স্পোর্টস ডেস্ক: লাল-সবুজের বোলারদের আধিপত্যের দিনে ১৫৬ রানের মধ্যেই গুঁটিয়ে যায় আফগানিস্তান। এরপর রয়েসয়েই বাকিটা সেরেছেন টাইগাররা। সাকিব আল হাসানের দল মেহেদী হাসান মিরাজ ও নাজমুল হোসেন শান্তর সাবলীল ব্যাটিংয়ে রশিদ-নবিদের বিপক্ষে ৯২ বল বাকি থাকতেই ৬ উইকেটের দাপুটে জয়ে বিশ্বকাপ মিশন শুরু করল।
আরও পড়ুন: ১৫৬ রানেই অলআউট আফগানরা
শনিবার (৭ অক্টোবর) ধর্মশালায় হিমাচল ক্রিকেট অ্যাসোসিয়েশন স্টেডিয়ামে টসে হেরে ১মে ব্যাটিংয়ে নেমে ৩৭.২ ওভারে সবকটি উইকেট হারিয়ে ১৫৭ রান তুলে আফগানিস্তান। জবাবে ব্যাট করতে নেমে ৩৪.৪ ওভারেই লক্ষ্যে পৌঁছে যায় টাইগাররা। সাকিব বাহিনী ৬ উইকেটের বড় জয়ে ওয়ানডে বিশ্বকাপ মিশন শুরু করল।
বাংলাদেশ আফগানদের দেওয়া ১৫৭ রানের টার্গেটে ব্যাট করতে নেমে শুরুতেই উইকেট হারায়। লিটনের সাথে ভুল বোঝাবুঝিতে রান-আউটের ফাঁদে কাটা পড়েন তানজিদ। জাদরানের সরাসরি থ্রোয়ে বিদায়ের আগে ১২ বলে ৫ রান করেন তরুণ এ ওপেনার।
এরপর মেহেদি হাসান মিরাজ ক্রিজে আসেন। তবে ইনিংসের ৭ম ওভারে বোলিংয়ে এসে আফগানদের আবারও সাফল্য এনে দেয় ফারুকি। দলীয় ২৭ রানে ১৮ বলে ১৩ রান করা লিটনকে আউট করে বাঁহাতি এ ব্যাটার।
আরও পড়ুন: টস জিতে ফিল্ডিংয়ে বাংলাদেশ
নাজমুল হোসেন শান্ত লিটনের বিদায়ের পর ক্রিজে আসেন। তৃতীয় উইকেট জুটিতে মিরাজকে সঙ্গে নিয়ে শুরুর ধাক্কা সামাল দেওয়ার চেষ্টা করেন তিনি। সাবলীল ব্যাটিংয়ে ৫৮ বলে ফিফটি তুলে নেন মিরাজ। অন্যদিকে তাকে যোগ্য সঙ্গ দেন শান্ত। তবে প্রথমবারের মতো তিনি নেমে ব্যক্তিগত অর্ধশতক হাঁকানোর পরই ব্যক্তিগত ৫৭ রানে বিদায় নেন মিরাজ।
মিরাজের বিদায়ের পরপর ক্রিজে নেমে আগ্রাহী মেজাজে খেলতে থাকেন লাল-সবুজের দলপতি সাকিব। ৪র্থ উইকেটে শান্তর সঙ্গে ২২ রানের জুটি গড়ে ১৪ রানে ফেরেন সাকিব। শান্তর অপরাজিত ৫৯ রানের ইনিংসে ৩৪.৪ ওভারে ৬ উইকেটের বড় জয় নিশ্চিত হয় বাংলাদেশের।
আরও পড়ুন: চ্যালেঞ্জিং পুঁজি পেল পাকিস্তান
এরপর রহমত শাহকে নিয়ে এগিয়ে যাচ্ছিলেন গুরবাজ। কিন্তু আফগান শিবিরে আবারও আঘাত হানেন সাকিব। ১৬তম ওভারের প্রথম বলে কাভারে লিটনের হাতে ক্যাচ তুলে দেন রহমত। ২৫ বলে ১৮ রান করে প্যাভিলিয়নের পথ ধরেন তিনি।
গুরবাজের সঙ্গে ৩য় উইকেট জুটিতে আফগানদের টেনে নেওয়ার চেষ্টা করেন অধিনায়ক শহীদি। তারা ৩৯ রানের জুটি গড়ে চাপ শামাল দেওয়ার চেষ্টা করছিলেন। তবে এ জুটি ভাঙেন অফ-স্পিনার মিরাজ।
মিরাজের অফ-স্টাম্পের বাইরের বল টেনে মারতে চেয়েছিলেন শহীদি। তবে প্লেসমেন্টটা ঠিকঠাক না হওয়ায় ৩৮ বলে ১৮ রানে তাওহিদ হৃদয়ের হাতে ক্যাচ দিয়ে ফেরেন আফগান দলপতি।
আরও পড়ুন: মাঠে নামবে পাকিস্তান-নেদারল্যান্ডস
পরের ওভারেই আরেকটি সাফল্য পায় বাংলাদেশ। ওপেনার গুরবাজকে ফেরান মুস্তাফিজ। অফ-স্টাম্পের বাইরে ড্রাইভ করতে চেয়েছিলেন এ ব্যাটার। কিন্তু ক্যাচ উঠে ডিপ-পয়েন্টে। তানজিদ তা তালুবন্দি করতে ভুল করেননি। ৪ ও ১ ছক্কায় ৪৭ রানে ফেরেন এই ওপেনার।
এরপর বাংলাদেশ দ্রুতই নাজিবুল্লাহ জাদরানকেও ফেরায়। দায়িত্ব নিতে পারেননি নবিও। পরে প্রতিরোধ করতে পারেননি কোনো আফগান ব্যাটারই। শেষ দিকে আজমতুল্লাহ ওমরজাইয়ের ৪ বাউন্ডারিতে ২২ ও রশিদের ৯ রানের সুবাদে ৩৭.২ ওভারে ১৫৬ রানের পুঁজি পায় আফগানরা।
বাংলাদেশের হয়ে মিরাজ ও সাকিবের শিকার ৩ টি করে উইকেট। এ ছাড়া শরিফুল ২ টি ও তাসকিন ও মুস্তাফিজ একটি করে উইকেট নিয়েছেন।
আরও পড়ুন: হেসেখেলে জিতল নিউজিল্যান্ড
সংক্ষিপ্ত স্কোর :
বাংলাদেশ : ৩৪.৪ ওভারে ১৫৮/৪, লক্ষ্য ১৫৭ (মুশফিকুর রহিম ২*, নাজমুল হোসেন শান্ত ৫৯*; তানজিদ তামিম ৫, লিটন দাস ১৩, মেহেদী হাসান মিরাজ ৫৭, সাকিব আল হাসান ১৪)।
আফগানিস্তান : ৩৭.২ ওভারে ১৫৬/১০ (ফজল হক ফারুকী ০*; ইব্রাহিম জাদরান ২২, রহমত শাহ ১৮, হাশমতউল্লাহ শহীদী ১৮, রহমানউল্লাহ গুরবাজ ৪৭, নাজিবউল্লাহ জাদরান ৫, মোহাম্মদ নবী ৬, রশিদ খান ৯, আজমতউল্লাহ ওমরজাই ২২, মুজিব উর রহমান ১, নাভিন ০)।
সান নিউজ/এএ