সারাদেশ

মেহেরপুরে কুমোরদের সংগ্রামী জীবন

আকতারুজ্জামান, মেহেরপুর : কিশোর বয়সে মনের অজান্তেই মা-বাবার দেখা দেখিতে এই কুমোর জীবনে জড়িয়ে গেছেন মঞ্জুরী পাল। স্বামীর সংসারে এসেও একই কাজ। রাত দিন কাদামাটির কাজ করে যেন হয়ে গেছেন মাটির মানুষ। সংসারে রয়েছে এক মেয়ে, ২ ছেলে। জমি জিরাত নেই। একাজ করে যা আয় হয় তা দিয়ে সংসারের ব্যয় নির্বাহের পাশাপাশি উচ্চ মাধ্যমিক পাস করানোর পর মেয়েকে বিয়ে দেন। আর বড় ছেলে এমএ পাস করে একটি বেসরকারি সংস্থায় চাকরি করেন। ছোট ছেলে পড়ছেন উচ্চ মাধ্যমিকে। অন্য ব্যবসা করার মতো অর্থ না থাকায় বাধ্য হয়ে এ পেশায় নিয়োজিত।

শুধু মঞ্জুরী পাল নয়, তার মতো শতাধিক পরিবারের লোকজন দিন রাত পরিশ্রম করেও দারিদ্রের কষাঘাত থেকে মুক্ত হতে পারছে না গাংনীর আমতৈল গ্রামের কুমোররা। একদিকে মাটি ও আনুষাঙ্গিক জিনিসের দাম বেড়েছে। অন্যদিকে প্লাস্টিকের চমক প্রদ দ্রব্যাদির চাহিদা বেড়ে যাওয়ায় নিপুন শিল্পকর্ম খচিত মাটির জিনিসের কদর কমে গেছে। ফলে দৈন্যদশা বিরাজ করছে কুমোরদের মাঝে। স্বল্প সুদে ঋণ পেলে ঘুরে দাঁড়াতে পারে বলে জানিয়েছেন শতাধিক কুমোর পরিবার।

মেহেরপুর জেলার গাংনী উপজেলা শহর থেকে ৮ কিলোমিটার দূরে আমতৈল গ্রাম। গ্রামের ২৭টি কারখানায় শতাধিক পরিবারের লোকজন মৃৎশিল্পের সাথে জড়িত। নারী-পুরুষ সবারই কাদামাটির গন্ধমাখা শরীর। একসময় এদের নিপুন হাতের শিল্পকর্মে তকতকে কাদামাটি হয়ে উঠে নিত্য ব্যবহার্য বাসনপত্র, ফুলের টব, নান্দা, খেলনাসহ কারু কাজ করা শোপিচ। বেশ কদরও ছিল এসব জিনিসের। এনামেল ও প্লাস্টিকের তৈরি জিনিসের কদর বেড়ে যাওয়ায় মাটির তৈরি জিনিসের এখন আর সেই কদর নেই। এখন পয়ঃনিষ্কাশনের জন্য তৈরি করা হচ্ছে মাটির পাট বা স্লাব। জেলার চাহিদা মেটানোর পাশাপাশি বিভিন্ন জেলাতেও বিক্রি হচ্ছে এসব স্লাব। এদের কাজের নিপুনতা ও সৌন্দর্য থাকলেও মলিন পোশাক ও রোগ ব্যাধির ফলে দ্রুত আসা বার্ধক্য একটা মলিন আবরণ ফেলে দিয়েছে।

কারখানার মালিক স্বপন জানান, আগে এক ট্রলি মাটির দাম ছিল ২০০ টাকা। এখন তা বেড়ে হয়েছে ১০০০ টাকা। জ্বালানীর দামও বেড়ে গেছে। কারখানার মালামাল তৈরি ও চুলার জন্য জমি লিজ নিতে হয়। এক বিঘা জমি লিজ নিতে বাৎসরিক ৩০ থেকে ৩৫ হাজার টাকা দিতে হয়। বছরের মাত্র ৮ থেকে ৯ মাস চলে এ ব্যবসা। অনেক কুমোর বিভিন্ন সমিতি থেকে ঋণ নিয়ে মৃৎশিল্পে বিনিয়োগ করেছেন। আনুষঙ্গিক খরচ মিটিয়ে এমন কোন টাকা থাকে না যা দিয়ে সমিতির কিস্তি পরিশোধ করবেন। সরকার যদি স্বল্প সুদে কুমোরদের ঋণের ব্যবস্থা করতো তাহলে সকলেই স্বাবলম্বী হতে পারতো। একই কথা জানালেন মঞ্জুরী বালা পাল।

গাংনী উপজেলা সমাজ সেবা অফিসার কাজি আবুল মনসুর জানান, পিছিয়ে পড়া জনগোষ্ঠির উন্নয়নের জন্য সরকার দুটি কর্মসূচি চালু করেছেন সরকার। একটি ভাতা কর্মসূচি অন্যটি ক্ষুদ্র ঋণ কর্মসূচি। কুমোররা যদি ঋণের জন্য আবেদর করেন তাহলে অবশ্যই ব্যবস্থা নেয়া হবে।

সান নিউজ/কেটি

Copyright © Sunnews24x7
সবচেয়ে
পঠিত
সাম্প্রতিক

চাকরি ছাড়লেন চার এএসপি

নিজস্ব প্রতিবেদক: ৪০তম বিসিএস পু...

পৃথক ঘটনায় নিহত ২

জেলা প্রতিনিধি: চাঁদপুরের পুরান বাজার কৃষি ব্যাংক থেকে রাশেদ...

বাংলাদেশ সফর করায় কাতারের আমিরকে কমিউনিটির শুভেচ্ছা

আমিনুল হক কাজল, কাতার প্রতিনিধি : কাতারের মাননীয় আমির শেখ তা...

এমপি আনার হত্যায় ৩ বাংলাদেশি আটক

নিজস্ব প্রতিবেদক: ভারতের পশ্চিমবঙ্গে চিকিৎসা করাতে গিয়ে নিহত...

ঠাকুরগাঁওয়ে পরামর্শ সভা অনুষ্ঠিত

ঠাকুরগাঁও প্রতিনিধি: বেসরকারী উন্নয়ন সংগঠন রূপান্তরের আয়োজনে...

বাংলাদেশে আঘাত হানতে পারে ‘রেমাল’

আন্তর্জাতিক ডেস্ক : বঙ্গোপসাগরে সৃষ্ট নিম্নচাপটি আগামী শুক্র...

রাইসির মৃত্যু শান্তির জন্য মর্মান্তিক

নিজস্ব প্রতিবেদক : ইরানের প্রেসিডেন্ট ইব্রাহিম রাইসির মতো অভ...

ঈদে নৌরুটে বাল্কহেড বন্ধ

নিজস্ব প্রতিবেদক : ঈদুল আজহা উপলক্ষে নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে...

ফরিদপুরে ডিমের বাজারে অভিযান

ফরিদপুর শহর প্রতিনিধি : অস্থির হয়ে ওঠা ডিমের বাজারে দাম সহনী...

শাহজালালে সোনাসহ আটক ২

নিজস্ব প্রতিবেদক : ঢাকার শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে ৪৬...

লাইফস্টাইল
বিনোদন
sunnews24x7 advertisement
খেলা