ব্যবস্থা নেই। তাই সিন্ডিকেটের কারণে কম দামে বিক্রি করতে বাধ্য হচ্ছেন তারা। আগাম সবজি উত্তোলনের পর ওই জমিতে দ্বিতীয় দফায় শীতকালীন সবজি চাষ করা যায়। তবে ভরা মৌসুমে খুব একটা দাম পাওয়া যায় না। উৎপাদন খরচই ওঠে না অনেক সময়। ন্যার্য্য মূল্য থেকেও বঞ্চিত হচ্ছেন তারা।

সেখানে কৃষক পর্যায়ে মুলা ২-৩ টাকা, পাইকারি ৫-৭ টাকা, ভোক্তা পর্যায়ে ২০ টাকা, পাতা কপি কৃষক পর্যায়ে ১০ টাকা, পাইকারি ১৫ টাকা এবং ভোক্তা পর্যায়ে ২০ টাকা, ফুলকপি কৃষক পর্যায়ে ২০ টাকা, পাইকারি ৩০ টাকা এবং ভোক্তা পর্যায়ে ৪০ টাকা, কাঁচা পিয়াজ কৃষক পর্যায়ে ৫০ টাকা, পাইকারি ৬০-৬৫ এবং ভোক্তা পর্যায়ে ৭৫-৮০ টাকা।

আরও পড়ুন: ইজতেমার দ্বিতীয় পর্ব শুরু

কাঁচা মরিচ কৃষক পর্যায়ে ৪০ টাকা পাইকারি ৫০ টাকা, ভোক্তা পর্যায়ে ৬০ টাকা, ঢোপা বেগুন কৃষক পর্যায়ে ৪৫ টাকা, পাইকারি ৬০ টাকা এবং ভোক্তা পর্যায়ে ৮০ টাকা, চিকন বেগুন কৃষক পর্যায়ে ৪০-৪৫ টাকা, পাইকারি ৫৫-৬০ টাকা এবং ভোক্তা পর্যায়ে ৭০-৮০ টাকা, টমেটো কৃষক পর্যায়ে ২০ টাকা পাইকারি ৩০ টাকা এবং ভোক্তা পর্যায়ে ৪০-৫০ টাকা, গাজর কৃষক পর্যায়ে ১৫ টাকা, পাইকারি ২০ টাকা এবং ভোক্তা পর্যায়ে ৩০ টাকা, শিম কৃষক পর্যায়ে ২৫ টাকা পাইকারি ৩৫-৪০ টাকা এবং ভোক্তা পর্যায়ে ৫০-৫৫ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।

রংপুর সিটি বাজার, কামাল কাছনা, লালবাগ, মর্ডাণ মোড়, মাহিগঞ্জ ও সাতমাথা, টার্মিনাল বাজারসহ মিঠাপুকুর ও গঙ্গাচড়া উপজেলার বিভিন্ন বাজার এলাকায় ঘুরে এমন তথ্য জানা গেছে।

মিঠাপুকুরের লতিবপুর বউবাজার এলাকার মজনু মন্ডল নামের এক চাষি জানান, তিনি দুই বিঘা জমিতে বেগুন, ফুলকপি ও বাধাকপির চাষ করেছেন। জমি তৈরিসহ বীজ, সার, কীটনাশকসহ অন্যান্য খরচ হয়েছে বিঘাপ্রতি প্রায় ২৫ হাজার টাকার বেশি। যে দামে বিক্রি করেন, তাতে লাভ তেমন হয় না।

আরও পড়ুন: সার্জেন্ট জহুরুল হক’র জন্ম

আমিনুল ইসলাম ও হুমায়ন রশিদ শাহীন নামের ২ ক্রেতার সাথে কথা হয় রংপুর সিটি বাজারে। তারা জানান, শীতের মৌসুমে গতবার সবজির দাম কম ছিল। এবার তা বেড়ে দ্বিগুণ হয়েছে। কৃষকের কাছ থেকে কমদামে কিনে আনলেও তা চড়া দামে বিক্রি করছেন চাষিরা।

এ ব্যাপারে রংপুর কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের অতিরিক্ত উপ-পরিচালক (শস্য) আনোয়ার হোসেন জানিয়েছেন, রংপুর মহানগরীসহ জেলার ৮ উপজেলায় শাকসবজির আবাদ হয়েছে প্রায় ১০ হাজার হেক্টর জমিতে, যা এখন বাজারে উঠতে শুরু করেছে।

তিনি বলেন, সবজি মানেই পচনশীল পণ্য। সংরক্ষণ সুবিধা না থাকায় ক্ষেত থেকে উত্তোলন করেই বিক্রি করতে হয় কৃষকদের। এজন্য সমস্যাও হয়। বিষয়টি কর্তৃপক্ষকে অবহিত করা হবে বলেও তিনি জানান।

সান নিউজ/এনজে

Copyright © Sunnews24x7
সবচেয়ে
পঠিত
সাম্প্রতিক

নোয়াখালীতে ভূমি দুস্যুর বিরুদ্ধে মানববন্ধন 

নোয়াখালী প্রতিনিধি: নোয়াখালীর কোম...

ফসলের ক্ষতি করে চলছে অবৈধ ব্যাটারি ইন্ডাস্ট্রি

কামরুল সিকদার, বোয়ালমারী (ফরিদপুর):

কেশবপুরে নির্বাচনী কার্যালয়ের শুভ উদ্বোধন

আব্দুর রাজ্জাক সরদার, কেশবপুরঃ আগামী ০৮ ই মে ২০২৪, রোজ বুধবা...

আজ শেরে বাংলার ৬২তম মৃত্যুবার্ষিকী

নিজস্ব প্রতিবেদক: আজ অবিভক্ত বাংল...

আফ্রিকায় ভারী বৃষ্টি, নিহত ১৫৫

আন্তর্জাতিক ডেস্ক: আফ্রিকায় গত কয়েক সপ্তাহ ধরে ভারী বৃষ্টি হ...

খাগড়াছড়িতে ছাত্রলীগের সম্মেলন অনুষ্ঠিত

আবু রাসেল সুমন, খাগড়াছড়ি প্রতিনিধি:

বরিশালে বিদ্যুৎস্পৃষ্টে ৩ জনের মৃত্যু

নিজস্ব প্রতিবেদক: বরিশালের বাকেরগ...

সেরা সুন্দরী হলেন ৬০ বছরের আলেজান্দ্রা 

বিনোদন ডেস্ক: সম্প্রতি ৬০ বছর বয়স...

সোনার দাম ফের কমলো 

নিজস্ব প্রতিবেদক: দেশের বাজারে সো...

গরমে বারবার গোসল করা কি ক্ষতিকর?

লাইফস্টাইল ডেস্ক: বৈশাখের শুরু থে...

লাইফস্টাইল
বিনোদন
sunnews24x7 advertisement
খেলা